ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৩ অক্টোবর ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

রাজধানী যে ‘রাজকীয় ধ্বনি’ ফিরে পেয়েছে, ফিরেছে আপন ছন্দে- সে কথা শুরুতে টেনে আনছি তিতিবিরক্ত হয়ে। ঢাকার রাস্তা এবং আবাসিক এলাকা- দু’জায়গাতেই শব্দদূষণ মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ঈদের ছুটির আগে পরে বেশ ক’টা দিন ঢাকায় কিছুটা জনশূন্যতা ও শান্ত পরিবেশ বিরাজ করেছিল বলেই গত সপ্তাহ থেকে ঈদ-পূর্ব চারিত্র ফিরে পাওয়ায় আবার তীব্র শব্দসন্ত্রাসের বিষয়টি সামনে চলে আসছে। ঢাকার বুকে নতুন বহুতল ভবন ওঠায় কোন ছেদ পড়ছে না। প্রধান প্রধান কয়েকটি আবাসিক এলাকায় মাসের পর মাস ধরে নতুন ভবন নির্মাণের মহাযজ্ঞ চলে। এ সময় যে বিচিত্র ও বিপুল শব্দ উৎপন্ন হতে থাকে তা এলাকাবাসীর দিনের স্বস্তি রাতের শান্তি হারাম করার জন্য যথেষ্ট। আর রাজপথের বিষয়টি আরও অসহ্য। বেশিরভাগ গাড়ির চালকই সামান্য প্রয়োজনে হর্ন বাজানোর ব্যাপারে থাকেন অকৃপণ। হর্নের শব্দ অতিউচ্চ। শব্দ দূষণের এই প্রতিযোগিতায় মোটরসাইকেলকে এগিয়ে রাখতে হবে এ কারণে যে সব হর্ন ছাপিয়ে এটির হর্নই চড়া ও প্রলম্বিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে রাস্তার মোড়ে সিগন্যাল বাতির নির্দেশ উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি জায়গাটা পেরুতে গিয়ে একসঙ্গে ৫-৭টি মোটরসাইকেল যখন একযোগে হর্ন বাজাতে শুরু করে। আশঙ্কা হয় শব্দের তীব্রতায় কানের পর্দা ফেটে যাবে নাতো! কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, মোটরসাইকেলগুলো বেঁধে দেয়া শব্দমাত্রায় হর্ন বাজাচ্ছে কিনা এ বিষয়ে একটু অনুসন্ধান করুন। এক ঘণ্টাতেই পরিস্থিতি বুঝে যাবেন। এরপর একটা কড়া অভিযান চালিয়ে মাত্র একশ’ চালককে জরিমানা করলেই মোটরসাইকেল অলাদের খবর হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, এই সঙ্গে ফুটপাথের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়ার জন্যও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা জরুরী হয়ে উঠেছে। অজ্ঞান পার্টিকে জ্ঞানদান অপারেশনের সময়-দৈর্ঘ্য বুঝে রোগীকে হিসাব করে অ্যানেস্থেশিয়া দেয়ার ব্যবস্থা করেন ডাক্তার। এটাকে আমরা সাধারণভাবে বলি অজ্ঞান করা। আমাদের কথ্য অভিধানে ‘অজ্ঞান পার্টি’ চালু শব্দ। তার ‘ডাক্তার’ এখন মানুষ মারার কারিগর হয়ে উঠছে। সংবাদপত্রে মাঝেমধ্যেই এমন সংবাদ বেরোয়- অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে যাত্রী সর্বস্বান্ত। এইসব খবর আমাদের হয়ত গা সওয়া হয়ে গেছে। একবার নিজে ওই পার্টির কব্জায় পড়লে হয়ত বুঝতে পারব তার স্বরূপ ও ভোগান্তি। কবি তো বলেই গেছেন- কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে/ কভু আশীবিষে দংশেনি যারে... সতর্কতামূলকভাবে এখন অনেক যানবাহনে লেখা থাকে- অপরিচিত কারও দেয়া কিছু খাবেন না। অবশ্য যারা খান তারা এসব লেখা লক্ষ্য করেন না, কিংবা তারা অক্ষরজ্ঞানবঞ্চিত। শহরের এসব শয়তানি বুদ্ধি সম্পর্কে তারা অসচেতন থাকেন। আপনজনের মতো খাতির করে পান, মিষ্টি বা এজাতীয় কিছু খাইয়ে তাকে অচেতন করে সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ, ঘড়ি-মোবাইল ফোন আত্মসাত করবেন- এমন ভাবনা তাদের মগজে ধরা দেয় না। একবার এমন অভিজ্ঞতা লাভ করলে তাদের মনে কী প্রতিক্রিয়া হয়, তা জানতে ইচ্ছে করে। নগরবাসীদের প্রতি নিশ্চয়ই ঘৃণার উদ্রেক হয়। মানুষকে তারা ভীষণ বিপজ্জনক বলে ভাবতে শুরু করে। আবদুল মোমেনের প্রতিক্রিয়া আমাদের জানা হবে না। কারণ তার অজ্ঞান অবস্থার অবসান ঘটেনি। গত সপ্তাহে বিদেশগামী নিকটজনকে বিদায় দিতে ঢাকায় এসেছিলেন কিশোরগঞ্জের আবদুল মোমেন (৪৫)। সঙ্গে ছিল ভ্রাতুষ্পুত্র। