ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে বেগুন রফতানি শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৩ অক্টোবর ২০১৫

কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে বেগুন রফতানি শুরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বেশ কয়েক বছর পর বেগুন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। গত শনিবার এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর যুক্তরাজ্যে গেছে বেগুনের প্রথম চালান। টাঙ্গাইলের মধুপুরের কুড়াগাছা গ্রামে চুক্তিতে বেগুন চাষে (কন্ট্রাক্ট ফার্মিং) উৎপাদিত ৫০ কেজি বেগুন ছিল ওই চালানে। গত রবিবার কুড়াগাছায় এক অনুষ্ঠানে ডিএইর মহাপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, গত বছর বেগুন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির পর সিদ্ধান্ত হয়েছিল কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ছাড়া কোন বেগুন রফতানি হবে না। এখন কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে রোগ ও পোকামুক্ত বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে। এর রফতানিও শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বেগুনে পোকা পাওয়ার অভিযোগর পর ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে এই খাদ্যপণ্য রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। বেগুন ছাড়া আরও ছয়টি সবজি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেগুলো হলো- এ্যামারেনথাস প্রজাতি (লালশাক ও ডাঁটাশাক), সাইট্রাস প্রজাতি (জারা লেবু ছাড়া অন্যান্য লেবু) এবং ত্রিকোসানথেস প্রজাতি (করলা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও পটল)। এগুলোকে মারাত্মক সমস্যাযুক্ত পণ্য (ক্রিটিক্যাল কমোডিটি) ঘোষণা করেছিল ইইউ। এর পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তিতে চাষ শুরু করার জন্য ‘এগ্রিবিজনেস ফর ট্রেড কমপিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এটিসিপি)’ শুরু হয়। ইউকেএইড, ডিএফআইডি এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) অর্থায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) এবং রফতানিকারক সমিতি এটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ডিএই। প্রাথমিকভাবে গত ১৪ আগস্ট টাঙ্গাইলের মধুপুরের কুড়াগাছা গ্রামে সাত একর জমিতে চুক্তিতে বেগুন চাষ শুরু হয়। ১২ জন কৃষক তাদের জমি একত্র করে এই প্রকল্প শুরু করেন। সেখানেই উৎপাদিত হচ্ছে পোকামুক্ত বেগুন। চাষীদের কাছ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে এসব বেগুন কিনছেন রফতানিকারকরা। প্রকল্প পরিচালক মনজুরুল ইসলাম বলেন, চারটি পোকার (সাদা পোকা, ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা) আক্রমণের কারণে বেগুনের রফতানি বন্ধ ছিল। বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে ইইউ বলে আসছে গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস (মানসম্মতভাবে চাষাবাদ) না করলে তারা বাংলাদেশ থেকে সবজি নেবে না। তাদের শর্ত পূরণ করতেই আমরা কন্ট্রাক্ট ফার্মিং শুরু করেছি। উৎপাদিত বেগুন রবিবার থেকে রফতানি শুরু হয়েছে। এটা আমাদের সাফল্য। আগামীতে অন্যান্য সবজিও এভাবে উৎপাদন করা হবে। বেগুন রফতানির বন্ধ দুয়ার খুলে যাওয়ায় খুশি রফতানিকারকরাও। সবজি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস এলাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইকতাদুল হক বলেন, আমাদের সবজি ও ফলের রফতানি ক্রমেই কমে যাচ্ছে। বেগুন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় রফতানি কিছুটা বাড়বে। আরও কিছু সবজিতে নিষেধাজ্ঞা আছে। তা প্রত্যাহার করা হলে রফতানি আরও বাড়বে।
×