ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বস্তিকার গান-দেবারতির নৃত্যে মুগ্ধ রাজশাহীর দর্শক

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

স্বস্তিকার গান-দেবারতির নৃত্যে মুগ্ধ রাজশাহীর দর্শক

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে ॥ রবিবার সন্ধ্যা। আশি^নী আকাশে তখন শ্রাবণী কালো মেঘের ঘনঘটা। বাইরে মাঝে মাঝে বৃষ্টির ঝাপটা। তখন ভেতরে অপূর্ব নৃত্যশৈলী। রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি কানায় কানায় পূর্ণ। নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা সঙ্গীত আর নৃত্যপ্রিয় মানুষ। রবিবারের সন্ধ্যায় নৃত্যের ছন্দে মাতোয়ারা তারা। এ নৃত্য ওড়িসি নৃত্যশিল্পী দেবারতি গোস্বামীর। ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের উদ্যোগে শনিবার থেকে রাজশাহী নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ভারতীয় সঙ্গীত ও নৃত্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল নৃত্য। এরই ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী দেবারতি নৃত্যে মাতান দর্শকদের। তাকে পরিবেশনায় সহায়তা করেন শ্রীমন্ত দাশ এবং রাজশাহীর ছেলে গৌরব ঘোষ। শুরুতেই এই গুণীশিল্পী শুরু করেন দেব বন্দনা দিয়ে। পরে ছিল মহাভারতের যশোদা মায়ের এবং শ্রীকৃষ্ণের শৈশবের একটি ঘটনা নিয়ে অভিনয়াংশ। রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে একটি ওড়িশি ফিউশনের পরে সবশেষে ছিল দশভূজা দুর্গার অসুর নিধনের ওপর একটি অনন্য পরিবেশনা। সোমবার সন্তোষ কুমার মিত্রের গজল ও মঙ্গলবার শেষ দিনে ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন শঙ্করী মৃধা ও তার দল। এর আগে শনিবার শুরুর দিনে গানের তানে মুগ্ধ করেন ভারতীয় বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তার একক সঙ্গীতসন্ধ্যায় মুগ্ধ হন রাজশাহীর সঙ্গীত পিপাসুরা। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগের সিনিয়র ফ্যাকালটি ও অধ্যাপক সঙ্গীতশিল্পী ড. স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের গানে গানে শুরু হওয়া সন্ধ্যা ছিল রাজশাহীর জন্য অন্য একটি সঙ্গীতময় সন্ধ্যা। সন্ধ্যায় ছোট পরিসরের শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় একক সঙ্গীত সন্ধ্যাটি। কানায় কানায় পূর্ণ অডিটরিয়ামে আলো আঁধারীর খেলায় শুভেচ্ছা কথার পর শুরু হলো গান। আপন কাজে অলস হলে চলবে না রে চলবে না, ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরাসহ একাধারে ২০টি গান পরিবেশন করেন গুণী এ শিল্পী। রবীন্দ্রনাথের এই গানগুলো যখন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় মধুর কণ্ঠে গাচ্ছিলেন একক সঙ্গীত সন্ধ্যায় তখন শ্রোতা-দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছিল। স্বস্তিকায় স্বস্তি খুঁজে পেয়েছিল তারা। তাই মিলনায়তন জুড়ে বিরাজ করে নিথর নীরবতা। একের পর এক তিনি গেয়ে শোনান কবিগুরু অতুল প্রসাদ, রজনীকান্ত ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান। যখন থেমে গেলেন তালির রেশে ভাললাগার অভিব্যক্তি প্রকাশ করল দর্শকরা। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুনীর হোসেন। এ সময় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক প্রফেসর হাসান আজিজুল হক, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী প-িত অমরেশ রায় চৌধুরী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা রাখেন রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সন্দীপ মিত্র। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী বজলুর রহমান বাদল, রাবি অধ্যাপক পি এম শফিকুল ইসলাম, রাকাব ডিএমডি আব্দুল খালেক খান, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবু বাক্কার আলী, চেম্বারের পরিচালক ড. ফয়সাল কবীর চৌধুরী, হিন্দু ধর্মীয় স্ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন সেন ও মিসেস মিত্র।
×