অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিতে জাপানী উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উত্তম জায়গা। সরকার এখানে বিদেশীদের বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জাপানের ২৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। জাপানী প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন দেশটির মিনিস্ট্রি অব ইকোনমি ট্রেড এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস-মিনিস্টার ইয়োশিহিরো সেকি, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানী রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবি, দূতাবাস কর্মকর্তা ও জাইকাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠনে জাপান অনেক সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতিও দিয়েছে দেশটি। জাপানে বর্তমান বাংলাদেশের রফতানি ১০০ কোটি ডলার। কয়েক বছরের মধ্যে তা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, জাপান থেকে বাংলাদেশ ১৪০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে। জাপান গত এপ্রিল থেকে দেশটিতে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে। অস্ত্র ও হ্যান্ডগ্লাভস ছাড়া অন্য যে কোন পণ্য জাপানে শুল্কমুক্তভাবে রফতানি করা যায়। তোফায়েল আহমেদ বলেন, গাজীপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য জাপানকে ৫০০ একর জমি দেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার ৫০০ একর জমি দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। আমরা চাই জাপান বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করুক। এক সময় চীন ছিল জাপানের কাছে ‘চীন প্লাস’ পরে দেশটি ‘থাইল্যান্ড প্লাস’ করেছে। আমাদের চাওয়া জাপান ‘বাংলাদেশ প্লাস’ করুক। তিনি বলেন, জাপান আমাদের উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার। আমরা চাইব, জাপান তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুক। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। আমরাও জাপানে পণ্য রফতানি করতে আগ্রহী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে জাপানের ২৯টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে জাপানের প্রায় ২৩০টি প্রতিষ্ঠান সারাদেশে কাজ করছে। জাপানকে বাংলাদেশের গাজীপুর অথবা নারায়ণগঞ্জে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য জমি বরাদ্দ দিতে প্রস্তুত। জাপানী বিনিয়োগকে বাংলাদেশ উৎসাহিত করে।
বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাপানকে প্রয়োজনীয় সবধরনের আন্তরিক সহযোগিতা প্রদান করবে। তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশের পুরনো বন্ধু, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে দেশটি সফর করেন। রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা ব্যক্ত করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার রফতানিতে জাপান তাদের রুলস অব অরিজিন দুই স্তর থেকে এক স্তরে নামিয়ে এনেছে। এর ফলে জাপানে বাংলাদেশের পোশাক খাতের রফতানি বাড়বে।