ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ বনাম ভারত ‘এ’ দল

সিরিজ জিততে আশাবাদী মুমিনুলরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সিরিজ জিততে আশাবাদী মুমিনুলরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম আনঅফিশিয়াল একদিনের ম্যাচে ভারত ‘এ’ দল জিতেছে ৯৬ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচেই পাল্টা জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ৬৫ রানের জয় তুলে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজে এসেছে ১-১ সমতা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ আনঅফিশিয়াল ওয়ানডে ম্যাচে যে দল জিতবে, সিরিজ হয়ে যাবে তাদের। সেই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ আজ হবে। ব্যাঙ্গালুরুর চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায় ম্যাচটি শুরু হবে। প্রথম ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছিল। অর্ধশতক করা লিটন কুমার দাস ও নাসির হোসেন ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই প্রাচীর হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। তাই ম্যাচটিও হারে বড় ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে তা পুষিয়ে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। তবে এবারও নাসির হোসেন ও লিটন কুমার ছাড়া আর কেউই খুব বেশি আহামরি নৈপুণ্য উপহার দিতে পারেননি। ব্যাট হাতে লিটন করেছেন ৪৫ রান। তবে নাসির ১০২ রান করার পর বল হাতেও যে ৫ উইকেট নিয়েছেন, তাতেই বাংলাদেশের জয় এসে যায়। এক নাসিরের কাছেই ধরাশায়ী হয় ভারত ‘এ’ দল। আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে একইরকম খেলুক বাংলাদেশ এবং সিরিজ জিতে নিক- সে আশাই করা হচ্ছে। যদি সে আশা পূরণ হয়ে যায় তাহলে সিরিজ জয় হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে অধিনায়ক মুমিনুল হক যে দেশে থাকতেই বলেছিলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচ জিততে চাই’ তা পূরণ না হলেও সিরিজ জয়ের আশা মিটবে। মুমিনুল বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই চাচ্ছি সব ম্যাচ জিততে। কোচও চাচ্ছেন, আমিও চাচ্ছি, সবাই চাচ্ছি। এর আগে আমরা জাতীয় দল চারটি সিরিজ জিতেছি। এখনও আমাদের সেই প্রত্যাশা আছে। আমরা ওখানেও (ভারতে) সিরিজ জিতব ও ভাল ক্রিকেট খেলব। ওরাও (ভারত ‘এ’ দল) জানে আমরা (বাংলাদেশ ‘এ’) ভাল দল। বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন ভাল ক্রিকেট খেলছে। সবাই খুব ভাল পজিশনে আছে। এখানে আমরা দশজন টেস্ট খেলোয়াড় আছি। আমরাও ভাল ক্রিকেট খেলব।’ সেই খেলা প্রথম ম্যাচে আর হয়নি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। এখন সিরিজ জয়ের আশাও করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সামনে সিরিজে টিকে থাকার তিনটি পথ খোলা ছিল, সেটি হয় জয়, না হয় টাই, না হয় ম্যাচ পরিত্যক্ত হতে হতো। বাংলাদেশ দল জিতেই তা পূরণ করেছে। ২৫২ রান করে ভারত ‘এ’ দলকে ১৮৭ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে। কী দুর্দান্ত নৈপুণ্যই না দেখিয়েছেন নাসির। ৮২ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর যে দলের হাল ধরেছেন, তা শেষপর্যন্ত বজায় রেখেছেন। ৯৬ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ১০২ রান করার পর বল হাতেও ঝলক দেখিয়েছেন নাসির। একাই ১০ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই সহজ জয় তুলে নিয়েছে মুমিনুল হকের দল। প্রথম ম্যাচ শেষে কোচ হিথ স্ট্রিক হতাশ ছিলেন। দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন, ‘ভারত সফর সব সময়ই চ্যালেঞ্জ। আমরা দেখেছি ভারতীয় উইকেট সব সময়ই নিষ্প্রাণ ব্যাটিংবান্ধব উইকেট। বিশেষ করে আমাদের বোলারদের জন্য এটি চ্যালেঞ্জিং সিরিজ হবে। আশা করি, এটা টি২০ বিশ্বকাপের জন্যও ভাল প্রস্তুতি হবে। দলে অনেক তরুণ আছে, যারা খুব বেশি ক্রিকেট খেলেনি, ওরা যত খেলবে ভবিষ্যতের জন্য তত ভাল হবে। আমরা খুবই ভারসাম্যপূর্ণ দল। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার ভাল সমন্বয় আছে। আমি খুবই রোমাঞ্চিত। তবে বেশ বিরতির পর খেলতে নামছে ওরা। মাঠে নামতে মুখিয়ে থাকবে।’ সঙ্গে যোগ করেছিলেনÑ ‘অনেকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে জায়গার জন্য নিজের দাবি তুলে ধরতে চায়। এটা তাই শুধু দল হিসেবে জয়ের চেষ্টাই নয়, জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইও। জয়টাও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, জয়ের চেষ্টার পাশাপাশি ছেলেরা সেই আত্মবিশ্বাসটাও অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বয়ে নিয়ে যাবে। তবে শুধু অনুশীলনের জন্য যাচ্ছি না আমরা। কঠিন ও লড়াকু ক্রিকেট খেলব। আমরা সব ম্যাচ জিততে চাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য। কোন দলই হারতে পছন্দ করে না। আমরা ব্যতিক্রম নই। জয়ের চেয়ে মধুর অনুভূতি আর নেই। বিশেষ করে, ভারতের মতো বড় দেশে, যেখানে অনেক ক্রিকেট খেলা হয়, সেখানে ওদের বিপক্ষে জিততে পারা হবে দারুণ অর্জন। সেই সুযোগটা আমরা নিতে চাই।’ কিন্তু বাংলাদেশ ‘এ’ দল প্রথম ম্যাচেই হেরে যায়। কোচও হতাশ হয়ে পড়েন। বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রথম পাঁচ ওভার খারাপ হওয়ার পর আমরা ভাল করেছি। কয়েকটি উইকেট নিয়েছি। কিন্তু শেষপর্যন্ত চাপে রাখতে পারিনি। লিটন-নাসির জুটিটি দুর্দান্ত হয়েছে। যদি উইকেটে টিকে থাকা যায়, ভাল ব্যাটিংও করা যায়, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নাসির-লিটন।’ দ্বিতীয় ম্যাচেই কোচের কথা কাজে দিয়েছে। কোচের হতাশাও দূর হয়েছে। এখন আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি জিতে নিতে পারলেই হয়। তাহলে সবার মুখেই সিরিজ জয়ের হাসি ফুটবে। নয়ত এক ম্যাচ জয়েই সান্ত¡না খুঁজতে হবে।
×