ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোকসানা বেগম

বিভাগ হয়ে সিটিতে বিপিএল

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিভাগ হয়ে সিটিতে বিপিএল

দিন যায়, সবকিছুতেই পরিবর্তন আসে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগেও (বিপিএল-টি২০) সেই ছোঁয়া লেগেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে বিভাগ নিয়ে বিপিএল হয়েছে। দুই বছর বিপিএল বন্ধ থাকার পর আবার যখন ২২ নবেম্বর তৃতীয় আসর হতে চলেছে, বিভাগ হয়ে সিটি কর্পোরেশনে চলে গেছে বিপিএল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, রংপুর বিভাগের সঙ্গে এবার নতুন দল যুক্ত হয়েছে। সেটি-কুমিল্লা। আর এই দলটি সিটি কর্পোরেশনের। শুধু এই পরিবর্তনই নয়, সামনে আরও পরিবর্তন আসবে। প্রথম আসরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী এই ৬ বিভাগ নিয়ে হয়েছে বিপিএল। দ্বিতীয় আসরে রংপুর বিভাগ যুক্ত হয়ে ৭ দল নিয়ে বিপিএল হয়েছে। এবার হচ্ছে একটি সিটি কর্পোরেশন ও ৫ বিভাগের দল নিয়ে ৬ দলের বিপিএল। ধীরে ধীরে ১০ দল নিয়ে হবে বিপিএল। বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকই তা জানান, ‘এবার ৬ দল নিয়েই বিপিএল করা হচ্ছে। আরও ২ প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ ছিল। কিন্তু আমরা ৬ দল নিয়েই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছি। ধীরে ধীরে ১০ দলের বিপিএল করা হবে।’ বিভাগ থেকে সিটিতে যাওয়া নিয়ে মল্লিক বলেন, ‘কুমিল্লা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, বিভাগ নয়। এখন সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ময়মনসিংহ বিভাগ হচ্ছে, কুমিল্লা হতে পারে। এজন্য আমরা আর ডিভিশনে যাচ্ছি না, সিটি কর্পোরেশন বিবেচনা করছি। ভবিষ্যতে এটি ১০ দলের হবে। সিটি কর্পোরেশন ২০টি হলেও দল আমাদের ১০টিই থাকবে। এখন আমরা চার বছরের জন্য দল দিচ্ছি। চার বছর পর আলোচনার মাধ্যমে রিনিউ হবে।’ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার পাঠকরা অবশ্য কুমিল্লা যে এবার বিপিএলে খেলবে তা গত ২৮ আগস্টেই জেনে গেছেন। অবশেষে তাই হয়েছে। কুমিল্লাসহ তৃতীয় আসর হবে ৬ দল নিয়ে। একটি দল থাকছে কুমিল্লা নামে। যে দলটির নাম আপাতত-কুমিল্লা লিজেন্ডস। আবার শোনা যাচ্ছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসও হতে পারে। সেই দলটি চালাবেন আইসিসি ও বিসিবির সাবেক সভাপতি, পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মোস্তফা কামালের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়্যাল স্পোর্টস। দলটি ব্যবস্থাপনার সব দায়িত্ব মোস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামালের কাঁধেই থাকছে। গত বুধবার এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও বিসিবির পরিচালক আফজালুর রহমান সিনহা ৬ দলের অংশগ্রহণ নিয়ে বিস্তারিত জানান। আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণার সময় বিপিএল শুরু হওয়ার তারিখও বলেছেন সিনহা। জানিয়েছেন, ‘এবার বিপিএলের তৃতীয় আসরে ৬ দল খেলবে। বিপিএল শুরু হবে ২২ নবেম্বর। সেদিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে উদ্বোধন হবে। আর ২৪ নবেম্বর দিবারাত্রির ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ঢাকা দলটি বেক্সিমকো গ্রুপ (দলের নাম হবে ঢাকা ডিনামাইটস), চট্টগ্রাম দলটি দুলাল ব্রাদার্স (ডিবিএল গ্রুপ), রংপুর দলটি আই স্পোর্টস (দলের নাম থাকছে রংপুর রাইডার্সই), বরিশাল দলটি এক্সিওম টেকনোলজিস ও সিলেট দলটি আলিফ গ্রুপ পেয়েছে।’ সঙ্গে জানিয়েছেন, ‘কুমিল্লা দল নামে একটি দল থাকছে। সেটি পেয়েছে রয়্যাল স্পোর্টস।’ এবার বিপিএলের টাইটেল স্পন্সর হয়েছে বিআরবি কেবলস। রয়্যাল স্পোর্টস প্রতিষ্ঠানটি বিপিএলের গত আসরে সিলেট দলটি পরিচালনা করেছে। এবার তারা কুমিল্লা দলটি চালাবে। এবার সিলেটের মালিকানা পেয়েছে গত আসরে বরিশাল দলটি চালানো আলিফ গ্রুপ। এ একটি স্থানে পরিবর্তন ঘটেছে। রংপুর যথারীতি পুরনো মালিকই পেয়েছে। নতুনদের মধ্যে তিনটি (বেক্সিমকো, এক্সিওম ও ডিবিএল) ও পুরনোদের মধ্যে তিনটি (রয়্যাল স্পোর্টস, আলিফ, আই স্পোর্টস) প্রতিষ্ঠানই বিসিবির সব শর্ত পূরণ করে দল চালাতে সম্মত হয়েছে। পুরনোরা আগের সব পাওনা দিয়েছে। সঙ্গে সাড়ে ৫ কোটি টাকার শর্তও মেনেছে। তাই দল পেয়েছে। আর নতুনরা বিসিবির শর্ত পূরণ করেছে। তাই দল পেয়েছে। পুরনোদের মধ্যে গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স দলটি চালানো ইউরোপা গ্রুপ ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত থাকায় বিপিএলের সঙ্গে থাকতে পারছে না। গত দুই আসরে দুরন্ত রাজশাহী দলটি চালানো ডিজিটাল অটো কেয়ার পাওনা অর্থই পরিশোধ না করায় লজ্জা নিয়েই বিপিএল থেকে বাদ পড়ে গেছে। একই কাজ করেছে খুলনা রয়েল বেঙ্গলস দলটি চালানো ওরিয়ন গ্রুপও। তারাও পাওনা অর্থই পরিশোধ করেনি। তাই এ আসর থেকে বাদ। আর তাই রাজশাহী ও খুলনা নামে কোন দলই থাকছে না। বিপিএলের তৃতীয় আসরের জন্য আপাতত তিনটি ভেন্যু (মিরপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা) ঠিক করা আছে। এ তিন ভেন্যু থেকে যে কোন দুটি ভেন্যুতে টুর্নামেন্টের খেলাগুলো হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে ২২ নবেম্বর। ২৪ নবেম্বর বল মাঠে গড়াবে। মাঝে একদিন বিরতি থাকবে। সেদিন মাঠ প্রস্তুত করা হবে। তবে এরইমধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেটাররা খেলবেন কিনা এ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। পিটিআই একটি রিপোর্ট করেছে, যদি বাংলাদেশ মহিলা দলের ক্রিকেটাররা পাকিস্তানে খেলতে না যায়, তাহলে পাকিস্তান ক্রিকেটাররা বিপিএলে খেলবে না। এ নিয়ে শুরুতে বিসিবি পরিচালক, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ও বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলের সদস্য জালাল ইউনুস বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে পিটিআইতে একটি রিপোর্ট এসেছে। আপনারা এটাকে রেফার করছেন। পিটিআই কিন্তু আননোন সোর্স থেকে খবর করেছে। আমরা আননোন সোর্সকে কনসিডার করি না। এজন্য মন্তব্য করছি না। প্রেসিডেন্ট আগেই বলেছেন, ওদের সঙ্গে কোনো কন্ডিশন নিয়ে আলাপ হয়নি। যেগুলো ছিল, সেগুলো পাকিস্তান সিরিজের আগেই চুকিয়ে ফেলা হয়েছে।’ এ নিয়ে বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের যে কোন সময়ের থেকে পাকিস্তান বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্ক এখন ভাল। পাকিস্তানী ক্রিকেটার আসবে না, এরকম কিছু আমাদের জানা নেই। আমাদের সঙ্গে পিসিবির যোগাযোগ আছে। পাকিস্তানী ক্রিকেটার আসবে, এরকম কাঠামো রেখেই আমরা বিপিএল করছি। আমরা আশাবাদী যে তারা খেলবে।’ সঙ্গে মল্লিক এও জানিয়ে রাখলেন, ‘বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলে যারা থাকবে, তারা কেউ দলগুলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারবে না। কোনভাবেই না। মালিকানা বা পরামর্শক, কিছুই হতে পারবে না। বোর্ডের ডিরেক্টর বা অন্য যারা গবর্নিং কাউন্সিলে নেই, তারা জড়িত থাকবে পারবে। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফরাও পারবে।’
×