ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবুধাবিতে বাজে বোলিংয়ের রেকর্ড রশিদের

কুক ও মালিকের টেস্ট

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ অক্টোবর ২০১৫

কুক ও মালিকের টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রোমাঞ্চকর ড্রয়ে শেষ হওয়া আবুধাবি টেস্ট বেশ কিছু রেকর্ডের সাক্ষী হয়ে থাকল। পাঁচ বছর পর ফিরে পাকিস্তান অলরাউন্ডার শোয়েব মালিকের ডাবল সেঞ্চুরি, দ্বিতীয় ইনিংসে সেই তিনিই আউট হন ‘শূন্য’ রানেÑ টেস্ট ইতিহাসে এমন ঘটনার মাত্র ষষ্ঠ উদাহরণ এটি। ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ের অনন্য নজির স্থাপন করেন এ্যালিস্টার কুক। ২৬৩ রান করতে ৮৩৬ মিনিট ব্যাট করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক! অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ‘বাজে’ বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে ‘বিরল’ এক রেকর্ড গড়েন ইংলিশ লেগস্পিনার আদিল রশিদ। এই টেস্টেই গ্রেট জাভেদ মিয়াঁদাদকে টপকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক বনে যান অভিজ্ঞ ইউনুস খান। মালিক প্রথম ইনিংসে খেলেন ২৪৫ রানের ম্যারাথন ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হন ০ (শূন্য) রানে! এর মধ্য দিয়ে টেস্ট ইতিহাসের মাত্র ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টে ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ ও ‘শূন্য’র স্বাদ পেলেন পাকি-অলরাউন্ডার। মালিকের আগে একই টেস্টে এমন অম্ল মধুর অভিজ্ঞতা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ডাডলি নোর্স, পাকিস্তানের ইমতিয়াজ আহমেদ (১৯৫৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে), ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেইমুর নার্স (১৯৬৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে), ভিভ রিচার্ডস (১৯৮৪ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে) ও রিকিং পন্টিংয়ের (২০০৩ সালে, ভারতের বিপক্ষে)। মালিককে দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট এমন ঘটনার সাক্ষী হলো এক যুগ পর। এত গেল ‘হিরো থেকে জিরো’দের গল্প। এর উল্টোটিও আছে। ‘জিরো থেকে হিরো’র তালিকায় কেবল একজনই। ৮০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকান নোর্স প্রথম ইনিংসে ‘শূন্য’ হাতে ফিরে দ্বিতীয় ইনিংসেই হাঁকিয়েছিলেন ২৩১ রানের দুরন্ত এক ডাবল সেঞ্চুরি! প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের করা ৫২৩ রানের জবাবে ৫৯৮ রান করে লিড নেয় ইংল্যান্ড। যেখানে কুক একাই করেন ২৬৩। এ জন্য ৮৩৬ মিনিট ক্রিজে থাকেন তিনি। যা টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় ধীরগতির ইনিংস! সময়ের হিসেবে দীর্ঘ ১০ ইনিংসের মধ্যে দুবারই রয়েছে কুকের নাম। ২০১১ সালে এজবাস্টনে ৭৭৩ মিনিট ব্যাটিং করেছিলেন ৩০ বছর বয়সী ইংলিশ তারকা। টেস্টে দীর্ঘ ইনিংস খেলার রেকর্ডটি হানিফ মোহাম্মদের দখলে। ১৯৫৮ সালে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৩৭ রানের পথে ৯৭০ মিনিট ক্রিজে ছিলেন সাবেক পাকিস্তানী লিটল মাস্টার। দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্যারি কার্স্টেন (৮৭৮ মিনিট, ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৫ রান), কুকের পরে অর্থাৎ চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে সনাথ জয়সুরিয়া (৭৯৯ মিনিট, ১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩৪০ রান) ও ইংল্যান্ডের স্যার লিওনার্দ হাটন (৭৯৭ মিনিট, ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬৪ রান)। ফেরা যাক আদিল রশিদে। প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য, গড়েন অভিষেকে ‘বাজে’ বোলিংয়ের নতুন রেকর্ড! সেই তিনিই দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। শেষদিনে তার বোলিংই আচমকা জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। দুই ইনিংসের এই উল্টোমুখী যাত্রা রশিদকের জায়গা করে দিয়েছে বিরল রেকর্ডের শীর্ষে। ১৩৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে তিনিই একমাত্র বোলার যিনি অভিষেকে ১শ’র বেশি রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকার পর দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। এর আগে কাছাকাছি গিয়েছিলেন একজনই, তিনি রশিদের স্বদেশী কেন শাটলওয়ার্থ। সাবেক ইংল্যান্ড পেসার ১৯৭০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ৮১ রান দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। অবশ্য অভিষেকে উইকেটশূন্য থাকার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া নবম বোলার রশিদ।
×