ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মংলায় মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধূকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি ॥ ছেলেকে বেধড়ক পিটুনি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১১ অক্টোবর ২০১৫

মংলায় মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধূকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি ॥ ছেলেকে বেধড়ক পিটুনি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা, ১০ অক্টোবর ॥ বিকেল পাঁচটার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন স্বামী। পথিমধ্যে বখাটেদের হামলা। প্রকাশ্য দিবালোকে স্বামীর সামনে স্ত্রী ও তাঁর তিন বান্ধবীকে ঘিরে ধরে ৯ বখাটে যুবক। তারপর তার স্ত্রী ও তিন বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি করতে থাকে তারা। আশপাশে লোকজন থাকলেও কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেননি। স্ত্রীর ইজ্জত বাঁচাতে স্বামী ছুটে এলে তাকে বেধড়ক মারধর করে বখাটেরা। শুক্রবার মংলার কুমারখালী এলাকায় এ বর্বর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন মংলা শহরতলীর শেহালাবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল হোসেনের ছেলে মাহবুবুর রহমান (২৯) ও তার পুত্রবধূ সাদিয়া মোস্তফা মৌ (২০)। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে। এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রী এবং তার তিন বান্ধবী মিলে বেড়াতে আসেন শহরতলীর কুমারখালী এলাকার পানি প্রজেক্টে। এ সময় ওই এলাকার কাউন্সিলর হাবিবুর রহমানের বখাটে তিন ছেলে মোঃ তৌহিদুর রহমান (২০), মোঃ সোহাগ (২৭) ও তারেকসহ নয়জনের একটি গ্রুপ তাদের ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে বখাটেরা হৈ হুল্লোড় করতে করতে মেয়েদের ওড়না ও কামিজ ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করে। এ সময় বাঁধা দিতে এলে স্বামী মাহবুবকে এলোপাতাড়ি লাথি, ঘুসি ও লাঠিপেটা করে বখাটেরা। এ ঘটনা দেখে স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে স্ত্রী সাদিয়া। পরে তাকেও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বখাটেরা। একপর্যায়ে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। পরে তারা স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে মংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শনিবার সকালে আহত মাহবুব বলেন, বখাটেদের হামলায় আমি ও আমার স্ত্রী জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফিরে এলে বুঝতে পারি, বখাটেরা আমার স্ত্রীর সোনার চেন ও আমাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সাও নিয়ে গেছে। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে থানায় মামলার জন্য একটি আবেদন করেন বলেও জানান মাহবুব। এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই ফিরোজ শনিবার দুপুরে জনকণ্ঠকে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মংলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছেলে সোহাগকে (২৭) আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। এদিকে ঘটনাটিকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা উল্লেখ করে মংলা পৌর মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, হাবিব কাউন্সিলরের ছেলেদের এ ঘটনার শোনার পর আমি হতভম্ব হয়ে যাই। ঘটনাটি স্থানীয় এমপিকেও জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। কাউন্সিলর হাবিব তার ছেলেদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মেয়েরা জুতা দেখালে কিছু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তারপরেও আমি ব্যাপারটা মীমাংসা করার জন্য অনুরোধ করেছি।
×