ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুুঁজিবাজারে ৭৬ ভাগ কোম্পানির দর কমেছে

প্রকাশিত: ০০:০১, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

পুুঁজিবাজারে ৭৬ ভাগ কোম্পানির দর কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই কার্যদিবসে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা শেষে আবারো পতনের ধারায় ফিরে এসেছে দেশের পুঁজিবাজার। একইসঙ্গে দুই স্টক একচেঞ্জেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এদিন প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ৭৬ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেযারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার কারণে বাজারে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাজার পরিস্থিতি সব সময় বাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বাইরের ঘটনাও বাজারকে প্রভাবিত করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও সামাজিক অস্থিরতার বিষয়গুলোও পুঁজিবাজারের পতনের কারণ হতে পরে। এছাড়া কিছুটা মূল্য সংশোধনের প্রভাবও বাজারে পড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন। তবে বাজারে বড় ধরনের পতন হলেও এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান এ বিশ্লেষক। দেশের শীর্ষ স্থানীয় মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, বাজারের এমন আচরণের কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। কয়েকটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন খারাপ আসার কারণে বাজারে তার প্রভাব পড়তে পরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাজার বিশ্লেষক বলেন, লাফার্জ সুরমা সিমেন্টসহ বড় মূলধনী কিছু কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বাজারে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ কারণে সার্বিক বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বুধবার ডিএসইতে ৩০৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিনের চেয়ে ১৪০ কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কম লেনদেন। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৯ কোটি টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩১৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টির, কমেছে ২৪১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির শেয়ার দর। সকালে নেতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরুর পরে দেশের পুঁজিবাজারে দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পতনের ধারা তীব্র হয়। দিনশেষে ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৬৩ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১২৭ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৮৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হলো - বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি, সাইফ পাওয়ারটেক, ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশ লি: ও ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : অলটেক্স, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, লিব্রা ইনফিউশন, আরামিট, ইবিএলএনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, ফার কেমিক্যাল, আইপিডিসি, আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড, রূপালী ইন্স্যুরেন্স ও ৮ম আইসিবি। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ৭ম আইসিবি, সুহৃদ ইন্ড্রাস্টিজ, ইমাম বাটন, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, ফার ইস্ট নিটিং, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, আরামিট সিমেন্ট, জিপিএইচ ইস্পাত ও বিডি ওয়েল্ডিং। বুধবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক ১৯৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৩৭ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩০টির, কমেছে ১৯৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : সাইফ পাওয়ার টেক, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, আমান ফিড, বে´িমকো ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ইউনাইটেড এয়ার ও গ্রামীন ফোন।
×