ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ম্যানইউর দারুণ জয়, ব্যর্থতার বৃত্তে লিভারপুল

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ম্যানইউর দারুণ জয়, ব্যর্থতার বৃত্তে লিভারপুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে দারুণ জয় পেয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। রবিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও স্বাগতিক সাউদাম্পটনকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে রেড ডেভিলসরা। ম্যানইউর হয়ে জোড়া গোল করেন আন্থোনি মার্শাল। অপর গোলটি করেন জুয়ান মাতা। সাউদাম্পটনের হয়ে দুটি গোলই করেন ইতালিয়ান তারকা গ্রাজিয়ানো পেল্লি। ম্যানইউ জয় পেলেও নিদারুণ ব্যর্থতার মধ্যেই আছে লিভারপুল। এবার নিজেদের মাঠ এ্যানফিল্ডে দ্য রেডসরা ১-১ গোলে ড্র করেছে নরউইচ সিটির সঙ্গে। পরশুর আরেক ম্যাচে টটেনহ্যাম হটস্পার ১-০ গোলে হারায় ক্রিস্টাল প্যালেসকে। এখন পর্যন্ত প্রতিদলই ৬টি করে ম্যাচ শেষ করেছে। এতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ম্যানচেস্টার সিটি। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ম্যানইউ। ৮ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুলের অবস্থান ১৩ নম্বরে। গত সপ্তাহে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্বে পিএসভি আইন্দহোভেনের মাঠে ২-১ গোলে হার মানে ম্যানইউ। ওই হতাশা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইপিএলে মাঠে নামে লুইস ভ্যান গালের দল। কিন্তু প্রথমে পিছিয়ে পরে ফের হোঁচটের শঙ্কায় পড়ে দলটি। প্রথম থেকেই অতিথিদের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করা সাউদাম্পটন প্রথম গোল পেয়ে যায় ম্যাচের ১৩ মিনিটে। ডি বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান ইতালিয়ান স্ট্রাইকার পেল্লি। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ইউনাইটেডের রক্ষণে আরেকটি জোরালো আঘাত। তবে এবার পেল্লির প্রচেষ্টা পোস্টে বাধা পেলে বেঁচে যায় ওয়েন রুনির দল। এরপর দ্রুতই নিজেদের সামলে নিয়ে আক্রমণে উঠতে থাকে ম্যানইউ। ২৬ সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ পায় তারা। কিন্তু মাতার ক্রসে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন মেমফিস ডিপাই। সমতা ফেরাতে এরপর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি ম্যানইউকে। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে সতীর্থের পা ঘুরে ডি বক্সের মধ্যে বল পান মার্শাল। এক জনকে কাটিয়ে ডান পায়ের শটে বল জালে জড়ান কিছুদিন আগে মোনাকো থেকে ওল্ডট্রাফোর্ডে আসা ফরাসী এই ফরোয়ার্ড। রিবতির পর শুরুতেই এগিয়ে যায় ম্যানইউ। এবারও গোলদাতা সেই মার্শাল। ৫০ মিনিটে তিনি এই গোলটি করেন স্বাগতিক রক্ষণভাগের কিছুটা ভুলের সুযোগে। দলটির জাপানিজ ডিফেন্ডার মায়া ইয়োশিদা গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দেন। কিন্তু বল পেয়ে যান মার্শাল। আর তাতেই ঠা-া মাথায় বল জালে জড়ান ১৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে স্কোরলাইন ৩-১ করে জয় একপ্রকার নিশ্চিত করে ফেলেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মাতা। এরপর অবশ্য ম্যাচে ফিরতে চেষ্টা চালায় সাউদাম্পটন। ৮৬ মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে লড়াইয়ে নতুন করে উত্তেজনা ফেরান সেই পেল্লি। ডানদিক থেকে সাদিও মানের দারুণ ক্রসে অনেকটা লাফিয়ে উঠে হেড করে বল জালে জড়ান দারুণ ফর্মে থাকা এই তরুণ। বাকি সময় আর কোন গোল না হলে তৃপ্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ম্যানইউ। ম্যাচ শেষে মার্শালের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ম্যানইউর ডাচ কোচ লুইস ভ্যান গাল। অন্যদিকে ব্যর্থতার গ-ি থেকে কিছুতেই বের হতে পারছে না লিভারপুল। একের পর এক ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করা দলটি এবারও পয়েন্ট খুইয়েছে। এই হোঁচটের ফলে প্রিমিয়ার লীগ ও ইউরোপা লীগ মিলিয়ে লিভারপুলের টানা ব্যর্থতার তালিকাটা আরও লম্বা হলো। এই নিয়ে শেষ ৫ ম্যাচে জয়হীন থাকল ব্রেন্ডন রজার্সের দল। নিজেদের মাঠ এ্যানফিল্ডে নরউইচের বিপক্ষে তেমন দাপুটে ফুটবল খেলতে পারেনি লিভারপুল। প্রথমার্ধে গোল পায়নি কোন দলই। বিরতির পর শুরুতেই এগিয় যায় তারা। বদলি হিসেবে নামা ইংলিশ স্ট্রাইকার ড্যানি ইঙ্গস ৪৮ মিনিটে সতীর্থ আলবার্তো মোরেনোর উঁচু করে বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে গোল করেন। লিভারপুলের এগিয়ে থাকার স্বস্তি বেশিক্ষণ অবশ্য থাকেনি। ৬১ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের শটে নরউইচকে সমতায় ফেরান ইংলিশ ডিফেন্ডার রাসেল মার্টিন। এরপর কোন দলই আর গোলের দেখা না পেলে অমীমাংসিতভাবে শেষ হয় ম্যাচ। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আর্সেনালের প্রশংসা করেছেন চেলসি কোচ জোশে মরিনহো। এক সাক্ষাতকারে মরিনহো বলেন, আমি আর্সেনালের প্রতি খেলোয়াড়কে পছন্দ করি। তাদের দলের কেউ যদি ক্লাব ছাড়তে চায়, তবে প্রত্যেককেই চেলসিতে আনার চেষ্টা করব। আমি মনে করি, আর্সেনালের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো স্কোয়াড আছে। প্রতি মৌসুমেই তা সম্ভব। উল্লেখ্য, ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর ইংলিশ লীগের শিরোপা খরায় ভুগছে আর্সেনাল। তবে মরিনহোর বিশ্বাস, অচিরেই হয়তো লীগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করবে গানার্সরা।
×