স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, মরহুম ডাঃ সিরাজুল ইসলাম বহুমুখী সেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। মানুষের কল্যাণে তিনি একাধিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে গেছেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গেও তার ছিল গভীর সম্পর্ক। সরকারী চাকরি ছেড়ে তিনি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কর্মে মনোযোগ দেন। ডাঃ সিরাজুল ইসলামের প্রতিষ্ঠা করে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকা- সচল ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ও ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম ডাঃ সিরাজুল ইসলাম স্মরণে রবিবার বিএমএ মিলনায়তনে স্মরণসভায় শিল্পমন্ত্রী এ কথা বলেন। ডাঃ জামাল উদ্দিন খলিফার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। প্রধান বক্তা ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, বিএমএ’র মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান, ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মরহুম ডাঃ সিরাজুল ইসলাম একজন ভাল লোক এবং সৎ শিল্প উদ্যোক্তা ছিলেন। আমার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি মানবসেবা করে গেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহ বিশেষ করে ‘ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’ বেশ উন্নতমানের চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছে।
অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, জীবিতকালে অনেক উন্নয়ন কর্মকা- করে গেছেন ডাঃ সিরাজুল ইসলাম। তিনি আজীবন মানুষের অন্তরে জীবিত থাকবেন।
ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ বলেন, দেশের অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা ও দক্ষ চিকিৎসক তৈরিসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে ডাঃ সিরাজুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। বিশ্বমানের হাসপাতাল তৈরি ও মানসম্মত মেডিক্যাল শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন। এ বিষয়ে তিনি সব সময় আমাকে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিতেন। তার অকাল মৃত্যুতে দেশের চিকিৎসা সেক্টরে আমরা এক ব্যক্তিত্ববান অভিভাবককে হারালাম। তিনি সব সময় মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতেন।
অন্য বক্তারা বলেন, রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন ডাঃ সিরাজুল ইসলাম। আশির দশকে পুরান ঢাকায় তিনি প্রথমে স্থাপন করেন সুমনা হাসপাতাল। এর পর একে একে গড়ে তোলেন সুমনা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল টেকনোলজি, সুমনা মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল, সুমনা প্রাইভেট লিঃ এবং সুমনা বিল্ডার্স। এভাবে ২০১১ সালে রাজধানীর মগবাজারের মালিবাগ এলাকায় গড়ে তোলেন ৫০০ বেডের অত্যাধুনিক ‘ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’। এছাড়া তিনি নোয়াখালীতে এতিমখানা, মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ডাঃ সিরাজুল ইসলামের সহধর্মিণী, দু’ মেয়ে ও দু’ ছেলে রয়েছে। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে চিকিৎসক।