ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে এমপি লিটন উত্তরা থেকে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১৫ অক্টোবর ২০১৫

অবশেষে এমপি লিটন উত্তরা থেকে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিশু সৌরভকে গুলি করে আহত করার মামলার আসামি গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে (লিটনের আত্মীয়ের বাসা) তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পরে রাত ১১টার দিকে লিটনকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। আজ সকালে তাকে গাইবান্ধার আদালতে নেয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সংসদ সদস্য লিটনকে গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম। ডিবি পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহফুজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, এমপি লিটনকে উত্তরা থেকে গ্রেফতারের পর ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। এর আগে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের বিষয়ে ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী’ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানন। চলতি মাসের শুরুতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক শিশুকে গুলি করার অভিযোগে মামলার পর আত্মগোপনে ছিলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলাও হয়। দুই মামলায় জামিন চাইতে গত সোমবার হাইকোর্টে হাজির হয়ে প্রকাশ্যে আসেন লিটন। কিন্তু জামিন আবেদন খারিজ করে হাইকোর্ট তাকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশটি বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিত করেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি। বুধবার দুপুরে ওই আদেশের পর এই সংসদ সদস্যকে গ্রেফতারে আইনগত কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। এরপর রাতেই গ্রেফতার হলেন এই জনপ্রতিনিধি। আইনী সুযোগ নিয়ে লিটনকে গ্রেফতার করার বিষয়ে অস্পষ্টতা কাটাতে চেম্বার আদালতে এই আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ২ অক্টোবর গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য লিটনের ছোড়া গুলিতে শাহাদাত হোসেন সৌরভ নামে নয় বছর বয়সী এক শিশু আহত হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। আহত সৌরভের বাবা সাজু মিয়া ঘটনার পরদিন সাংসদ লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন হাফিজার রহমান নামে সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর শাহাবাজ গ্রামের এক বাসিন্দা। ওই দুই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে লিটন হাইকোর্টে আবেদন করলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর অবকাশকালীন বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে এমপি লিটনকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে গাইবান্ধার মুখ্য বিচারকি হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই আদেশের পর সাংসদ লিটনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম দাবি করেন, আদালত যেহেতু আত্মসমর্পণের তারিখ ঠিক করে দিয়েছে, সেহেতু ১৮ অক্টোবরের আগে লিটনকে গ্রেফতারের সুযোগ নেই। অন্যদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাইকোর্টের আদেশে পুলিশের প্রতি ‘গ্রেফতার না করার’ কোন নির্দেশনা নেই। তারপরও পুলিশ প্রশাসন যাতে ‘দ্বিধাগ্রস্ত না হয়’, সে জন্য সুপ্রীমকোর্টে যাবেন বলে তখনই জানিয়ে দেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
×