ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অফিস আদালতে এখনও ছুটির আমেজ

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অফিস আদালতে এখনও ছুটির আমেজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঈদের তিন দিন ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে সরকারী-বেসরকারী অফিস-আদালত ছিল ফাঁকা। অফিস খুললেও কর্মীদের উপস্থিতি কম থাকায় ঠিকমতো কাজ শুরু হয়নি। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবার প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ সচিবালয়, ব্যাংক-বীমা ও আদালতপাড়ায় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। প্রথম কর্মদিবসে প্রায় সকল অফিসেই উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়, কোলাকুলি আর খোশগল্পে সময় পার করতে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এবার কোরবানির ঈদের ছুটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার থেকে। তিন দিন ছুটির দুই দিনই (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি পড়ে যাওয়ায় অনেকে বাড়তি ছুটি নিয়ে গ্রামে গেছেন ঈদ করতে। এ কারণে অফিস-আদালতে স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। রবিবার সকাল নয়টা থেকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে আসতে শুরু করলেও বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। উপস্থিতি ৪০ শতাংশেরও কম ছিল বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। স্বাভাবিক সময়ে সচিবালয়ে দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা কক্ষটি কোলাহলপূর্ণ থাকলেও এদিন ছিল সুনসান নীরবতা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ছুটি শেষ হলেও অনেকে এখনও ঢাকায় ফিরতে পারেননি। আগামীকাল উপস্থিতির হার কিছুটা বাড়বে। আগামী সপ্তাহেই সচিবালয় আগের চেহারায় ফিরে পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সকালে সচিবালয়ে অফিস করেছেন। সকালে সংসদ সচিবালয়েও দেখা যায় ঢিলেঢালা ভাব। বিভিন্ন দফতরে দর্শনার্থীর ভিড়ও ছিল কম। সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে ছুটি নেয়ায় অনেকেই আজ অফিসে আসেননি। মঙ্গল-বুধবার সবাই চলে আসবেন আশা করা যাচ্ছে। সংসদ ভবনের মূল ভবন ও মন্ত্রী হোস্টেল এলাকায় সংসদীয় কমিটির সভাপতিদের কার্যালয়গুলোতে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। গণপূর্ত অধিদফতরের এক কর্মচারী জানান, সকালে বেশিরভাগ সভাপতির কার্যালয় থেকে আগেই বলা হয়েছিল তালা না খুলতে। পুরান ঢাকার আদালত পাড়াতেও ছুটির আমেজ এখনও কাটেনি। এ দিন আদালতে বিচারক, আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীদের উপস্থিতি ছিল হাতেগোনা। ঢাকার প্রধান চার আদালতের তিন বিচারকই ছুটিতে থাকায় তাদের কাজ করেছেন ভারপ্রাপ্ত বিচারকরা। কোন কোন বিচারককে তিন-চারটি আদালতেও কাজ করতে দেখা গেছে। ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার নিজেরটিসহ আরও তিনটি ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ চালান। প্রায় সব আদালতেই বিচারপ্রার্থীদের পক্ষে শুনানির জন্য সময় চাইতে দেখা গেছে। লেখক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলা ছিল ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে। সাক্ষী না এলেও মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় হাজির হয়েছেন দুই সহকারী পাবলিক প্রসিকিউর বসির আহমেদ মিয়া এবং বিপুল দেবনাথ। তবে এ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম হেলালকে এজলাসে দেখা যায়নি। রাষ্ট্রপক্ষের কোন সাক্ষীও আসেননি। রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে আসামিদের বহনকারী প্রিজনভ্যানও এদিন আদালতে প্রাঙ্গণে কম এসেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেন। মতিঝিলের ব্যাংকপাড়ার চিত্রও ছিল একই। ব্যাংক-বীমা অফিস খুললেও উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম। লেনদেনও হয়েছে হাতেগোনা। মতিঝিলপাড়া ছিল ফাঁকা। সব মিলে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে পুরো রাজধানী ছিল ফাঁকা। ছিল ছুটির আমেজ। আগামী সপ্তাহ থেকে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে অনেকে ধারণা করছেন।
×