ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় চাকরি করছে, পড়ছে তাদের নামেও

বরিশালে মৃত ও প্রবাসীরা তুলছে ভিজিডির চাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ অক্টোবর ২০১৫

বরিশালে মৃত ও প্রবাসীরা তুলছে ভিজিডির চাল

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ তিন বছর পূর্বে মারা গেছেন বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ। তারপরও তিনি পেয়েছেন সরকারী বরাদ্দের ভিজিডির চাল। তবে তার নামের উত্তোলনকৃত চাল পরিবারের কারও ভাগ্যে জোটেনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য শামসুল কবির ফরহাদ মৃত আজিজের নামের চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই ওয়ার্ডের হোসেন ও লিটন দেবনাথ মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তাদের নামেও উত্তোলন করা হয়েছে ১০ কেজি করে ভিজিডির চাল। শুধু মৃত মানুষের নামেই নয়, একই ভাবে এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষক, ছাত্র, উর্ধতন সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা ও প্রবাসী চিকিৎসকের নাম তালিকায় উঠিয়ে চাল উত্তোলনের পর তা আত্মসাত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এনআরবিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান কবির হোসেন, বিভাগীয় কমিশনারের সিএ এনায়েত হোসেন স্বপনের নামেও উত্তোলন করা হয়েছে ভিজিডির চাল। মালয়েশিয়ায় চাকরি করেন জাকির হোসেন, সৌদিতে আছেন অপর জাকির হোসেন ও খলিলুর রহমান। তাদের নামেও ভিজিডির চাল উত্তোলন করা হয়েছে। ব্যবসায়ী কামাল হাওলাদার, স্বাস্থ্য সহকারী জসিমউদ্দিন হাওলাদার, ঢাকায় চাকরিরত জুলফিকার আলী, সিরাজুল ইসলাম, হানিফ সরদার ও আবু বক্কর, চাকরিরত বাবুল হাওলাদার, মিজানুর রহমান, মাকলেছুর রহমান, নওশাদ আলী, জাহিদুর রহমান, নাজমুল কবির, আবুল বয়াতী, মিজানুর রহমান, আনোয়ার প্যাদা ও আবু তালেব, ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার মনজুরুল হক, ব্যবসায়ী বজলু আকন, রিয়াজ মোল্লা, সুলতান মাহমুদ তালুকদার, ইউনুস মুন্সি, মোজাম্মেল হক, উত্তম কুমার, সাইফুল ইসলাম, আল-আমিন, শাখাওয়াত হোসেন ও সাইদুর রহমান, ঢাকা কলেজের ছাত্র ওবায়দুল হক, ইটভাঁটির মালিক রফিকুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শহিদুল ইসলামের নামেও ভিজিডির চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করছেন ইউপি সদস্য ফরহাদ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই সকল নামীদামী ব্যক্তির নামে চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করে আসছেন। বিভিন্ন সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউপি সদস্য ফরহাদ। তাদের হয়রানি করা হয় বলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য শামসুল কবির ফরহাদ জানান, আমি দীর্ঘ ১৩ বছর এই ওয়ার্ডের মেম্বর। ১৩ বছরে ১৩ ছটাক চালও আত্মসাত করিনি। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা আমার কাছে এক শ’ কার্ড চেয়েছিল, না দেয়ায় অভিযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান মুন্না বলেন, ইউনিয়নের বর্তমান প্রশাসক আমি। কোন অভিযোগ থাকলে সবার আগে আমার কাছে আসার কথা। কিন্তু আমার কাছে এই মর্মে কোন লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ আসেনি।
×