ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঝিনাইদহে ঘরে পেট্রোল ঢেলে মা ও মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২১ অক্টোবর ২০১৫

ঝিনাইদহে ঘরে পেট্রোল ঢেলে মা ও মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ, ২০ অক্টোবর ॥ ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে কালীগঞ্জে মা-মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলো- মা তাসলিমা বেগম (৪০) ও শিশুকন্যা তাসনিয়া (১ বছর ৬ মাস)। এ সময় তাসলিমার স্বামী নজরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া (৫০) ও তার বড় মেয়ে উর্মি খাতুন (২০) আহত হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে ফরাসপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বড় মেয়ের স্বামী স্ত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে রাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। নজরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়ার বড় মেয়ে উর্মি খাতুন অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের কামাল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। কয়েকবার যৌতুকের টাকা দেয়ার পরও তার ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। অবশেষে গত কোরবানির ঈদের আগে সে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর থেকে মোবাইল ফোনে স্বামী কমাল হোসেন তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। সোমবার দুপুরেও স্বামী কামাল হোসেন মোবাইল ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। সোমবার রাতে উর্মি তার মা তাসলিমা বেগম, ছোট বোন তাসনিয়া খাতুন ও পিতা নজরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া এক ঘরে ঘুমিয়েছিল। মধ্যরাতে ঘরের জানালা দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে তারা সবাই কমবেশি দগ্ধ হয়। তার স্বামী কামাল হোসেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে উর্মি অভিযোগ করেন। উর্মি খাতুনের চাচা রবিউল ইসলাম বলেন, জামাই কামাল হোসেন বিয়ের পর থেকেই তাদের মেয়ের ওপর নির্যাতন করে আসছে। সোমবারও তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। কামাল হোসেনই এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন। কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, ফরাসপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া স্ত্রী-কন্যাসহ চারজন রাতে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। সোমবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা ঘরের জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে নজরুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া, স্ত্রী তাসলিমা বেগম ও শিশুকন্যা তাসমিয়া খাতুন ও বড় মেয়ে উর্মি খাতুন গুরুতর আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাসলিমা বেগম ও শিশু তাসনিয়ার অবস্থার অবনিত ঘটলে তাদের ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ঢাকা নেয়ার পথে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছলে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মা তাসলিমা বেগম ও ছোট মেয়ে তাসনিয়া মারা যায়। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। তবে পরিবারের মতো পুলিশেরও সন্দেহের তীর জামাই কামাল হোসেনের দিকে। তাকে গ্রেফতারর চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
×