ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর অফিসপাড়া জমেনি;###;পাড়া-মহল্লাও নীরব;###;ফিরতি পথ অনেকটা নির্বিঘ্ন

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা শুরু

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদের ছুটি শেষ। এবার কর্মস্থলে ফেরার পালা। রেল-সড়ক ও নৌপথে নির্বিঘেœ রাজধানীতে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যানজটমুক্ত সড়কপথ। রেলপথে সিডিউল বিপর্যয় নেই। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চও আসছে সময়মতো। সব পরিবহনেই বাড়তি যাত্রীর চাপ। টার্মিনালগুলোতে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। তবে জমে ওঠেনি রাজধানী। ব্যস্ত নগরীর অলি-গলি থেকে শুরু করে রাজপথ পর্যন্ত এখনও নীরব। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নগরীতে ফিরেই যাত্রীরা পরিবহন সঙ্কটের শিকার হচ্ছেন। রিক্সা ও অটোরিক্সা সবখানেই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কয়েকগুণ। এখনও স্বাভাবিক বাস চলাচল শুরু হয়নি। যারা নীবর শহরে মনের মতো করে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন তাদের উপস্থিতি আছে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। শুক্রবার ঈদ শেষে রবিবার ছিল প্রথম অফিস। অনেকেই ছুটি বাড়িয়ে গেছেন প্রিয়জনের কাছে। তাই অফিসপাড়া যেমন জমে ওঠেনি তেমনি পাড়া-মহল্লাও নীরব। রবিবার সকাল থেকেই কমবেশি মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিতে আসছেন। সোমবার ভিড় বেড়েছে। সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মস্থলে ফেরা মানুষের স্রোত। বিভিন্ন গন্তব্য থেকে যাত্রীবোঝাই ট্রেন একের পর এক আসছে। ছাদ, ইঞ্জিন, বাম্পার থেকে শুরু করে সবখানেই মানুষ আর মানুষ। যেমন ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ফেরা তেমনি আসা। জামালপুর থেকে আসা যাত্রী কল্লোল জানান, ঈদের ছুটির সঙ্গে তিনদিন বেশি বাড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তবে মূল ছুটি শুক্রবার হওয়ায় এই ব্যাংকারের মুখে আফসোসের যেন শেষ ছিল না। তিনি বলেন, রবিবার অথবা বুধবার ঈদ হলে ছুটি আরও বেশি পাওয়া যেত। এতে ঈদের আনন্দের মাত্রা আরও বেড়ে যেত। তিনি জানান, ঘরে ফিরতে অনেকটা দুর্ভোগ হলেও আসতে কোন দুর্ভোগ হয়নি। সময়মতো চলে আসতে পেরেছি। নেত্রকোনা থেকে আসা হাওর এক্সপ্রেসের যাত্রী কাদির জানান, ছুটি শেষ। তাই ঢাকায় না ফেরার আর বিকল্প নেই। পরিবার পরিজন রেখেই ফিরেছেন তিনি। তবে সুতোয় যেন বারবার নাড়ির টান পড়ছে। বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে আসাতে যেন কোন মতোই মন সায় দিচ্ছিল না। চট্টগ্রাম থেকে আসা ঢাকা মেইলের যাত্রী মাহিন জানান, টিকেট পেতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। অনেক কষ্ট করে এসেছি। সড়ক দুর্ঘটনার ভয়ে ট্রেনে আসাই নিরাপদ বলে মনে করেন তিনি। রাজশাহী থেকে দুপুরে কমলাপুরে আসা সিল্কসিটির যাত্রী মিথিলা জানান, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মানেই ছুটি নিয়ে টানাটানি। ইচ্ছে করলেই ছুটি মেলে না। তাই দ্রুত ফেরার তাগিদ। অনেক কষ্টে ফিরতি টিকেট মিলেছে। তবে ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে। পৌঁছার ক্ষেত্রে সময়ের হেরফের তেমন হয়নি। এখানেই শান্তি। সকালে সিলেট থেকে আসা পারাবত এক্সপ্রেসের যাত্রী সিয়াম জানান, বাসে টিকেট সংগ্রহে যেমন যুদ্ধ করতে হয়েছে, তেমটি ট্রেনের ক্ষেত্রেও। তবে ট্রেন জার্নি মানেই নিরাপদ। দিনাজপুর থেকে আসা একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী মিথিলা ও তাঁর চার বান্ধবী জানালেন, নিরাপদে ঢাকা ফিরেছেন তারা। রাস্তায় কোন রকম ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়নি। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন গন্তব্য থেকে যাত্রীরা নিরাপদে ঢাকায় ফিরে আসছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২০টির বেশি ট্রেন কমলাপুরে এসেছে। এর বেশিরভাগই সময়মতো এসেছে। অর্থাৎ সময়মতো ট্রেন ছাড়লে আসতে বিলম্ব হয় না। তিনি বলেন, রাস্তায় কোন দুর্ঘটনা না ঘটলে, যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা না দিলে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হয় না। আমরা যথাসময়ে ট্রেন আসা যাওয়া নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি নগরীতে ফিরতে যাত্রীদের তেমন একটা ভোগান্তি হবে না। এদিকে রাজধানীর মহাখালী, সায়েদাবাদ, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালেও ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ আছেই। মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের ২৩ জেলাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলা থেকে নিরাপদে যাত্রীরা ফিরছেন। রাস্তায় যানজট নেই। নির্দিষ্ট সময়ের আগে বেশিরভাগ বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছাচ্ছে। তবে টিকেট পেতে যাত্রীদের ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। তিনি জানান, ফিরতি মানুষের জন্যও অগ্রিম টিকেটের কোন ব্যবস্থা নেই। যাত্রীরা আসা মাত্রই কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারছেন।
×