ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টার্ফে ঈদের জামাত, ধর্মীয় কারণে বেকায়দায় বাফুফে!

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

টার্ফে ঈদের জামাত, ধর্মীয় কারণে বেকায়দায় বাফুফে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাস দুয়েক আগে ঈদ-উল-ফিতরেও যা হয়েছিল, এবারও তাই হচ্ছে। মতিঝিলে অবস্থিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সংলগ্ন বাফুফে আর্টিফিসিয়াল টার্ফে অনুষ্ঠিত হবে ঈদু-উল-আযহার জামাত। এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বাফুফে। কারণ ধর্মীয় কারণে তারা কিছু বলতে পারছে না যারা ঈদের জামাতের আয়োজন করছে। জানা গেছে, এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদের নির্দেশেই তার লোকজন গত ঈদের মতো এই ঈদেও বাফুফের আর্টিফিসিয়াল টার্ফে আয়োজন করতে যাচ্ছে ঈদের জামাত। ইতোমধ্যেই ত্রিপল ও বাঁশ দিয়ে টার্ফে প্যান্ডেল টানানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। বাঁশের খুঁটি গাড়লে টার্ফের ক্ষতি হবে, তাই প্রতিটি বাঁশের গোড়ায় এক টুকরো চট দেয়া হয়েছে বাঁশের ভারসাম্য ধরে রাখার জন্য। শত শত মুসল্লির পায়ের চাপে টার্ফের যে ক্ষতি হতে পারে, এটা বাফুফে বুঝতে পেরেও সেভাবে কিছুই বলছে না। কারণ বলতে গেলেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার পাশাপাশি এলাকাবাসী ক্ষেপে যেতে পারে, যা কাম্য নয়। উল্লেখ্য, গোল প্রজেক্ট-১-এর আওতায় ২০০০ সালে মতিঝিলে বাফুফে ভবন নির্মাণ হয়। গোল প্রজেক্ট-২-এ প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যয়ে বাফুফে ভবনসংলগ্ন মাঠে কৃত্রিম ঘাসের মাঠ স্থাপন করে দেয় ফিফা। এর আগে ছয়-সাত বছর আগে এ ধরনের টার্ফ বরিশালে স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সময় মতো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মাঠ বা জমি বরাদ্দ দিতে না পারায় আর বাফুফে মাঠের ব্যবস্থা করতে না পারায় ফিফার টার্ফ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক ঝামেলার পর দেশের প্রথম টার্ফ স্থাপন করা হয় বাফুফে ভবন সংলগ্ন আরামবাগ বালুর মাঠে ২০১১ সালে। মতিঝিলের আরামবাগ বালুর মাঠে ফিফার দেয়া কৃত্রিম ঘাসের মাঠ বসাতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) যে কত সময় লেগেছিল আর কী ঝামেলা হয়েছিল, সেটা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি এদেশের ক্রীড়ামোদীরা। এ বছরের জুনের শেষ সপ্তাহে বাফুফে অবশ্য টার্ফ নিয়ে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিল। টার্ফে এমনিতে অনুশীলন করতে সমস্যা নেই। স্থানীয় আরামবাগের ছেলেরা, বাফুফের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলসহ জাতীয় পুরুষ ও মহিলা দলগুলো এই টার্ফে সময় ভাগ করে অনুশীলন করে থাকে। তবে সমস্যা হয় বৃষ্টির মধ্যে অনুশীলন করলে। বৃষ্টির মধ্যে অনুশীলন করলে টার্ফের রাবারের জয়েন্টগুলো খুলে যায়। ইতোমধ্যেই কয়েক জায়গায় খুলেও গেছে। এর মধ্যেই গত ২৫ জুন বৃষ্টির মধ্যে মোহামেডানের ফুটবলাররা এসে প্র্যাকটিস করে। এতে টার্ফের ক্ষতি হয়। চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ২৯ জুন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (দ্বিতীয় পর্ব) নিজেদের একাদশ ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের মোকাবেলা করার কথা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের। এই ম্যাচের জন্য সেদিন মতিঝিলে নিজেদের ক্লাব মাঠে অনুশীলন করতে পারেনি মোহামেডানের ফুটবলাররা। কারণ তুমুল বৃষ্টিতে মাঠ অনুশীলনের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অগ্যতা উপায় না দেখে তারা অনুশীলনের জন্য হাজির হয়েছিল তাদের ক্লাবের পাশেই অবস্থিত বাফুফে আর্টিফিসিয়াল টার্ফে। মোহামেডান ক্লাবের নিজেদের মাঠটি খুবই ছোট। এ জন্য তারা প্রায়ই টাকার বিনিময়ে ভাড়ায় অনুশীলন করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ, বুয়েট মাঠ, সামরিক জাদুঘর মাঠে। তবে ওই দিন সেসব স্থানে যেতে দেরি হয়ে যাবে বলে তারা বাফুফের টার্ফকেই অনুশীলনের জন্য বেছে নেয়। তারপরই তারা পড়ে বাফুফের তোপের মুখে!
×