ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্যারাগনের শেয়ার সার্টিফিকেট মামলায় এম এ সালামসহ ৫ আসামিকে জামিন

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২ অক্টোবর ২০১৫

প্যারাগনের শেয়ার সার্টিফিকেট মামলায় এম এ সালামসহ ৫ আসামিকে জামিন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্যারাগন লেদার এ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সার্টিফিকেট প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত আসামি ও কোম্পানিটির চেয়ারম্যান এম এ সালামকে জামিন দিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। ফলে এ মামলার ২০ আসামির মধ্যে আত্মসমর্পণ করা পাঁচজনই জামিন পেলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ভবনে অবস্থিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) হুমায়ুন কবীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, এম এ সালাম শারীরিকভাবে অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ। ইতোমধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ ট্রাইব্যুনালকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে, আসামিকে কারগারে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওই চিঠির ভিত্তিতে এম এ সালামপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী রেজাউর রহমান জামিনের আবেদন জানালে বিজ্ঞ আদালত তা মঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী ইমানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে বাদীপক্ষের (বিএসইসি) আইনজীবী মাসুদ রানা খান ও রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২০ জন আসামির মধ্যে পাঁচজন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। ট্রাইব্যুনালের বিচারক হুমায়ুন কবীর তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান। এ মামলায় আটক পাঁচজনের মধ্যে চার আসামিকে বিশেষ বিবেচনায় ধারাবাহিকভাবে জামিন দেয়া হয়। এর মধ্যে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আবদুস সালাম, ২৩ সেপ্টেম্বর এসএস জুনায়েদ বাগদাদী, ২৮ সেপ্টেম্বর মো. জালাল উদ্দিন ও হেমন্ত বাইন জামিন পান। সর্বশেষ ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জামিন পেলেন এম এ সালাম। আগামী ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মামলা সূত্রে জানা যায়, প্যারাগন লেদারের শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতে বিএসইসি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে ওই কমিটি ২০০১ সালের ৩১ মে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামিগণ কোম্পানির শেয়ার জাল করার ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পরে এই জাল শেয়ার সার্টিফিকেট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানিটির কিছু কর্মকর্তা ঋণের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা দেয়। আর ওই সব জাল শেয়ার সার্টিফিকেট ব্যাংকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসে। শেষ পর্যন্ত ওই সব শেয়ারবাজারে এসে মারাত্মক বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করে এবং নির্দোষ বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জাল শেয়ার গ্রহণ করা ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা আসামিগণের প্রত্যেকের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা করে ঋণ নেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এছাড়া আসামিদের দু’জন জাল শেয়ার সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সন্ধানী ক্রেডিট এ্যান্ড কো-অপারেটিভ ও চার্টার্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে ঋণ গ্রহণ করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটি ওই সময় তিন প্রকার শেয়ার ইস্যু করে, যা ইস্যু করার মতো আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। আর ফুজি বাংলা নামের কোরিয়ান কোম্পানি থেকে বিলি নামের একজনকে প্যারাগন লেদারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক করার সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। কিন্তু এটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হওয়া সত্ত্বেও গোপন করে কোম্পানিটি। আর এ তথ্য গোপন রেখে আসামিরা কোম্পানিটির শেয়ার ক্রয় করে স্বার্থ হাসিলের জন্য। প্যারাগন লেদারের শেয়ার জালিয়াতি নিয়ে কোম্পানিসহ ২০ জনকে আসামি করে ২০০১ সালে মামলা করে বিএসইসি। আসামিরা হলেন- এমএ সালাম, আবুল কালাম আজাদ, নূর মোহাম্মদ, কোম্পানির এ্যাডভাইজার আবদুস সালাম, এসএস জুনায়েদ বাগদাদী, মো. কুতুবউদ্দিন, মো. আরব মিয়া, আলী আহম্মেদ, মো. নূরুল আফসার, মো. কলিমউদ্দিন, মো. জালাল উদ্দিন, হেমন্ত বাইন, এবিএম মোরশেদুল হক, মো. সাইফুল্লা মিজান, শামসুল হাদী, মো. বশির আলম, মাহবুবুর, মাহবুবুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন ও প্যারাগন লেদার এ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
×