ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সন্তানের আশায় নওগাঁয় বট পাকুড়ের বিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৭ অক্টোবর ২০১৫

সন্তানের আশায় নওগাঁয় বট পাকুড়ের বিয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৬ অক্টোবর ॥ নওগাঁর মান্দায় সন্তান লাভের আশায় স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ‘বট-পাকুড়’ বৃক্ষের বেশ ধুমধাম করে সনাতন ধর্মের বিধান মতে বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর-কনে বৃক্ষ হলেও প্রায় ৪শ’ আমন্ত্রিত অতিথি নিরামিষভোজে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের বিলদুবলা গ্রামে অর্জুন চন্দ্র ম-লের (৪৫) বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে এই ‘বট-পাকুড়ের’ বিয়ের ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, অর্জুন ম-লের বড় মেয়ে বিউটি রাণী স্বপ্নের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, তারা দুইবোন যদি গাছের বিয়ের আয়োজন করেন, তাহলে আবশ্যই তারা সন্তানের মা হতে পারবেন। স্বপ্নের এই কথা পিতা অর্জুন চন্দ্র ম-লকে জানালে, মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি নিজ বাড়ির উঠানে গোবিন্দ মন্দিরের সামনে বট-পাকুড় গাছের বিয়ের আয়োজন করেন। অর্জুনের প্রথম মেয়ে বিউটি রাণীর (২৭) বিয়ে হয় ১১ বছর আগে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ঝাড়িরা গ্রামের সঞ্জয় চন্দ্রের এবং দ্বিতীয় মেয়ে ঝর্ণা রাণীর (২৩) বিয়ে হয় ৮ বছর আগে মান্দা উপজেলার রায়পুর গ্রামের চপল চন্দ্রের সঙ্গে। উভয় দম্পতি বিভিন্ন ডাক্তার এবং কবিরাজের অনেক চিকিৎসার পরেও এখন পর্যন্ত তারা মা হতে পারেননি। মূলত এ কারণেই উভয় জামাই-মেয়ের মঙ্গলার্থে এবং সন্তান লাভের আশায় এই বিয়ের আয়োজন করা হয় বলে অর্জুন জানান। তিনি আরও জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয়সহ প্রায় ৪শ’ লোককে এদিন দুপুরে নিরামিষ খাবারের নিমন্ত্রণ করা হয়। উক্ত বিয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরোহিত মহাদেবপুর উপজেলার পবাতৈর গ্রামের উজ্জল চন্দ্র আচার্য্য বলেন, সনাতন ধর্মের বিধি মোতাবেক এ বিয়ের যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। আর এ বিয়ে মূলত বছরে একবার এবং আজকের দিনে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি সদস্য হবিবর রহমান জানান, এই গ্রামে দ্বিতীয়বারের মতো এরকম বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো। বিয়ে উপলক্ষে বাদ্যকরদের বাজনা সমন্বয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ত অনুভূতি ছিল লক্ষণীয়।
×