ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাঠমিস্ত্রি ভুল তথ্যের জেরে হাজতে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কাঠমিস্ত্রি ভুল  তথ্যের জেরে হাজতে

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ পেশায় কাঠমিস্ত্রি। দিন আনা দিন খাওয়ায় চলে তার সংসার। একদিন কাজ না হলে সংসারে হাড়ি চুলায় উঠে না। অথচ এই কাঠ মিস্ত্রিকে ঢাকার একটি ব্যাংকের চেক জালিয়াতির মামলায় পুলিশ আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। গত ১২ দিন ধরে সে কারাগারে আটক রয়েছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় তিনটি শিশু মেয়েসহ বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই কাঠ মিস্ত্রির পরিবার। রবিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা শহরের লস্করপাড়া এলাকার হাফিজুল ইসলামের স্ত্রী সানজুয়ারা খাতুন। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সানজুয়ারা জানায়, তার স্বামী পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি। তিন শিশু মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে কোনরকমে কষ্টে তার সংসার চলে। গত ৮ আগস্ট রাতে সদর থানা পুলিশ এসে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। সকালে থানায় যেয়ে জানতে পারে ঢাকার আদালতের একটি চেক জালিয়াতি মামলার ওয়ারেন্টে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ওয়ারেন্টের কাগজে লেখা আসামির নামের সঙ্গে তার স্বামীর নামের পুরোপুরি মিল নেই। আংশিক মিল দেখে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বামীর নাম হাফিজুল ইসলাম, পিতার নাম মকছেদ কাগুজি, গ্রাম লস্করপাড়া। অপরদিকে যার নামে ওয়ারেন্ট আছে তার নাম হাফিজুর রহমান, পিতা-মোকছেদ আলী, গ্রাম কাটিয়া। তার স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করার পরও তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। থানা থেকে বলা হয় আদালত থেকে প্রমাণ করে আসুন এই হাফিজুল সেই হাফিজুর নয়। সংবাদ সম্মেলনে হাফিজুরের স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী অশিক্ষিত এবং পেশায় কাঠমিস্ত্রি। নিজের নাম বাংলায়ও ভাল করে লিখতে পারে না। এছাড়া জীবনে সে কখনও ঢাকায় যায়নি। অথচ ঢাকার এবি ব্যাংকের একাউন্ট থেকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে যে চেকটির লেনদেন দেখানো হয়েছে তাতে চেকদাতার স্বাক্ষর ইংরেজিতে করা। সম্পূর্ণ ভুল তথ্যের ওúর ভিত্তি করে তার স্বামী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে আছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় তিনটি শিশু মেয়েসহ বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে বর্তমানে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বামী সামান্য একজন কাঠমিস্ত্রি হওয়ায় আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় এই ব্যয়বহুল মামলাটি তাদের পক্ষে চালানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। তিনি মিথ্যে মামলার দায় থেকে স্বামীকে মুক্তি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×