ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিবাচক প্রবণতার আশায় আজ শুরু হচ্ছে লেনদেন

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ইতিবাচক প্রবণতার আশায়  আজ শুরু হচ্ছে লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পবিত্র ঈদ-উল আযহার টানা পাঁচ দিনের দীর্ঘ ছুটি শেষে আজ সোমবার থেকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন শুরু হবে। তাই বিনিয়োগকারীরা সবাই কিছুটা আনন্দিত। তবে সবার মনে প্রশ্ন জাগছে- বাজার ঈদের আগে যেভাবে ইতিবাচক ধারায় ছিল তেমনটি থাকবে? না কি না নিম্নমুখী প্রবণতায় চলবে। তবে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর প্রত্যাশা সব কিছু ঠিক থাকলে ঈদ পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কেউ ভাবছেন ঈদের ছুটি শেষে সম্মিলিত বিনিয়োগ বাজারকে চাঙ্গা করে তুলবে। কেউ বা ভাবছেন শীঘ্রই বাজার চাঙ্গা না হয়ে, একটু সময় নেবে। কারণ ঈদের আমেজ শেষ হতে বিয়োগকারীদের আরও বেশ কয়েক দিন লাগবে। তাই বাজার স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে। এসব কিছু মাথায় রেখে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন। এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ ক্যাপিট্যাল মার্কেট কনফারেন্স- ২০১৫’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের পুঁজিবাজারকে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ করছে কমিশন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশের পুঁজিবাজারের কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এড়ায়নি। এমনকি গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণও বেড়েছে কয়েকগুণ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কাঠামোগত সক্ষমতার বিবেচনায় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তাদের জন্য পুঁজিবাজারই মূলধন সংগ্রহের সবচেয়ে ভাল উৎস। চলমান পরিবর্তন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারকে নতুন উচ্চতায় দেখা যাবে। বিএসইসি একটি পরিকল্পিত ফ্রেমওয়ার্কের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে পুঁজিবাজারের অবকাঠামোগত সক্ষমতা উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন নতুন প্রডাক্ট বাজারে আনার চেষ্টা চলছে। টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য শিল্পায়ন গতিশীল করা আবশ্যক। আর উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে মূলধন জোগানোর সবচেয়ে ভাল উৎস পুঁজিবাজার। এ বাজারের উন্নয়ন হলে বিনিয়োগকারী-উদ্যোক্তা সবাই লাভবান হবেন। ফলে এ কনফারেন্সকে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে ঈদের আগে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছিল দেশের উভয় পুঁজিবাজারের লেনদেনে। কোরবানির পশু ক্রয় ও ঈদের ছুটি কাটাতে বিনিয়োগকারীরা ছিল ঘরমুখী। ফলে ঈদের ছুটির আগে শেষ কার্যদিবস মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম দেখা যায়। এ কারণে লেনদেনের পরিমাণও অনেক কমেছিল। তাই এ পরিস্থিতি ঈদ পরবর্তী সময়ে অব্যাহত থাকবে কী না তা বিনিয়োগকারীদের ভাবিয়ে তুলছে। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শরিফ আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুঁজিবাজার খারাপ হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি ভাল অবস্থানে রয়েছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করলে এখন বাজারে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। তিনি আরও বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর ডিএসইর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ ক্যাপিট্যাল মার্কেট কনফারেন্স-২০১৫’ অনুষ্ঠিত হয়। ওখানে দেশের পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব পক্ষ উপস্থিত ছিল। সেখানে বাজারের বর্তমান অবস্থা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন ও দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক বলে আমি মনে করি। আগামীতে বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের সুবিধার্থে এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে নেয়া হবে। এদিকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, আশা করছি ঈদ পরবর্তী বাজার ভাল হবে। কারণ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজারের জন্য কোন নেতিবাচক খবর নেই। পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতও ভাল। তাই বাজার খারাপ যাওয়ার কোন আশঙ্কা দেখছি না। তবে আমাদের বাজারে অতি ছোটখাটো বিষয় বড় প্রভাব ফেলে। তাই সে দিকটাও বিয়োগকারীদের মাথায় রাখা উচিত। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ক্যাপিট্যাল মার্কেট কনফারেন্স-২০১৫ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি। ওই কনফারেন্সে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তা প্রকৃত পক্ষে বাস্তবায়ন হলে আগামীতে বাজার স্বাভাবিক থাকবে বলে মনে করি।
×