ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাগরে ৭ মাছ ধরার ট্রলারডুবি ॥ ১৩ জেলে নিখোঁজ

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সাগরে ৭ মাছ ধরার ট্রলারডুবি ॥ ১৩ জেলে নিখোঁজ

বাবুল সরদার, বাগেরহাট থেকে ॥ বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলে আকস্মিক ঝড়ে সাতটি ফিশিং ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাগেরহাট ও বরগুনার কমপক্ষে ১৩ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৩৫ জেলেকে। শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত সুন্দরবনের দুবলারচর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ফেয়ারওয়ে বয়া, হিরণ পয়েন্ট ও কুয়াকাটা এলাকায় পৃথক পৃথকভাবে এ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। বনবিভাগ ও জেলেদের সূত্রে এসব খবর পাওয়া গেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় মাছ ধরার শত শত ট্রলার সুন্দরবনের কচিখালী, সুপতি, কটকা, নারকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে বলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন। ট্রলারডুবির ঘটনায় খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো হচ্ছেÑ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ কামাল হাওলাদারের এফবি আরিফ, দীপচর গ্রামের আঃ মান্নানের এফবি মান্নান, পাথরঘাটা উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী শিপন দাসের এফবি সোনাই, সোহরাব হোসেনের এফবি মায়ের দোয়া, সোহাগ হোসেনের এফবি সোহাগ, এফবি ইমরান ও হাসিনা-সামিয়া। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেনÑ শরণখোলার এমাদুল হাওলাদার এবং পাথরঘাটার কালাম ও পিরোজপুরের চরখালী গ্রামের এমাদুল হক। নিখোঁজ অপর জেলের নাম জানা যায়নি। শরণখোলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবর তালুকদার বরিবার দুপুর ২টার দিকে জেলেদের বরাত দিয়ে জানান, শনিবার রাতে সাগরে হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। ওই ঝড়ে উপজেলার রাজৈর এলাকার এফবি আরিফ ও দীপচরের এফবি মান্নান নামে ট্রলারগুলো ডুবে যায়। এ ঘটনায় আরিফ ট্রলারের তিন জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি আরও জানান, ডুবে যাওয়া এফবি আরিফ ট্রলারের বাকি ১৩ জেলেকে অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে পাথরঘাটায় পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়া উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের হাতেম মোল্লার এফবি রহিমা ট্রলারের জেলেরা সাগর থেকে ভাসমান আরও ২০ জেলেকে উদ্ধার করে হিরণ পয়েন্টে পৌঁছে দিয়েছে। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী মোবাইল ফোনে জানান, শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত ঝড়ের কবলে পড়ে কমপক্ষে সাতটি মাছ ধরা ট্রলার বঙ্গোপসাগরে ডুবে গেছে। এতে অন্তত ১৩ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ট্রলারডুবি ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ মোঃ কামালউদ্দিন আহমেদ ট্রলারডুবির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কী পরিমাণ ট্রলার ডুবেছে এবং কত জেলে নিখোঁজ হয়েছেন তার সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। বনবিভাগের কর্মীরা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। দুর্যোগের কবলে পড়ে শত শত ট্রলার সুন্দরবনের কচিখালী, সুপতি, কটকা, নারকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। এসব ট্রলার ও জেলেদের সার্বিক নিরাপত্তায় বনবিভাগ নিয়োজিত রয়েছে। মংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মেহেদী মাসুদ জানিয়েছেন, তারা সাগরে ট্রলারডুবি ও জেলে নিখোঁজের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে নৌবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
×