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের সামনে ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে ডাব কিনে খান। এরপরই রাস্তার ওপর ঢলে পড়েন তিনি। অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর মোমেন মারা যান। ডাবের পানি পান করানোর মাধ্যমে সংজ্ঞাহীন করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঢাকায় ইদানীং ঘটছে। মোমেনের সঙ্গে লোক ছিল বলে তার কিছু কেড়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেনি। অবশ্য সবচেয়ে মূল্যবান প্রাণখানিই তার কেড়ে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটার পর ডাববিক্রেতা কিংবা ওই চক্রের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এমন খবর জানতে পারিনি। প্রশ্ন হচ্ছে ডাব বিক্রেতাটি কি ছদ্মবেশী অজ্ঞানপার্টির সদস্য? নাকি অজ্ঞানপার্টিদের সহায়তা করে থাকে সে সুযোগ পেলে? যদি সে সত্যিই ডাব বিক্রেতা হয়ে থাকে, তাহলে এটা বুঝতে অসুবিধে হয় না যে অজ্ঞান পার্টি টাকার লোভ দেখিয়ে হোক বা প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে হোক, বিক্রেতাটিকে প্রভাবিত করতে পেরেছে। রাজধানীতে বিচিত্র উপায়ে মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। এর ভেতর পেশাদার খুনিও রয়েছে। কথা হলো পেশাদার খুনির তুলনায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের অপরাধ লঘু কিনা। একে বরং ছিনতাইয়ের আরেক রূপ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। অস্ত্র ঠেকিয়ে বা আহত করে, কিংবা চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে বা মলম মাখিয়ে পকেট গড়ের মাঠ করে দেয়ার তুলনায় যাত্রীকে ঘুমের দেশে পাঠিয়ে টাকা এবং মালসামান লোপাট করার অপকর্মটিকে কিছুটা ‘শান্তিপূর্ণ’ বলে মনে হতে পারে চূড়ান্ত বিচারে। দুটোতেই অর্থ নাশ, তবে একটিতে রক্তপাতের শঙ্কা থাকে। অপরটি বিনা রক্তপাতে। অবশ্য প্রাণ সংহারের ঘটনা ঘটার পর ওই ‘শান্তি প্রক্রিয়া’ হয়ে উঠেছে চরম ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। পাশাপাশি এমন সন্দেহও মনে উঁকি দিচ্ছে যে, সংবাদটি পড়ার পর বহু মানুষই রাস্তা থেকে ডাব কিনে খাওয়ার আগে শতবার ভাববেন। এতে নিরীহ ডাব বিক্রেতাদের ব্যবসাও যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল! রাজধানীর অজ্ঞান পার্টিদের ‘জ্ঞান দান’ করা কি খুবই কঠিন? আমাদের পুলিশ ও র‌্যাব ভাইয়েরা চাইলে কী না পারেন। এই লেখার মাধ্যমে তাদের হাত ধরে অনুরোধ জানানোর কাজটিই করতে চাইছি। নিষ্ঠুর ঢাকায় এসে নির্দোষ ডাবের পানি খেয়ে আর কোন নিরীহ মোমেনের যেন প্রাণ না যায়। সদ্যমৃতের তালিকায়... শুক্রবার জুমার নামাজের আজান শোনা যাচ্ছে। মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকার ন্যাম ভবনের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন নর্দমার পাশ থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারে ব্যস্ত পুলিশ। সদ্য জন্মগ্রহণের চিহ্নসহ লাশটি ছিল একটি কাগজের কার্টনে। শিশুটি পৃথিবীতে কি মৃত হিসেবেই এসেছিল, নাকি জন্মের পর মারা গেছে? মারা গেছে, নাকি মেরে ফেলা হয়েছে! এমন আরও কিছু শ্রাব্য-অশ্রাব্য কথাবার্তা কি খুব অসঙ্গত বলে মনে হবে? কথা বাড়ানোর আগে ঢাকায় অল্পকাল আগে আরেকটি নবজাতক উদ্ধারের প্রসঙ্গে যাওয়া যাক। সে?