ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমদানি রফতানি মূল্যস্ফীতিসহ সব সূচকেই স্বস্তি- এডিবির পূর্বাভাস

আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত অর্থবছর ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে সরকারের প্রাথমিক হিসেবে ধারণা করা হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবার আমদানি ও রফতানিতে প্রবৃদ্ধি আগের বছরের চাইতে বাড়বে। সরকারের বড় বিনিয়োগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) বাস্তবায়ন হারও বেড়ে যাবে। স্থিতিশীল বাণিজ্যিক পরিবেশের সুবাদে বেসরকারী বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়বে। তাছাড়া প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কমবে মূল্যস্ফীতি। এডিবির সদস্য দেশগুলোর অর্থনীতির চালচিত্র নিয়ে বার্ষিক প্রকাশনা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউট লুক ২০১৫-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। অন্যদিকে সরকারীভাবে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হচ্ছে ৭ শতাংশ। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবির আবাসিক মিশন কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন এডিবির মিশন প্রধান কাজুহিকো হিগুচি। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রিন্সিপাল কান্ট্রি স্পোশালিস্ট ড. মোহাম্মদ পারভেজ ইমদাদ। তিনি জানান, অর্থনীতির তিন খাত কৃষি, শিল্প ও সেবায় এবার প্রবৃদ্ধি বাড়বে। রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ। গত অর্থবছর এর হার ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময়ে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশে উন্নীত হবে। গত অর্থবছর এর হার ছিল ১১ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছর সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ৬ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে বলেও তিনি জানান। তাছাড়া বৈদেশিক লেনদেনে চলতি হিসেবে ঘাটতি দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়াবে দশমিক ৫ শতাংশে। মূলত রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে এমন বিশ্বাস থেকে এ পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ভোক্তা পর্যায়ে আস্থা বাড়লে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে বলেও ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বাড়তি ব্যয় মেটাতে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে পারলে মূল্যস্ফীতির চাপ কমে আসবে বলেও ধারণা করছে এডিবি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত না করে এমন সংযত মুদ্রানীতি গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে গতি ফেরায় বাংলাদেশ এর সুফল পাবে বলেও জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাজস্ব আহরণকেই লক্ষ্য অর্জনে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে এডিবি। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন। অস্থিরতা থাকলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্ভব হবে না। ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রাজস্ব আয় বাড়াতে না পারলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে। রাজস্ব আদায় কম হলে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হবে। ফলে ব্যাহত হবে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ। বিদেশী বিনিয়োগে মন্দার কারণে অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা এডিবির। এর ফলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এডিবির আবাসিক মিশনের প্রধান বলেন, গত অর্থবছর ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
×