ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এগিয়ে রাজীব শুক্লা এবং শারদ পাওয়ার, বিসিসিআই প্রধানের পদে উঠে আসছে সৌরভের নামও

কে বসছেন ডালমিয়ার চেয়ারে?

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কে বসছেন ডালমিয়ার চেয়ারে?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর দু’দিন পার না হতেই শুরু তোড় জোড়। ভারতজুড়ে একটাই প্রশ্ন কে হচ্ছেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্র্ডের (বিসিসিআই) নতুন প্রেসিডেন্ট? জোরের সঙ্গে উঠে আসছে দুটি নামÑ রাজীব শুক্লা ও শারদ পাওয়ার। কলকাতার ক্রিকেটপাড়ায় ‘দাদাবাবু’ সৌরভ গাঙ্গুলীকে নিয়ে রয়েছে চাপা গুঞ্জন। তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের ইঙ্গিত অন্তর্বর্তী প্রধান হিসেবে ডালমিয়ার চেয়ারে বাসতে যাচ্ছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লা। রবিবার ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন বর্তমান বিসিসিআই ও সাবেক আইসিসি প্রধান ডালমিয়া। বোর্ডের সাধারণ সভায় পরবর্তী নির্বাচন এবং করণীয় ঠিক হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পেতে পারেন ৫৬ বছর বয়সী শুক্লা। তবে বোর্ডের জরুরী বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত ধোঁয়াশা কাটছে না। সেই পর্যন্ত বিসিসিআইর সব দায়িত্ব সামলাবেন বর্তমান সচিব অনুরাগ ঠাকুর। বিসিসিআইর সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যার অর্থ এই তিন সপ্তাহের মধ্যে বোর্ডের জরুরী সভা বাধ্যতামূলক। প্রেসিডেন্টের দৌড়ে হেভিওয়েট ব্যক্তি অবশ্যই শারদ পাওয়ার। সাবেক বিসিসিআই প্রধান (২০০৫-০৮) ও আইসিসি প্রেসিডেন্ট (২০১০-১২) পাওয়ার একসময় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। যদিও শুক্লার দাবি ক্ষমতাসীন বিজেপির সমর্থন তার সঙ্গে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে বিসিসিআইর মসনদ দখল নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতির ঘুঁটিও এ কোর্ট থেকে ও কোর্টে ঘুরছে! ওদিকে জন্মসূত্রের ডালমিয়ারই প্রতিবেশী সৌরভ গাঙ্গুলীকে নিয়েও রয়েছে কানাঘুষা। মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগে যাকে বিসিসিআইর প্রধান তিন উপদেষ্টাদের একজন হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ডালমিয়া। সৌরভ তার অত্যন্ত সেøহভাজন ছিলেন। তবে সৌরভের বিষয়টা শুধুই ধোঁয়াশা। কারণ এত বড় দায়িত্ব সামলানোর মতো সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা যেমন নেই, তেমনি লোলিত মোদীর নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের চেয়ে বরং স্থানীয় তৃনমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপধায়ের সঙ্গেই তার সম্পর্কটা বেশি ভাল। সোমবার কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে ডালমিয়ার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ডালমিয়ার স্মৃতি অম্লান হওয়া আগেই তার চেয়ারে বসা নিয়ে শুরু হয় রাজনীতির খেলা। ভারতের কথা আর বলে লাভ কী? উপমাহাদেশের রাজনীতিটাই এ রকম! ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আসলে আজব এক জায়গা। ক্রিকেট প্রশাসকের মরদেহের সামনে একদিকে যেমন স্মৃতিচারণা, মুদ্রার অন্য পিঠে তেমনি ভাবিষ্যতের ডালমিয়া হয়ে ওঠার প্রস্তুতি! বোর্ডের রাজনীতিতে কে কার বন্ধু, আর কে কার শত্রু তা ৯০ বছর বয়সী স্থানীয় কোন সাংবাদিকের জন্যেও পৃথিবীর কঠিন কাজ! সাংগঠনিক জীবনে এক অর্থে ডালমিয়ার গুরু ছিলেন বিশ্বনাথ দত্ত। নব্বই উর্ধ ভদ্রলোক শিষ্যের চলে যাওয়া দেখলেন। সঙ্গে এও জানিয়ে দিলেন, সৌরভই হতে পারেন তার যোগ্য উত্তরসূরি। ‘সৌরভের বয়স কম হতে পারে, কিন্ত ও প্রশাসক পরিবারের ছেলে। ওর রক্তে প্রশাসন মিশে আছে, সঙ্গে ক্রিকেট-জ্ঞান। আমি জগুর (ডালমিয়া) জায়গায় সৌরভকে দেখলেই বেশি খুশি হব।’ বৃহস্পতিবার রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মাঝে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও শেষ পর্যন্ত জীবনের লড়াইয়ে হার মানতে হয় ভারতীয় ক্রিকেটের এই অজেয় সংগঠককে। রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত দশটার দিকে কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে প্রয়াত হন (৭৫ বছর ১১৩ দিন বয়সী) ডালমিয়া।
×