ই পরিত্যক্ত নবজাতক অবশ্য এক অর্থে ভাগ্যবান। বস্তার ভেতর থেকে বের করে কুকুরের দল শিশুটির ঠোঁট, নাক ও বাম হাতের দুটি আঙুলের ডগা থেকে খানিকটা অংশ খেয়ে ফেললেও মারা যায়নি সে। ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পূর্ব শেওড়াপাড়ার পুরনো বিমানবন্দর-সংলগ্ন রানওয়ে মাঠে চার-পাঁচটি কুকুরের সামনে থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের আন্তরিক শুশ্রƒষায় সেরে উঠেছে শিশুটি, তার নাম রাখা হয়েছে ফাইজা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতকের বিশেষায়িত সেবার কেন্দ্র স্ক্যাবু বা স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিট থেকে সে রবিবার গেল আজিমপুরে তার নতুন ঠিকানা সমাজসেবা অধিদফতরের ‘ছোটমনি নিবাসে’। কুকুরের খাদ্য হতে হতে বেঁচে যাওয়া ফাইজা বেঁচে গেছে মানুষের সহজাত অপত্য স্নেহের শক্তির কারণে। এখন তাকে ঘিরে অনেক আলো ও সম্ভাবনা। কিন্তু কাগজের কার্টনে মৃত অবস্থায় উদ্ধারকৃত নবজাতকটি চলে গেছে চোখের আড়ালে চিরতরে। ভূমিষ্ঠ শিশু দুটির একজন জীবিত ও অপরজন মৃত বটে। দুটি শিশুর জন্মগ্রহণের নেপথ্যে রয়েছে দু’জোড়া মানব-মানবী। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হোক, তারা হয়েছে জনক-জননী। এবং তারা প্রত্যেকেই তাদের সন্তানের জন্মক্ষণেই পরিত্যাগ করেছে, তার মৃত্যুই চেয়েছে! নিজেদের রক্ষার জন্য নিজ সন্তানের মৃত্যু! কিসের রক্ষা? লোকলজ্জার ভয় থেকে? এই পৃথিবীতে যত প্রজাতির প্রাণী রয়েছে সেসবের মধ্যে একমাত্র মানুষের পক্ষেই সম্ভব সদ্যজাত সন্তানকে মৃত্যুপুরিতে নিক্ষেপ করা। একটি হায়েনা কিংবা একটি কুকুর বা কোন শকুন কি কখনও তার সদ্য জন্মগ্রহণকারী শাবকটিকে ছুড়ে ফেলে! একটি ভিডিও দেখছিলাম- লন্ডনের একটি রাস্তার পাশে নর্দমা সংলগ্ন লোহার জালিঘেরা গর্তে পড়ে গিয়েছিল কয়েকটি হাঁস-ছানা। মা হাঁস সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে একনাগাড়ে ডেকে ডেকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শেষ পর্যন্ত জালি তুলে কয়েক ফুট নিচে নোংরা পানি থেকে হাঁস-ছানাগুলোকে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। সাহায্য করেছে গোটা হাঁস পরিবারকে জলাশয়ে ফিরে যাওয়ায়। ঢাকায় ওই দুই নবজাতককে ফেলে দেয়ার বিষয়টিকে আমরা উপেক্ষা করে যেতে পারি না। এটি স্বার্থপর মানুষের এক অজ্ঞাত মানসিক অবস্থা, তার চূড়ান্ত বিকার। এর চেয়ে মর্মান্তিক আর কী হতে পারে! যে নগরে বা যে সমাজে মানুষ তার সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানকে অস্বীকার ও নোংরা ন্যাকড়ার মতো পরিত্যাগ করতে পারছে, সেই নগর বা সমাজেরও কি কোন দায়ভাগ নেই এতে? কালক্রমে সদ্যমৃতের তালিকায় উঠে যাচ্ছে মানুষের বিবেক, তার মনুষ্যত্ব। একজন নিভৃত সাধক কী গান, কী চিত্রচর্চা, কী লেখালেখি- ঢাকায় না থাকলে এসবে সফলতা আসবে না। এমন একটা ধারণা রয়েছে বহু শিল্পী-সাহিত্যিকের। সফলতা কাকে বলে? ঘন ঘন মিডিয়ায় ডাক পাওয়া, কাগজে ছবি ওঠা