গত মাসে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের এক শীতলতম স্থান বিজ্ঞানীদের ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ সেখানে গত আট মাস ধরে রেকর্ড ঠা-া তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে, যা বিশ্বের অন্যান্য স্থানের বিপরীত। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এখন রেকর্ড উষ্ণ তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোন ঐকমত্য হয়নি, তবে বিজ্ঞানীদের অনেকের ধারণা, এই নমুনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘ আশঙ্কার লক্ষণ হতে পারে। আর এটি হলোÑ মহাসাগরের ওপরের পানির সঙ্গে নতুন পানি যোগ হয়ে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের স্্েরাতের গতি কমে যাওয়া।
গ্রীনল্যান্ডের বরফখ- দ্রুত গলে যাওয়াই এর কারণ হতে পারে বলে গবেষকরা ধারণা করছেন। এই নতুন পানির প্রবাহ ওপরের ঠা-া পানির ঘনত্ব কমিয়ে মহাসাগরের বিপরীতমুখী স্রোত দুর্বল করে দিতে পারে। শীতল ও লবণাক্ত পানি ঘন হয়। শীতল ও লবণাক্ত পানি যদি উত্তর আটলান্টিকে মিশে না যায় এবং ঘুরে গিয়ে দক্ষিণে গভীর এ্যান্টার্কটিকার দিকে ফিরে না যায় তাহলে ওপরের উষ্ণ পানি তাদের জায়গা নিতে উত্তর দিকে প্রবাহিত হবে না। ফলে উত্তর গোলার্ধের জলবায়ুর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে। বৈজ্ঞানিক জার্নাল নেচার জিওসায়েন্সে সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর দূরবর্তী অতীতে এমন ঘটেছে এবং তা একবার নয় একাধিক বার ঘটেছে। গত ৭০ বছরে মহাসাগরের স্রোত অনেকবারই পরিবর্তিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ইতিহাসের তথাকথিত বরফযুগ সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। এই যুগে তাপমাত্রা একইরকম ছিল না। তারা গবেষণায় স্ট্যাডিয়াল (বরফ যুগের শীতল তাপমাত্রার সময়কাল) ও ইন্টার স্ট্যাডিয়ালের (বরফ যুগের তুলনামূলক কম ঠা-া সময়কাল) মধ্যকার রদবদল দেখেছেন। সবচেয়ে প্রচলিত তত্ত্ব হলো, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে বরফের বড় প্রবাহের কারণে এর উপরিতলে নতুন পানি যোগ হয়। এটি আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোত দুর্বল এবং উত্তরমুখী তাপ প্রবাহ হ্রাস করে দিতে পারে এবং এর ফলে একটি ঠা-া সময়কাল সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের গবেষকদের সহায়তায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের জুলিয়া গোটচাকের নেতৃত্বে করা গবেষণায় আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোতের পরিবর্তনের সঙ্গে স্ট্যাডিয়াল ও ইন্টার স্ট্যাডিয়ালের পরিবর্তনের নিবিড় সম্পর্কের দৃঢ় প্রমাণ পাওয়া গেছে। -ওয়াশিংটন পোস্ট
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: