ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্রিকেটার শাহাদাত ৩ দিনের রিমাণ্ডে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৯ অক্টোবর ২০১৫

ক্রিকেটার শাহাদাত ৩ দিনের  রিমাণ্ডে

কোর্ট রিপোর্টার ॥ গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার কাজী শাহাদাত হোসেন রাজীবের ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বৃহস্পতিবার মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ শফিকুর রহমান রিমান্ড আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইউনুফ হোসেন শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রিমান্ড শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার সকালে কারাগার থেকে শাহাদাতকে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। শাহাদাতের আইনজীবী কাজী নজিব উল্লাহ হিরুর রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন প্রার্থনা করে বলেন, শাহাদাতের ৯ মাস বয়সী একটি কন্যা শিশুসন্তান রয়েছে। তাকে নিয়েই মূলত ঘটনার সূত্রপাত। মামলার ভিকটিম গৃহকর্মীকে দিয়ে শিশুসন্তানের জন্য সুজি রান্না করতে দেয়া হয়। রান্নার সময় মরিচের খুরচুন দিয়ে সুজি নড়াচড়া করায় তাতে ঝাল লেগে যায়। আর তা শিশুটিকে খাওয়ানের সময় তার ঝাল লাগায় শাহাদাতের স্ত্রী তাকে মারধর করে। এখানে শাহাদাতের কোন ভূমিকা নেই। তিনি ব্যস্ত ক্রিকেটার। বাসায় সময় দেয়ার সুযোগই তার নেই। শুধু স্ত্রীর কারণে তাকে মামলাটিতে আসামি করা হয়েছে। তাই রিমান্ডের কোন প্রয়োজন নেই। শাহাদাত দেশের সম্পদ। দেশের জন্য তার অবদান আছে তাই তার জামিন মঞ্জুর করা হোক। অন্যদিকে রিমান্ডের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পুলিশ কমিশনার মিরাস উদ্দিন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে এ্যাডভোকেট ফাহমিদা আক্তার, রাজধানীর মানবাধিকার সংস্থার আইনজীবী সৈয়দ নাজমুল হুদা শুনানি করেন। তারা বলেন, জাতীয় দলের ক্রিকেটার বলে শাহাদাত পার পেতে পারেন না। ভিকটিম আদালতে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তার লাইনে লাইনে শাহাদাতের নাম রয়েছে। শুধু সুজি রান্নার ঘটনার জন্যই নির্যাতন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে মেয়েটির ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন চলেছে। শাহাদাতই নির্যাতনের জন্য বাজার থেকে লাঠি কিনে আনে। তাই যে খুন্তি দিয়ে সেঁকা দেয়া হয় এবং যে লাঠি দিয়ে প্রহার করা হয়, তা উদ্ধারের জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। মামলাটিতে এরও আগে গত ৪ অক্টোবর শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন জাহান নিত্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। মামলাটিতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা মাহফুজা আক্তার হ্যাপি (১১) আদালতে হাজির হয়ে জবানবন্দী প্রদান করেছেন। বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ওসিসিতে চিকিৎসাধীন গৃহপরিচারিকা মাহফুজা আক্তার হ্যাপি। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মিরপুরের ২ নম্বর সেকশনের এইচ ব্লকের ৫ নম্বর রোডে শাহাদাতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করত হ্যাপি। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পল্লবীর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার ৩ নম্বর রোডের মাথায় হ্যাপিকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন মিরাজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি। গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন রাজীবের বিরুদ্ধে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় শাহাদাত ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাতকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে শিশুটিকে অমানবিক নির্যাতনের।
×