এসব কি সফলতার মাপকাঠি? তা না হলে খ্যাতির পিছনেই বা দৌড়াবেন কেন অধিকাংশ ব্যক্তি? অবশ্য যারা সাধক ধরনের সঙ্গীতশিল্পী, তারা অল্প ক’জন শ্রোতা আর শিক্ষার্থী পেলেই সন্তুষ্ট। যা হোক, আজ এমন একজনের কথা বলব যিনি থাকেন দূর মফস্বলে, একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামে। বছরে দুয়েকবার ডাক আসে রেডিও থেকে, মানে বাংলাদেশ বেতার থেকে। কখনও আসা হয়, কখনও আসতে পারেন না। তবে ঢাকার যে ক’জন মানুষ গ্রামে গিয়ে তাকে আবিষ্কার করেছেন, সেই গানপ্রিয় বন্ধুরা যদি ডাকেন, তাহলে সেই ডাক তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না। এবার যেমন জ্বর নিয়েই চলে আসেন আকাশপ্রদীপের বন্ধুদের আমন্ত্রণে। এই শিল্পীর নাম মিজানুর রহমান। থাকেন কোটচাঁদপুরের মহেশপুরে। গান গাইতে বসলে মনেই থাকে না কতক্ষণ গাইছেন। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে সন্ধে- এ যেন স্বাভাবিক ব্যাপার। একজন নিবিষ্ট শ্রোতাও যদি সামনে থাকে তাহলে যতক্ষণ শ্রোতাটি শুনতে চাইবেন, ততক্ষণই তিনি গান শোনাবেন। যে গান তার তোলা নেই, এমন গানের অনুরোধ পেলেও দু’লাইন শোনানোর চেষ্টা করবেন। একেই বলে বুঝি গানের পাগল। জাতশিল্পী মিজানুর রহমান প্রধানত নজরুল সঙ্গীত গেয়ে থাকলেও কমল দাশগুপ্তের সুর করা বিভিন্ন গীতিকবির গান গাইতে বেশি পছন্দ করেন। ‘এখনও ওঠেনি চাঁদ, আধো আলো আধো ছায়াতে/ কাছে এসে প্রিয় হাতখানি রাখো হাতে’, আর জগন্ময় মিত্রের সেই চিঠি-‘তুমি আজ কত দূরে’ এমন মোহাবিষ্ট হয়ে বার বার গাইলেন যে সামনে বসা শ্রোতাদের হৃদয়ের গভীরে নতুন করে গান দুটি মুদ্রিত হয়ে গেল। অজপাড়াগাঁয়ে বসে বাংলার চিরায়ত সঙ্গীত ভাণ্ডার থেকে অজস্র গান নিজ কণ্ঠে তুলে নিয়ে তা আজকের শ্রোতার শ্রুতিতে পৌঁছে দেয়া নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই যে ঢাকায় এসে প্রায় ষাটোর্ধ তরুণ বেশ খানিকটা জীবনীশক্তি এবং নতুন করে আরও কিছু গান কণ্ঠে ধারণ করার প্রেরণা নিয়ে ফিরে গেলেন, তা আমাদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে হয়। শব্দ, ছবি এবং সুর প্রতিটি নতুন শীতকাল হচ্ছে সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য নববসন্ত; শীতে চিত্রশালা, নাটকপাড়া জমজমাট থাকে; আয়োজিত হয় অনেক গানের আসর। শীত আসেনি, হেমন্তও শুরু হয়নি। তবু জমে উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর সংস্কৃতি অঙ্গন। ঢাকার সব কয়টি আর্ট গ্যালারিতে চলছে কোন না কোন চিত্র প্রদর্শনী। জাতীয় জাদুঘরে শুরু হয়েছে সম্প্রতি প্রয়াত ভাস্কর নভেরার ভাস্কর্যের প্রদর্শনী। প্রদর্শিত কয়েকটি ভাস্কর্য জাদুঘরের সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে সংরক্ষিত ছিল আগে থেকেই। স্বনন নামের আবৃত্তি সংগঠনটির তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠান হলো। তাতে ঢাকার অনেক আবৃত্তি সংগঠনই পারফর্ম করল। বেশ একটা উৎসব বলা চলে। ওদিকে ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলামের একক বাঁশিবাদন অনুষ্ঠানও হলো শুক্রবার সন্ধ্যায়। প্রচুর দর্শক হয়েছিল অনুষ্ঠানে। এই বাঁশরিয়াকে বলতে পারি ঢাকার চৌরাসিয়া। সব মিলিয়ে বলা যায়- অক্টোবরের প্রথমার্ধ থেকেই শব্দ, ছবি এবং সুরে ভরে উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর সংস্কৃতি জগৎ। ১২ অক্টোবর ২০১৫ [email protected]
×