ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্কটিশ অর্থনীতিবিদ এ্যাঙ্গাস ডিটনের নোবেল জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৩ অক্টোবর ২০১৫

স্কটিশ অর্থনীতিবিদ এ্যাঙ্গাস ডিটনের নোবেল জয়

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভোগ, দারিদ্র্য এবং জনকল্যাণ নিয়ে গবেষণার জন্য এবার অর্থনীতিতে নোবেল জিতলেন স্কটিশ অর্থনীতিবিদ এ্যাঙ্গাস ডিটন। সোমবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স এবার অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী হিসেবে ডিটনের নাম ঘোষণা করে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যাপনা করছেন তিনি। তার ব্রিটিশ এবং মার্কিন নাগরিকত্ব রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই সম্ভাব্য নোবেল জয়ীর তালিকায় নাম ছিল ডিটনের। খবর এএফপি, বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের। ডিটনকে পুরস্কৃত করে সুইডিশ একাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয় ‘ভোগ, দারিদ্র্য ও জনকল্যাণ বিষয়ে গবেষণার জন্য তাঁকে এ সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। একাডেমির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, তার গবেষণা ব্যাষ্টিক, সামষ্টিক এবং উন্নয়ন অর্থনীতির মধ্যে একটা সংযোগ ঘটিয়েছে। পাশাপাশি তার অর্থনীতি কৌশল জনকল্যাণের জন্য সহায়ক হয়েছে এবং দারিদ্র্য কমিয়েছে। বিশেষ করে তার গবেষণার বিষয়বস্তু হলো জনস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন। নোবেল ছাড়াও অর্থনীতিতে গবেষণার জন্য আরও বহু পুরস্কার পেয়েছেন এ্যাঙ্গাস ডিটন। ১৯৪৫ সালে এডিনবরায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিটন বলেন, আমি মনে করি বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য কমানো সম্ভব। আপনারা দেখবেন গত ২০-৩০ বছর বিশ্ব থেকে উল্লেখযোগ্য হারে দরিদ্র লোক কমেছে। আমার আশা এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে বলা হয়েছে পৃথিবীতে এখনও ৭০ কোটি হতদরিদ্র লোক রয়েছে। এই হিসেবে বলা যায় আমরা এখনও বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারিনি। এ সময় বর্তমান সময়ের শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে কথা বলেন তিনি। এর কারণ হিসেবে ডিটন বলেন, শত শত বছর ধরে বিশ্বে অসম উন্নয়নর ফলেই এই শরণার্থী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর একপ্রান্তে উন্নয়ন হয়েছে দ্রুত গতিতে কিন্তু অপর অংশ পড়ে রয়েছে অন্ধকারে। তার যুক্তি হলো গরির দেশগুলো দারিদ্র্য দূর করেই অল্প সময়ের মধ্যে এই শরণার্থী সঙ্কট মেটানো যায়। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি বলছে, ডিটনের গবেষণা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই নীতিনির্ধারণী পরিকল্পনা নিতে প্রভাবকের ভূমিকায় ছিল। যেমন, খাদ্যে অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন করের কারণে সমাজের কারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তা নিয়ে তিনি ভেবেছেন। আবার পথও দেখিয়েছেন। কল্যাণ বয়ে আনার পাশাপাশি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে অর্থনৈতিক কৌশল প্রণয়ন করতে হলে আমাদের প্রথমই ধারণায় নিতে হয় ব্যক্তির রুচির বিষয়টি। আর ডিটন ভোক্তার রুচির বিশ্লেষণ তা বোধগম্য হওয়ার মতো করে উপস্থাপন করেছেন। উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশের মানুষের ব্যয়ের তথ্য নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে তাদের জীবনমান ও দারিদ্র্য নিরূপণেও ডিটনের উল্লেখযোগ্য গবেষণা রয়েছে। গত বছর এ পুরস্কার জিতেছিলেন ফরাসী অর্থনীতিবিদ জ্যঁ তিরোল। বাজার অর্থনীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতবাদের জন্য তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়েছিল। রীতি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার হাতে নোবেল পুরস্কারের ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার তুলে দেয়া হবে।
×