ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ের রসিক রায় জিউ মন্দিরে ১৪৪ ধারা জারী

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ১৯ অক্টোবর ২০১৫

ঠাকুরগাঁওয়ের রসিক রায় জিউ মন্দিরে ১৪৪ ধারা জারী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের রসিক রায় জিউ মন্দিরে ২টি সংগঠন পৃথক ভাবে দূর্গা পূজা’র আয়োজন করায় সেখানে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ১৪৪ ধারা জারী করেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামে রসিক রায় জিউ মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি দল ও কৃষন ভাবনামৃত সংগঠন ইস্কন পৃথক ভাবে দূর্গা পূজা আয়োজন করায় সেখান উত্তেজনা বিরাজ করে। এরই প্রেক্ষিতে প্রশাসন মন্দির চত্বরে অনিদির্ষ্ঠ সময়ের জন্য ১৪৪ ধারা জারী করে সেখানে পূজা না করার নিদের্শ দিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিনের পুরাতন রসিক রায় জিউ মন্দিরের নামে ২টি মৌজায় মোট ৫২ একর দেবত্তোর জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা নিয়ে মন্দিরের সেবাইত ফুলেন চন্দ্র সরকারের সাথে এলাকার কিছু লোকজনের বিরোধ চলছিল। ১৯৯৩ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বিরোধের নিস্পত্তি হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে ইস্কনের লোকজন ওই জমির মালিকানা দাবি করে আকস্মিক ভাবে মন্দিরে অবস্থান নেয়। এই নিয়ে ২০০৯ সালে সেখানে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে ও ইস্কনের লোকজনের সংষর্ষ হয়। এতে ফুলবাবু নামে একব্যক্তি মারা যায়। এ ঘটনায় ইস্কনের লোকজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের বিরোধ চলতে থাকে এবং প্রতি বছর দূর্গা পূজার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ বিরোধ নিরসনে বেশ কয়েকবার স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বৈঠকের মাধ্যমে আপোষ মিমাংশার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সম্প্রতি ওই মন্দিরে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায় ও কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংগঠন ইস্কনের লোকজন পৃথক ভাবে দূর্গা পূজা উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেয়। এদের এক পক্ষ মন্দিরের বাহিরে ও এক পক্ষ মন্দিরের ভিতরে দূর্গার প্রতিমা তৈরী করে পূজার প্রস্তুতি নেয়। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে উপজেলা প্রশাসন রবিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে অর্নিদিষ্ট সময়ের জন্য ১৪৪ ধাররা জারী করে ওই মন্দিরে পূজা পালন না করার নির্দেশ দেয়। বর্তমানে মন্দির এলাকার অদূরে দূর্গা পূজা আয়োজনকারী দু’টি দল মন্দিরের দুই দিকে এবং মন্দির চত্বরে পুলিশ অবস্থান করছে। এ ব্যাপারে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, যেহেতু পূজার সময় শুরু হয়েছে সেহেতু পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। পূজার পর এ বিরোধ মিমাংশার চেষ্টা করা হবে। বর্তমানে সকল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
×