ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মন্ত্রীদের জন্য আবাসিক ভবনসহ ৭ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

মন্ত্রীদের জন্য আবাসিক ভবনসহ ৭ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মন্ত্রীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণসহ ৭ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারী অর্থায়ন ২ হাজার ১৫৩ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৫০৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা দূর করতে এক হাজার চৌষট্টিটি ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকা শহরে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯১০ জন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। কিন্তু ১৩ হাজার ৫২ জনের (৮ শতাংশ) জন্য আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকার ২০১৯ সালের মধ্যে ৪০ ভাগ ফ্ল্যাট নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর মিরপুরে ১০ একর খাস জমিতে ১০টি বিশতালা আবাসিক ভবন নির্মাণ করবে সরকার। ১৫০০ ও ১২৫০ বর্গফুট এ দু’ধরনের ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৬৪টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে। গণপূর্ত ও স্থাপত্য অধিদফতর ২০১৯ সালের জুন নাগাদ এ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, গুচ্ছগ্রাম-২ (ক্লাইমেট ভিকটিম রিহ্যাবিলিটেশন) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ঢাকার মিরপুরে ৬ নং সেকশনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১ হাজার ৬৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ, এর ব্যয় ৮৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯৯ ব্রিগেড স্থাপন প্রকল্প, ব্যয় ৭৫০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, ব্যয় ৬০২ কোটি ৩২ লাখ টাকা, খুলনা (রূপসা)- শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক উন্নয়ন, এর ব্যয় ৪৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং নাজির হাট-মাইজভান্ডার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রকল্পের বিস্তারিত হচ্ছে, গত কয়েক বছরে মন্ত্রী পরিষদের আকার অনেক বড় হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রীপাড়ায় আবাসন সুবিধা বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এর ওপর বিগত সময়ে সামরিক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত কিছু বাড়ি বা ফ্ল্যাট উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ফলে মন্ত্রীদের জন্য বাড়ির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এজন্য ২৮টি ফ্ল্যাট বিলাসবহুল নির্মাণ নির্মাণ করা হবে। এটি নির্মাণে ১০৪ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করা হবে। সরকারী বাসা সংকট সমাধানে বেইলি রোডে মন্ত্রীদের জন্য প্রস্তাবিত ভবনের নাম হবে মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্ট -৩। ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় সরকারী কর্মকর্তাদের তুলনায় একটু বেশি ব্যয় হবে। এসব ফ্ল্যাটের আকার সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের। এছাড়া সরকারী কর্মকর্তাদের আবাসন সংকটও দূর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য একটি প্রকল্পের আওতায় আওতায় ১ হাজার ৬৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। রাজধানীর মিরপুরের ছয় নম্বর সেকশনে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৫২ কোটি টাকা। সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিতব্য ফ্ল্যাটের আকার হবে সাড়ে বারো শ’ থেকে দেড় হাজার বর্গফুট। ১৫টি বহুতল ভবনে এসব আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে, এগুলোর কোন কোনটির উচ্চতা ২০ তলা পর্যন্ত। ঢাকা শহরে অবস্থানরত সাড়ে তিন লাখের বেশি সরকারী চাকরিজীবীর জন্য প্রকল্পগুলো যথেষ্ট নয়। কারণ রাজধানীতে বসবাসকারী ১৫ হাজার সরকারী চাকরিজীবীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ হলে আরও প্রায় এক হাজার ৬০০ জনের আবাসনের ব্যবস্থ্যা হবে; যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
×