কলু বা খুলু কিংবা তেলী যে নামেই ডাকুন না কেন, এরা ঘানিতে সরষে পিষে তেল উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িত। এ পেশা অনেক পুরাতন। কথিত আছে, সম্রাট আকবরের শাসনামলে এ পেশার লোকজনের উদ্ভব হয়। সে সময়ে ইট সুরকির সুরম্য অট্টালিকা নির্মাণে ইট তেলে ভাজা হতো বলে প্রচার আছে। সেই তেল তৈরির জন্য কিছু পরিবারকে সম্রাট আকবর দায়িত্ব দেন। সেখান থেকেই মূলত এই তেলী পরিবারের আবির্র্ভাব। এরা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতবর্ষে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় এমনকি প্রতিটি ইউনিয়নে কলু পরিবারের বসবাস রয়েছে। এক সময় কলু পরিবারের সদস্যরা হাট থেকে সরষে কিনে তা শুকিয়ে ঘানিতে তুলেছে। এ কাজে বাড়ির মেয়ে-পুরুষ এমনকি শিশুরাও সহায়তা করেছে। লম্বা ঘানির এক পাশে পাথর বসিয়ে অন্য পাশে গরু জুড়ে ঘানি টেনে তেল বের করা হয়েছে। গরুর চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়া হতো। মুখে লাগানো হয়েছে টোনা। যাতে আশপাশে কোন খাবারে চোখ না পড়ে। সারা দিনের উৎপাদিত তেল পরদিন ভাঁড়ে তুলে গ্রামের বাড়ি বাড়ি তা বিক্রি করে বেড়িয়েছে তেলী। ঘানিতে ভাঙ্গানো সরষের তেলের স্বাদই ছিল ভিন্ন। সরষে বাটা ইলিশ, সরষের তেলে মুড়ি মেখে বৃষ্টির দিনে আড্ডার আসরে খাওয়া কিংবা বেগুন-আলু ভর্তার কথা মনে হলে এখনও জিহ্বায় জল আসে। সেই স্বাদ এখন আর সরষের তেলে নেই। আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনে উৎপাদিত তেলের স্বাদে পরিবর্তন এসেছে। তেলীদের অনেকেই এখন এ পেশায় নেই। বদলে গেছে তাদের জীবিকা। আধুনিক ও ডিজিটাল যুগে সরষের তেল উৎপাদনের পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এসেছে। Ñবাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: