ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মঞ্চে আসছে ঢাকা মৌলিকের তৃতীয় প্রযোজনা ‘বিক্ষুব্ধ অতীত এবং নজরুল’

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২০ অক্টোবর ২০১৫

মঞ্চে আসছে ঢাকা মৌলিকের তৃতীয় প্রযোজনা ‘বিক্ষুব্ধ অতীত এবং নজরুল’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্রোহী কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের শেষ জীবন অন্য কবি সাহিত্যিকদের মতো ততটা ভাল ছিল না। অন্য কবি সাহিত্যিকের রচনা নিয়ে অনেক নাটক চলচ্চিত্র নির্মিত হলেও এক্ষেত্রে নজরুল অনেকটাই অবহেলিতই থেকে গেছেন। এ অবস্থায় নজরুলের শেষ জীবনের গল্প নিয়ে নাটক মঞ্চে আনছে ঢাকার মঞ্চে অন্যতম আলোচিত নাট্য সংগঠন ঢাকা মৌলিক নাট্যদল। এটি দলের তৃতীয় প্রযোজনা কাজী নজরুল ইসলামের শেষ জীবনের ওপর রচিত ‘বিক্ষুব্ধ অতীত এবং নজরুল’ নামের নাটকটি রচনা করেছেন শেখ আকরাম আলী। নির্দেশনা দিচ্ছেন ঢাকা মৌলিক নাট্যদলের প্রধান সাজু আহমেদ। দল সূত্রে জানা গেছে নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন অলি উল্লাহ অলি, নিলয় রহমান, অহি চৌধুরী, আব্দুল হাকিম হিমেল, অহিদুল ইসলাম অপু, রানা মল্লিক, হাসান সিদ্দিকী, মনিমালা, জিএম স্পর্শ, নিপা প্রধান, রেশমা, ছোটমনি, লিটন মিয়া, ফারুক আহমেদ, রাহাত হুসাইন আকন, পরান, শাহ ইমরান, প্রবীর, জাভেদ আকাশ ও সাজু আহমেদ। নাটকের কোরিওগ্রাফি করছেন নিলয় রহমান, আবহ সঙ্গীত হাসান সিদ্দিকী, সেট নির্মাণ আব্দুল হাকিম হিমেল, পোশাক জিএম স্পর্শ, আলোক পরিকল্পনা রাহাত হুসাইন আকন। নাটকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন দলের প্রধান উপদেষ্টা সোহেল আহমেদ খান। দলসূত্রে জানা গেছে অতি শীঘ্রই নাটক মঞ্চে আসবে। এ উপলক্ষে দলের শান্তিনগরের নিজস্ব কার্যালয়ে নিয়মিত মহড়া করছেন দলের কর্মীরা। বিগত দুই প্রযোজনার মতো এই নতুন প্রযোজনাটিও দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশা করছেন ঢাকা মৌলিক নাট্যদলের কর্মীরা। এর আগে শহিদুল হক খান শ্যানন রচিত ‘বৃত্তে বিপ্রতীপ’ এবং কাজী রফিক রচিত ‘অঙ্কুর’ নামে দুটি নাটকের একাধিক মঞ্চায়ন করে ঢাকা মৌলিক নাট্যদল। দুটি নাটকেরই নিদের্শনা দিয়েছেন সাজু আহমেদ। এছাড়া ‘পাথর’ এবং ‘এই পিরিতি সেই পিরিতি নয়’ নামে দুটি মঞ্চনাটক মঞ্চে এনেছে দলটি। প্রসঙ্গত, এই উপমহাদেশের কিংবদন্তী সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, সুরকার, শিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার রচিত সাহিত্য বিশ্বব্যাপী গবেষণার বিষয়। ভারতীয় উপমহাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নজরুল পঠিত হচ্ছে। নজরুল সাহিত্যিক হিসেবে, বিদ্রোহী কবি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হলেও তার সঙ্গীত প্রতিভা ছিল সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। বিধাতা প্রদত্ত এই অমূল্য প্রতিভা বাংলা সাহিত্যেতো বটেই বাংলা সঙ্গীতাঙ্গণে অশেষ সম্পদ। বাঙালী জাতি যত দিন বেঁচে থাকবে নজরুলকে তাদের প্রয়োজন হবে। তবে নানা কারণে অনেকটাই অবহেলিত নজরুল। বিশেষ করে তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ি গবেষণা হচ্ছে না। অথচ জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ নজরুলের প্রতিভার কদর করেছিলেন। তার মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেই নজরুলের চর্চা যেন দিন দিন কমে যাচ্ছে বই বাড়ছে না। যাদিও নজরুল সঙ্গীত শিল্পী এবং স্বল্পভাবে যারা নজরুল চর্চা করেন তারা এ বিষয়টি মানতে নারাজ। তদুপরি জাতীয়ভাবেও নজরুল অনেকটাই উপেক্ষিত। শুধু তাই নয় সম্প্রতি জানা গেছে যে তৎকালীন সময়ের রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নজরুলকে কলকাতা থেকে ঢাকায় এনে জাতীয় কবি হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিত্বের ঘোষণা দিলেও স্বাধীনতা ৪২ বছরেও তার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। যা অত্যন্ত দঃখজনক। অত্যন্ত দেরি হলেও নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হবে এই প্রত্যাশা।
×