ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রায় এক বছর পর শিরোপা জিতলেন পোলিশ তারকা, বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে ফিরলেন ২৬ বছর বয়সী

প্যান প্যাসিফিক শিরোপা রাদওয়ানস্কার

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

প্যান প্যাসিফিক শিরোপা রাদওয়ানস্কার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্যান প্যাসিফিক ওপেনের শিরোপা জিতলেন এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা। রবিবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেলিন্ডা বেনচিচকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড এখন পোল্যান্ডের এই টেনিস তারকার দখলে। ২০০৮ সালে প্যান প্যাসিফিক ওপেন আউটডোরে স্থানান্তরিত হয়। এরপর থেকে আর কোন খেলোয়াড়ই দুইবার শিরোপা জিততে পারেননি। এবার রাদওয়ানস্কা সেটাই করে দেখালেন। এর আগে ২০১১ সালেও এই টুর্নামেন্টের শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেছিলেন তিনি। অসামান্য এই কীর্তি গড়ে রোমাঞ্চিত রাদওয়ানস্কা। সেইসঙ্গে র‌্যাঙ্কিংয়েও উন্নতি ঘটেছে তার। দীর্ঘদিন পর বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে উঠে এলেন ২৬ বছর বয়সী এই পোলিশ টেনিস তারকা। তার লক্ষ্য এখন পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। গত বছর রজার্স কাপে শেষবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন রাদওয়ানস্কা। এরপর আর নিজেকে স্বরূপে খোঁজে পাননি তিনি। যে কারণে চলতি বছরটা একেবারেই নিষ্প্রভ কেটেছে তার। সম্প্রতি শেষ হওয়া বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনেও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। টুর্নামেন্টের তৃতীয় পর্ব থেকেই বিদায় নেন তিনি। মৌসুমের শেষ মেজর টুর্নামেন্টে ব্যর্থ হওয়ার পর প্যান প্যাসিফিক ওপেনেই প্রথম খেলতে নামেন পোলিশ তারকা। খেলেনও দুর্দান্ত। কিন্তু ফাইনালেই কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। প্রতিপক্ষ ১৮ বছর বয়সী বেলিন্ডা বেনচিচ। চলতি মৌসুমেই পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন যিনি। কিন্তু পোলিশ তারকার বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেননি বেনচিচ। ফাইনালে এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা দাপটের সঙ্গে খেলে ৬-২ এবং ৬-২ গেমে উড়িয়ে দেন সুইজারল্যান্ডের বেলিন্ডা বেনচিচকে। বেনচিচকে হারিয়ে উচ্ছ্বসিত উইম্বল্ডনের সাবেক এই ফাইনালিস্ট। আর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দ্বিতীয়বার এই টুর্নামেন্টের শিরোপা নিজের শোকেসে তুলায় যেন সেই উচ্ছ্বাসের মাত্রাটা আরও বহুগুণে বেড়ে গেছে তার। এ বিষয়ে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটাই প্রথম কোন টুর্নামেন্ট যা আমি দুইবার জিতেছি। তাই আমার কাছে এটা বিশেষ এক অর্জন।’ তাছাড়া প্রতিপক্ষ বেনচিচ। বয়সে তরুণী হলেও ইতোমধ্যেই নিজের জাত চিনিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের এই তারকা। চলতি বছরেই দুটি ডব্লিউটিএ শিরোপা জিতেছেন বেনচিচ। সেইসঙ্গে রজার্স কাপে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে রীতিমতো চমকে দেন টেনিস বিশ্বকেই। এই প্যান প্যাসিফিক ওপেনেও বেনিচিচ ছিলেন রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য। শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার সামান্তা স্টোসারকে হারান যিনি। আর সেমিফাইনালে উড়িয়ে দেন টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকিকে। তাই তার বিপক্ষে জয়ের উল্লাসের মাত্রাটা রাদওয়ানস্কার জন্য একটু সীমা ছাড়িয়ে যেতেই পারে। ম্যাচ শেষে চলতি বছরে উইম্বল্ডনের সেমিফাইনালিস্ট বলেন, ‘বেলিন্ডার বিপক্ষে সত্যিই আমি এমন ফলাফল প্রত্যাশা করিনি। কেননা সে দুর্দান্ত খেলছিল। আমি সারাদিনই জিমে সময় কাটাই কিন্তু তারপরও কখনই এত শক্তিশালী টেনিস খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারিনি, যেভাবে আজ খেলেছি। আসলে শক্তিশালী খেলোয়াড়দের হারানোর জন্যই আমি এমন পথ বেঁচে নিয়েছি।’ টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৩তম স্থানে থেকে প্যান প্যাসিফিক ওপেনে যাত্রা শুরু করেছিলেন। আর ফাইনাল জেতায় এক লাফে অষ্টমস্থানে উঠে এলেন তিনি। বছরের শেষ মুহূর্তে বেলিন্ডা বেনচিচকে হারিয়ে প্রতিশোধটাও দারুণভাবে নিয়ে নিলেন পোল্যান্ডের এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা। কেননা ইস্টবোর্নের ফাইনালেই যে তাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বেলিন্ডা বেনচিচ। তবে সুইস টেনিস তারকার দাবি ফাইনালের আগে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। কেননা সেমিফাইনালে ঠিক আগের দিন মুখোমুখি হয়েছিলেন ড্যানিশ টেনিস তারকা ক্যারোলিন ওজনিয়াকির। টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই ওজনিয়াকির বিপক্ষে জিততেও রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাকে। যে কারণে রাদওয়ানস্কার বিপক্ষে ম্যাচে তার পা চলছিল না বলে দাবি বেনচিচের, ‘এ্যাগ্নিয়েস্কা আমাকে অনেক দৌড়িয়েছে। একদিন আগেই সেমিফাইনাল খেলার পর আজ আমার সার্ভ খুবই ধীর হয়ে পড়ে। আমার পা দিয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। দ্বিতীয় সেটে আমি কিছুটা ভাল খেলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারপরও ভুল করেছি বেশি। তবে এটা উপলব্ধি করতে পারলাম যে তার মতো খেলতে হলে আমাকে এখনও অনেক কিছু শিখতে হবে। সে অনেক স্মার্ট।’
×