ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়া দলে ভারতীয় পরামর্শক

মুশফিকদের ফাঁদে ফেলতে চান স্টিভেন স্মিথ!

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মুশফিকদের ফাঁদে ফেলতে চান  স্টিভেন স্মিথ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তুখোড় সব তারকা অবসরে যাওয়ায় একঝাঁক নবীন ক্রিকেটার নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসছে স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। ফ্রেশ ব্লাড, ইয়াং ট্যালেন্ট, এ্যাগ্রেসিভ ক্যাপ্টেন্সি- দলটি ঘিরে এখন এমন সব ধারণাই আবর্তিত হচ্ছে। স্মিথ যে কয়েকটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেখানেও তার আক্রমণাত্মক মনোভাব স্পষ্ট। তবে বাংলাদেশ সফরে সেই ধারা থেকে সরে আসতে চান! কারণ দুটি- প্রথমত, উপমহাদেশের কন্ডিশন সেøা এবং বাংলাদেশও আক্রমণাত্মক খেলতে পছন্দ করে। আর সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাটিতে দুরন্ত টাইগারদের যা নৈপুণ্য তাতে দুটি দলই এ্যাটাকিং হলে অসিদের জন্য তা হিতে-বিপরীত হতে পারে! তাই টেস্টের পুরনো সেই রক্ষণাত্মক মেজাজে মুশফিকুর রহীমদের ধৈর্যের পরীক্ষায় ফেলে কুপোকাত করতে চান স্মিথ। “আমার মনে হয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়টা খাপখাইয়ে নিতে হবে। ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে আমরা কিছুটা আক্রমণাত্মক। কিন্তু উপমহাদেশের কন্ডিশনে যদি ব্যাটসম্যানদের আউট করার উপায় না পাওয়া যায়, তাহলে তাদের ‘বিরক্ত’ করে সাজঘরে ফেরাতে হবে! এটা আমার কাছে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপখাইয়ে নেয়ার প্রশ্ন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বল স্পিন ও রিভার্স-সুইং করলে আমরা আক্রমণে যেতে পারব”- স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন অসি সেনাপতি। সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম ব্যাটসম্যানের নাম স্মিথ। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর স্থান দখলই তার প্রমাণ। ব্যাটিংয়ের মতো ২৬ বছর বয়সী অধিনায়কের নেতৃত্বও আগ্রাসী। বিশ্বকাপের আগে পূর্বসূরি মাইকেল ক্লার্কের ইনজুরিতে ভারত সিরিজের তিন টেস্টে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে একটিতে জয়। কয়েক দিন আগে ইংল্যান্ডে পাঁচ ওয়ানডের সিরিজে ৩-২এ সাফল্য, সব ম্যাচে স্বভাবজাতভাবে তাকে আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। প্রয়োজনের খাতিরে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ সফরে স্মিথকে ভিন্ন স্টাইলে দেখা যেতে পারে। অধিনায়ক জীবনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সিরিজে কোনভাবেই লজ্জার মুখে পড়তে চান না তিনি। তাই এমন ভাবনা। স্বাভাবিকতা বিসর্জন দিয়ে স্মিথের দল খেলতে পারে ‘বিরক্তির’ ক্রিকেট! বাংলাদেশ সফরে কার্যত পঙ্গু হয়ে পড়েছে টিম অস্ট্রেলিয়া। টাইগারদের মোকাবিলায় নিয়মিত আট টেস্ট ক্রিকেটারকে পাচ্ছেন না অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ! এ্যাশেজ হারের (৩-২) ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তার সঙ্গী হন নির্ভরযোগ্য ওপেনার ক্রিস রজার্স। সিরিজ শুরুর আগেই ইনজুরিতে পড়ে ‘বিদায়’ বলেন পেসার রায়ান হ্যারিস। শেন ওয়াটসনও একই পথ ধরেন। ওয়ানডে সিরিজ চলকালে হুট করে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় এই অলরাউন্ডার। বিদায়ের মিছিলে সর্বশেষ সঙ্গী ব্র্যাড হ্যাডিন! ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে গেছেন মারকাটারি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার, যিনি আবার তরুণ স্মিথের সহঅধিনায়ক। টানা ক্রিকেটের ধকল সামলাতে বিশ্রাম দেয়া হয় তুখোড় পেসার মিচেল জনসনকে। পেস আক্রমণের প্রধান ভরসা মিচেল স্টার্কও পুরোপুরি ফিট নন। পায়ের গোড়ালির চোটের জন্য ইংল্যান্ড সফরে দুটি ম্যাচে ইনজেকশন নিয়ে নামতে হয়েছিল তাকে। সব মিলিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বাংলাদেশকে নিয়ে টেনশনের শেষ নেই অসিদের। নিজেদের কন্ডিশনে উজ্জীবিত বাংলাদেশের বিপক্ষে সফল হতে তাই উপমহাদেশীয় অভিজ্ঞতার স্মরণাপন্ন অসি-থিঙ্কট্যাঙ্ক। সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ভারতীয় একজনকে অস্ট্রেলিয়ার স্টাফে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি তামিলনাড়ুর সাবেক অধিনায়ক এস শ্রীরাম। এর আগে বিষেন সিং বেদী স্পিন বোলিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করলেও সরাসরি অস্ট্রেলিয়ার কোচিং স্টাফের পরামর্শক হিসেবে কোন ভারতীয়র কাজ করার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটতে যাচ্ছে। তিনি প্রধান কোচ ড্যারেন লেহম্যানের সঙ্গে কাজ করবেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্টিভেন স্মিথরা ঢাকায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীরাম তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। শ্রীরামের আইপিএল দল দিল্লী ডেয়ারডেভিলস ও তামিলনাড়ু জুনিয়রের হয়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পা রাখবে অস্ট্রেলিয়া। খেলবে দুই টেস্টের সিরিজ। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ৯ অক্টোবর থেকে।
×