ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নেপথ্যে ফেসবুক কমেন্ট

নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে যুবক অপহরণ, শহরে আতঙ্ক ॥ পরে মুক্ত

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে যুবক অপহরণ, শহরে আতঙ্ক ॥ পরে মুক্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১৩ অক্টোবর ॥ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া শহীদ মিনারে পুলিশ এবং শত শত মানুষের সামনে থেকে প্রকাশ্যে ফাহিম (২৫) নামে এক যুবককে মারধর করে অপহরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে একটি কালো রংয়ের হাইএস মাইক্রোবাসযোগে পুলিশের সামনে অপহরণের ওই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ছিল নির্বিকার। এ সময় ওই যুবককে উদ্ধারের অনুরোধ করলেও কর্তব্যরত পুলিশের এসআই আলমগীর হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধারে কোন আগ্রহ দেখায়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ১২-১৫ জন যুবক ফাহিমকে নিয়ে শহীদ মিনার এলাকা ত্যাগ করে। শত শত মানুষের সামনে থেকে ওই যুবককে এভাবে অপহরণের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সদর ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের বিভিন্ন টিম অপহৃত ফাহিমকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। একপর্যায়ে বিকেলে পুলিশের কাছে খবর আসে অপহৃত ফাহিমকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। অপহৃত ফাহিম জামতলার আমজাদ হোসেন খানের ছেলে। প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে থেকে যুবক অপহরণের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে শহরময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চাষাঢ়া শহীদ মিনারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে ১২-১৫ জন যুবক হঠাৎ করেই এক যুবককে ঘিরে ধরে। পরে তাকে টেনে হিঁচড়ে শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশে বালুর মাঠের দিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবারও ওই যুবককে নিয়ে শহীদ মিনারে ফিরে আসে অপহরণকারীরা। ওই সময় একজন ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন তার নাম ফাহিম। ঘটনার সময় চাষাঢ়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে আর্মড পুলিশের ৭-৮ জন সদস্য শহীদ মিনারে দায়িত্ব পালন করছিল। ওই সময় শহীদ মিনারে একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন মাঠকর্মীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঐ কর্মকর্তাকে ফাহিমকে বাঁচাতে অনুরোধ করলেও সারা দেননি বলে জানা গেছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের ইসদাইরের অক্টো অফিসের বিপরীত দিকে অবস্থিত একটি টাওয়ারের মালিক আবুল কাশেমের ছেলে আনন্দর নেতৃত্বে ফাহিমকে অপহরণ করা হয়। কারণ হিসেবে জানা গেছে, আনন্দর চাচা আবদুস সালামের মেয়ে সানজিদার ফেসবুকে ফাহিম কিছু কমেন্ট করেছে। ঘটনাটি সানজিদা তার বাবা আবদুস সালামকে জানালে তিনি তার বড় ভাই আবুল কাশেমের ছেলে আনন্দকে বিষয়টি দেখতে বলেন। সেই কমেন্টকে কেন্দ্র করেই ঘটনা। বেশকিছু দিন ধরে আনন্দ ফাহিমকে ধরার চেষ্টা করছিল। দুপুরে তাকে শহীদ মিনারে পেয়ে তাকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে সরকারী তোলারাম কলেজে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফাহিমকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় সাংবাদিকদের কাছে ফাহিম জানান, তাকে শহীদ মিনার থেকে অপহরণের পর একটি মাইক্রোবাসে তুলে নগরের জামতলায় হীরা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মারধরের পর অক্টো অফিসের সামনে নিয়ে গিয়ে সেখানে সাদা কাগজে সই নেয়া হয়। মারধর করে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
×