ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিউটি পারভীন

বিশ্বের সেরা লীগেই খেলছি ॥ শাকিরি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৭ অক্টোবর ২০১৫

বিশ্বের সেরা লীগেই খেলছি ॥ শাকিরি

তাঁকে বলা হয় ‘শক্তির ঘনক্ষেত্র’ এবং ‘জাদুর বামন’। প্রতিপক্ষ শিবিরে তাঁর আক্রমণ পরিচিত ‘শ্যাক এ্যাটাক’ নামে। সুইজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার জেরডান শাকিরি শুধু এসব নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি মাঠেও কার্যকর ভূমিকা রেখে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। গত বিশ্বকাপেই হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে শেষ গ্রুপ ম্যাচে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করেছেন ২৩ বছর বয়সী এ তরুণ। প্রায় একক নৈপুণ্যেই তিনি সুইজারল্যান্ডকে শেষ ষোলোয় তুলেছিলেন সুইসদের। তবে সম্প্রতি ক্লাব ক্যারিয়ারে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং সময় কাটাচ্ছেন তিনি। বাসেল থেকে বেয়ার্ন মিউনিখে যোগ দিয়ে সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ছোট মানেরর দল স্টোক সিটির হয়ে খেলছেন। অথচ অর্ধমৌসুম ইন্টার মিলানের হয়েও খেলেছেন এ বছর। তবে তাঁর থাকাকালীন বাভারিয়ানরা গত মৌসুমে ট্রেবল জয় করেছে, জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের মর্যাদপূর্ণ শিরোপাও। দেশের হয়ে ৪৮ ম্যাচে ১৭ গোল করা এ মাঝমাঠের জাদুকর সম্প্রতিই এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘বিশ্বের সেরা লীগে আছি আমি।’ প্রশ্ন ॥ জার্মানি-ইতালির লীগ খেলার পর ইংল্যান্ডে এসেছেন। আপনার চোখে কোন লীগটি কেমন? শাকিরি ॥ জার্মানির সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি হচ্ছে শৃঙ্খলা। জার্মানরা সবচেয়ে বেশি মনোযোগী সুশৃঙ্খল ফুটবল খেলার প্রতি। আর ইতালির ফুটবল কিছুটা কৌশলের মধ্যে দিয়েই চলে। আর ইংল্যান্ডে খেলা চলে আক্রমণাত্মক, আমি এমনটাই অনুভব করছি। যদিও এখন পর্যন্ত আমি খুব কম ম্যাচ খেলেছি প্রিমিয়ার লীগে। কিন্তু এটা আমি বুঝতে পারছি বিশ্বের সেরা লীগে এসেছি আমি। প্রশ্ন ॥ বেয়ার্ন-মিলানের চেয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্টোক সিটি কম স্বীকৃত। এ চ্যালেঞ্জকে কিভাবে দেখছেন? শাকিরি ॥ হ্যাঁ, হতে পারে স্টোক এখনও অন্যগুলোর মতো নিজেদের আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে তুলে ধরতে পারেনি। কিন্তু ক্লাবটি উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলেছে, বড় কিছু করার জন্য প্রচেষ্টায় আছে। তারা ইউরোপে একটা প্রতিষ্ঠিত ক্লাবে পরিণত হতে চায়। আর সেটাই আমাকে এখানে আসার ক্ষেত্রে একটা তাগাদা দিয়েছে। স্টোক আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে খেলোয়াড় হিসেবে এবং ব্যক্তি হিসেবে উন্নতভাবে গড়ে ওঠার। সর্বোপরি আমি চাই খেলতে, নিজের খেলাটাকে করতে চাই নিখুঁত এবং দলের হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। প্রশ্ন ॥ টানা দুই বিশ্বকাপে খেলার পর আপনি এখন সুইজারল্যান্ডের নিয়মিত অপরিহার্য খেলোয়াড়। এ বিষয়টি আপনার কেমন লাগছে? শাকিরি ॥ আমরা ওটমার হিজফেল্ডের অধীনে দারুণ ফুটবল খেলেছি। তিনি প্রচুর তরুণ খেলোয়াড়কে সদ্ব্যবহার করে দারুণ এক ব্রেকথ্রু দিয়েছেন জাতীয় দলকে। আমি সেই তরুণদের মধ্যে একজন। তরুণ বয়সে এমন আত্মবিশ্বাস অবশ্যই সুইস ফুটবলকে সামনের দিকে এগিয়ে দেবে। আমরা উচ্চ পর্যায় ও মানের, আকর্ষণীয় ও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছি। আর এটা আমার স্টাইলের সঙ্গে খুব মিলে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা সাফল্যের নতুন এক বেঞ্চমার্ক স্থাপন করেছি। অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে অনেক তরুণ নিজের জায়গা করে নিয়েছেন শুধু জাতীয় দলে নয়, ভাল কিছু ক্লাবে। প্রশ্ন ॥ বিশ্বসেরা দল জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলকে ধরার জন্য এখন সুইজারল্যান্ডের কী করণীয়? শাকিরি ॥ ২০১৪ বিশ্বকাপে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে সেটা ভুলবার নয়। আমরা শেষ ষোলোতে গেছি এবং আর্জেন্টিনার কাছে অল্পের জন্য হেরেছি। তারা শিরোপার অন্যতম ফেবারিট ছিল। ওই ম্যাচটি আমাদের জন্য একটা আবেগঘন অভিজ্ঞতাও উপহার দিয়েছে। আমরা হয়তো জিতেও যেতে পারতাম। আমি অবশ্যই বলব না এটা ভাগ্যের বিষয় বরং এখানে যোগ্যত ও সামর্থ্যরে ব্যাপার আছে যেখানে মূল পার্থক্য ছিল। আর্জেন্টিনাসহ বড় কোন দলের বিরুদ্ধে সফলতা পাওয়ার জন্য প্রাপ্ত সব সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। সেটা যত ক্ষুদ্র সুযোগই হোক না কেন কাজে লাগানো জরুরি। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারিনি এবং সেটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল। প্রশ্ন ॥ বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করার অনুভূতিটা কেমন? শাকিরি ॥ ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয় এবং ফ্রান্সের কাছে ৫-২ গোলে পরাজয়ের পর এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র জিতলেই আমরা পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারব। খেলোয়াড় হিসেবে আমরা সবাই খুবই এ বিষয়ের প্রতি মনোযোগী ছিলাম এবং আমরা সবসময়ই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমাদের সামর্থ্য আছে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। যদিও ততোদিনে ফরাসীদের কাছে পরাজয়ের পর মিডিয়াগুলো আমাদের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের মধ্যে ছিল। কিন্তু ্আমরা সেদিকে ভ্রƒক্ষেপ করিনি, নিজেদের করণীয় যা সেদিকেই বেশি মনোযোগী হয়েছি। আমার হ্যাটট্রিক সেদিন সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, কিন্তু আমি মনে করি দল হিসেবে আমরা ওইদিন দেখিয়ে দিয়েছি কি করতে পারি। আমি তিনটি গোল করতে পেরেছিলাম এর অন্যতম কারণ চমৎকার সহায়তা পেয়েছি সতীর্থদের কাছ থেকে।
×