ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ॥ রিপন

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৭ অক্টোবর ২০১৫

বিএনপির বিরুদ্ধে  অপপ্রচার চালানো  হচ্ছে ॥ রিপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। অপপ্রচার ও হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিপন বলেন, আমরা মনে করি তারা এসব অপপ্রচার করে কোন রাজনৈতিক ফায়দা লাভ করতে পারবে না। তবে রাজনৈতিক পরিবেশটাকে কলুষিত করতে পারবেন। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলেছি, বিএনপি গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করে। জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির সঙ্গে বিএনপির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া চিকিৎসার উদ্দেশে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সরকারী দলের নেতারা কতটা অমানবিক হলে তার প্রতি মনগড়া-আজগুবি মন্তব্য করতে পারেন, যা খুবই দুঃখজনক। দেশের মানুষ এসব অপরাজনীতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করার’ ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছেন। সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে এ ধরনের হাস্যকর অভিযোগ রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য মানুষ পছন্দ করে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের কাছে এই বক্তব্য কতটা শালীন মনে হয় সেই প্রশ্ন রেখে দিলাম। রিপন বলেন, রাজনীতিতে হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানি মানুষ পছন্দ করে না। এর জন্য মানুষের রাজনীতির প্রতি অনীহা তৈরি হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রাজনীতিতে আসতে নিরুৎসাহিত করে। ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য বিএনপি সরকার কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাসিয়ার ছড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন তার সমালোচনা করে রিপন বলেন, এই বক্তব্য সত্যের অপলাপ। চুক্তিটি ছিল দ্বিপাক্ষিক। বাংলাদেশ আগেই তা বাস্তবায়ন করেছিল। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় ভারত তা কখনই বাস্তবায়ন করতে চায়নি। দীর্ঘদিন পরে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে আইন পাস করে এটা বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকার বার বার ভারতের সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছিল, চুক্তিটি বাস্তবায়ন করার জন্য। পরে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এই চুক্তি বাস্তবায়নসহ দুই দেশের মধ্যকার সকল অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের জন্য বার বার তাগিদ দিয়েছিলেন। দাসিয়ার ছড়ায় একটি ইউনিয়নকে মুজিব-ইন্দিরা নামকরণে সরকারের সমালোচনা করে রিপন বলেন, এটা বাস্তবভিত্তিক নয়। কারণ এই চুক্তি বাস্তবায়নে ইন্দিরা গান্ধীর কোন ভূমিকা নেই। বরং এখানে মোদির নাম যুক্ত করলে তা বাস্তবভিত্তিক হতো। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, কৃষক দল নেতা তকদির হোসেন জসিম প্রমুখ। দেশে ক্রান্তিকাল চলছে- এমাজউদ্দিন ॥ দেশে ক্রান্তিকাল চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও শতনাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা পরিষদ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এমাজউদ্দিন বলেন, দেশে এখন সঙ্কট ইতিহাস বিকৃতির সঙ্কট চলছে। তবে তরুণ প্রজন্মের কর্মকা- যদি দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে যায়, তবে সঙ্কট কেটে যাবে। তিনি বলেন, ইতিহাস সেকেন্ডারি সোর্স বা ওয়াল সোর্স থেকে লেখা হয়। তাই মুক্তিযুদ্ধের সময়কার যারা বেঁচে আছেন, তাদের সঙ্গে যোগযোগ রক্ষা করা দরকার। এজন্যই এমন এক সংগঠন করতে চাই যারা প্রকৃত তথ্য বের করে আনবে। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার জন্য সবকিছু করছে। কিন্তু আইন দিয়ে ইতিহাস বদলানো যাবে না। জিয়াউর রহমানের নাম বিভিন্ন জায়গা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এখন যেসব সরকারী লাইব্রেরিতে বিভিন্ন বইয়ে জিয়ার নাম রয়েছে, সেগুলোও খুঁজে বের করে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু জোর জবরদস্তি করে মানুষের মন থেকে কারও নাম মুছে ফেলা যায় না। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ ঢাবির সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি আব্দুল হাই শিকদার, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু সাঈদ, আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব অমর চন্দ্র মিস্ত্রী প্রমুখ।
×