ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানবন্দর-গণভবন পর্যন্ত

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাসিনাকে সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ১ অক্টোবর ২০১৫

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাসিনাকে সংবর্ধনা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিমানবন্দর থেকে গণভবন- এই দীর্ঘ পথে মানুষের ঢল নামাতে চায় আওয়ামী লীগ। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নিয়ে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে অনেকটা ‘মানবপ্রাচীরের’ আদলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যাপক গণসংবর্ধনা জানানোর প্রস্তুতি চলছে ক্ষমতাসীন দলটিতে। আগামী ৩ অক্টোবর দীর্ঘ এ পথের সাতটি পয়েন্টে শীর্ষনেতারা অবস্থান নিয়ে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পুষ্পবৃষ্টিসহ ব্যানার-ফেস্টুন-প্লাকার্ড নিয়ে সেøাগানে সেøাগানে মুখরিত করে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। আর বিমানবন্দরে ওইদিন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছায় স্নাত করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী ৩ অক্টোবর গণসংবর্ধনা দিতে রাজপথে নামার জন্য দলমত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ লাভ করার মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির জন্য গৌরব ও সম্মান বয়ে এনেছেন, বাংলাদেশের সম্মানকে হিমালয়ের মতো উঁচু জায়গায় নিয়ে গেছেন। তাই কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি ৩ অক্টোবর দুপুর দেড়টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ধরিত্রী কন্যা ও শান্তির প্রতীক শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা জানাবে। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান সফল করতে বুধবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আর এই বৈঠকেই গণসংবর্ধনার সাতটি পয়েন্ট চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠক শেষে সাতটি পয়েন্টের নাম ঘোষণা করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ৭টি রুটের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত রুটে নেতৃত্বে থাকবেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, জাহিদ হাসান রাসেল এমপি, আজমত উল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন ও ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এমপি। খিলক্ষেত থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার পর্যন্ত রুটে নেতৃত্ব দেবেন কেন্দ্রীয় নেতা একেএম রহমতুল্লাহ এমপি, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি এবং আইপিইউ সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি প্রমুখ। এছাড়া কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে হোটেল রেডিসন পর্যন্ত রুটে নেতৃত্বে থাকবেন এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম এমপি ও হাবিবুর রহমান মোল্লা এমপি। হোটেল রেডিসন থেকে কাকলীর মোড় হয়ে বনানী এলাকায় নেতৃত্বে থাকবেন কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি। জাহাঙ্গীর গেট থেকে র‌্যাংগস ভবন পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি ও আসলামুল হক আসলাম এমপি। র‌্যাংগস ভবন থেকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা পর্যন্ত রুটে নেতৃত্ব দেবেন কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি ও হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি। জাতীয় সংসদ ভবন থেকে গণভবন পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্বে থাকবেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি। ইতালিয়ান নাগরিক হত্যার ঘটনা বিচ্ছিন্নÑ নাসিম ॥ বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ইতালীয়ান নাগরিক হত্যা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জন ম্লান হবে না। আমেরিকাসহ অনেক উন্নত দেশেও এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভাল। তিনি বলেন, ইতালির নাগরিক হত্যার ঘটনাটি তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ছাড়াও জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আহমদ হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ড. আবদুর রাজ্জাক, আফজাল হোসেন, অসীম কুমার উকিল, সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওছার, সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি, যুব মহিলা লীগ সভাপতি নাজমা আকতার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশন জাহান সাথী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ইতালি নাগরিক হত্যাকা- অত্যন্ত সুপরিকল্পিতÑ হানিফ ॥ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, যখন প্রধানমন্ত্রী নানা পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন বিশ্বনেতারা তাঁর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছেন, ঠিক সেই সময়ে সুপরিকল্পিতভাবেই ইতালিয়ান নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। যারা ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করে দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, দেশকে জঙ্গীবাদের আখড়ায় পরিণত করেছিল, সেই দলের নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাবেলা সিজারের হত্যাকা-ের কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা উচিত। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া গণসংবর্ধনা সফল করতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, যখন আমাদের নেত্রী দেশের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন, ঠিক তখনই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিরা আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে মিলে গুলশানে একজন নিরীহ ইতালিয়ান নাগরিককে হত্যা করেছে। ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, গণসংবর্ধনা সফল করার জন্য রাস্তায় যাতে বিশৃঙ্খলা ও জনগণের ভোগান্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, বজলুর রহমান, ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, আওলাদ হোসেন প্রমুখ।
×