ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘অস্ট্রেলিয়া প্রতিনিধি দল সন্তুষ্ট, আশা করি তারা খেলতে আসবে’

বাংলাদেশে কোন জঙ্গী ঝুঁকি নেই ॥ শন ক্যারলকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশে কোন জঙ্গী ঝুঁকি নেই ॥ শন ক্যারলকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে আসা অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিমের উদ্বেগ ছিল। আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের জানিয়েছি। তারা সন্তুষ্ট। আশা করি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিম আসবে এবং খেলবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে আসা অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসেছে। বৈঠকে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের অবহিত করা হয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা টি-২০ বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিলাম। এছাড়া সম্প্রতি পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট টিম বাংলাদেশ সফর করেছে। এ সময় আমরা কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলাম তাও তাদের অবহিত করেছি। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া টিমের বাংলাদেশ সফরকালে কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাও তাদের বিস্তারিত জানানো হয়েছে। তারা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ক্রিকেটারদের জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল যথাসময়ে আসবে। বৈঠক সূত্র জানায়, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিমকে ভিভিআইপি মর্যাদা দেয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। টি-২০ বিশ্বকাপের নিরাপত্তার আদলে তাদের এ সফরের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এমনকি জঙ্গী তৎপরতায় বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স হিসেবে নিয়েছে বলেও তাদের জানানো হয়েছে। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার এই প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করলেও তারা কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। তারা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলের কাছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দেবে। পরে তারা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। টেস্ট সিরিজ যথাসময়ে হবে কি-না এমন প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, এখন বলতে পারব না। এখনও তো অনেক সময় রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া টিম দু’দিন আগে এলেও তো যথাসময়ে হতে পারে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারলের নেতৃত্ব চার সদস্যের প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুরের আগে মন্ত্রণালয়ে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে আধা ঘণ্টার এই বৈঠকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজি মোখলেসুর রহমান, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এবং ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ায় হাইকমিশনার গ্রেগ উইলককও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তাদের জানিয়েছি। সকল ধরনের নিরাপত্তার বিষয় তুলে ধরে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ একটি ক্রিকেটপ্রেমী দেশ, তাদের কোন অসুবিধা হবে না। হাইকমিশনার গ্রেগ উইলকক বলেন, দুই দেশই ক্রিকেট ভালবাসে। নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা একটা মেসেজ পেয়েছিলাম, সে বিষয়ে এখানে এসে বৈঠক করলাম। আলোচনা হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের আসা না আসার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি। বৈঠক শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, উনারা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে এসেছেন। আমরা তাদের বলেছি, ক্রিকেটারদের ভিভিআইপি নিরাপত্তা দেব। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপের উদাহরণও দিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার এই নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে যা দেখে গেল, তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবে বলে জানান তিনি। দুটি টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সোমবার বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ‘সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির তথ্য পাওয়ার’ কথা জানিয়ে শনিবার হঠাৎ করেই সফর পিছিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন এ্যাফেয়ার্স এ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) বাংলাদেশে ভ্রমণে বিষয়ে সতর্কতা জারি করায় সফর পেছানোর এই সিদ্ধান্ত। গত শুক্রবার ওয়েবসাইটে দেয়া ডিএফএটির ওই নোটিসে বলা হয়, জঙ্গীরা বাংলাদেশে ‘অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থের ওপর’ আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে- এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য তাদের হাতে রয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিস্ময় প্রকাশ করলে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারল নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও পরিকল্পনা খতিয়ে দেখতে রবিবার বাংলাদেশে আসেন এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন। নিরাপত্তার বিষয়ে কোন দেশের এ ধরনের বক্তব্য সাধারণত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারকে জানানো হয়। এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রমের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিসিবি সভাপতি বলেন, আমি বলতে পারব না। তবে আসার দু’দিন আগে এ ধরনের সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত হয়েছি। তিনি বলেন, আগেও বলেছি, এখনও বলছি- ‘বাংলাদেশ ইজ এ সেফ কান্ট্রি ফর ক্রিকেট’। এদেশে কয়েকদিন আগে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা খেলে গেছে। এখন তাদের না আসার মতো কিছু এখানে ঘটেনি।
×