ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সীমান্তহীন বিশ্বের স্বপ্নে উদ্ভাসিত শিল্পী প্রশান্তর ক্যানভাস

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২১ অক্টোবর ২০১৫

সীমান্তহীন বিশ্বের স্বপ্নে উদ্ভাসিত শিল্পী প্রশান্তর ক্যানভাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্যানভাসে দৃশ্যমান অনেক দিনের ক্ষয়ে যাওয়া একটি দরজা। মরচে ধরা দরজার শরীরে বিবর্ণতার ছাপ। দুই পাশে ঝুলছে কড়া। তালা দিয়ে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে কড়া দু’টি। আর দরজার ওপাশে পড়েছে রোদের আলো। সেখানে যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে সীমাকে পেরিয়ে সীমানাহীনতায় যাওয়ার আহ্বান। সীমান্তহীন বিশ্বের স্বপ্ন দেখা চিত্রশিল্পী প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ এঁকেছেন এই চিত্রকর্মটি। এমন অনেক ছবি এখন শোভা পাচ্ছে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) মিলনায়তনে। এখানে চলছে ওপেন ডোর শীর্ষক এই শিল্পীর চিত্রকলা প্রদর্শনী। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে কথা হয় প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধের সঙ্গে। এ বিষয়ে শিল্পী বলেন, আমরা সবাই পৃথিবী নামের একটি গ্রহের মানুষ অথচ সীমানা প্রাচীর দাঁড় করিয়ে পুরো বিশ্বটাকে খ--বিখ- করে রাখা হয়েছে। মানুষে মানুষে সৃষ্টি করা হয়েছে মতভেদ। শান্তির বদলে কৌশলে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সহিংসতা। মুনাফার লালসায় অস্ত্র বিক্রি করে সুন্দর পৃথিবীতে নানা অপকৌশলে বপন করা হয়েছে যুদ্ধের বীজ। দেশে দেশে এবং মানুষে মানুষে হানাহানিতে আজ আক্রান্ত এই ধরনী। মানুষের মাঝে বিভেদ এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সীমারেখা ভেঙ্গে শান্তি ও মঙ্গলের প্রত্যাশায় রাঙিয়েছে আমার ক্যানভাস। রং-তুলির আশ্রয়ে সীমান্তহীন বিশ্বের স্বপ্ন নিয়ে সাজিয়েছি চিত্রপট। প্রদর্শনীর চিত্রকর্মগুলোয় মুক্ত বিশ্বের আকাক্সক্ষায় বিভিন্ন আঙ্গিকে শিল্পী উপস্থাপন করেছেন দরজার ছবি। সেখানে দেখা মেলে ঐতিহ্যের সাক্ষ্যবহ সোনারগাঁয়ের পানাম নগরীর বিপন্ন দরজার চিত্রভাষ্য। অযতœ ও অবহেলায় টিকে থাকা বিশাল এক ফটকে জমেছে সবুজাভ শ্যাওলা। ফটকটির অপর পাশে দৃশ্যমান নীলাকাশের নিচে ঠাঁই পাওয়া প্রাচীন এক অট্টালিকা। আরেকটি চিত্রকর্মে সোনারগাঁয়ের অন্য এক দুয়ার বন্ধ ভবনের ছবি উপস্থাপন করেছেন শিল্পী। ক্ষয়িষ্ণু বাড়িটির পলেস্তারা উঠে গিয়ে চারপাশ থেকে বেরিয়ে এসেছে ইটের কাঠামো। উন্মুক্ত বিশ্বের ভাবনাকে থামিয়ে দিতে কাঠের দরজাটির ওপর চেপে বসেছে আরেকটি বেড়ার বন্ধনী। এমন ছবি দেখতে দেখতে নজর পড়ে যায় মাদার তেরেসার প্রতিকৃতির ওপর। রং আর রেখায় সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মানবতার প্রতীকী হয়ে ওঠা এই মানবীর মুখখানি। মহীয়সী এই নারী দুই হাত করজোরে বিশ্ব শান্তির প্রত্যাশায় প্রার্থনা করছেন। এসব ছবির সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি প্রতিকৃতি রয়েছে প্রদর্শনীতে। এ্যাক্রিলিক ও মিশ্র মাধ্যমে চিত্রিত ৫০টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া পক্ষকালব্যাপী এ শিল্প আয়োজন শেষ হবে ২৫ অক্টোবর। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শিল্পানুরাগীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উজবেক ভাষায় প্রথম বাংলা কবিতার বই প্রকাশ ॥ উজবেক ভাষায় প্রকাশিত প্রথম আধুনিক বাংলা কবিতার সংকলনের আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা উৎসব মঙ্গলবার তাসখন্দের বাংলাদেশ দূতাবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান এনডিসি। অনুষ্ঠানে উজবেকিস্তানের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক ও ইউনেস্কোর প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তিন উজবেক শিশুর বাংলা কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় । রাষ্ট্রদূত তাঁর সূচনা বক্তব্যে বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে যা বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে কাউন্সেলর নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, কবি সুফিয়া কামালসহ অসংখ্য বিশ্ববিখ্যাত কবির কবিতা বাংলাভাষাকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করেছে। অনুষ্ঠানে উজবেক ভাষায় অনূদিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি সুফিয়া কামালের তিনটি কবিতা আবৃত্তি করেন রাষ্ট্রদূতের সোশ্যাল সেক্রেটারি রানু নুরমাতোভ, অনুবাদক দিনারা রাখিমোভা ও অভ্যর্থনাকারী আজিজা সোমিরজোভ। এছাড়াও উজবেক ভাষায় পাঁচটি কবিতা পাঠ করেন অংশগ্রহণকারী কবিরা। ‘আধুনিক বাংলা কবিতা সংকলন’ নামে এই বইয়ে ২৭ বাংলাদেশী কবির ২৭টি কবিতা স্থান পেয়েছে । কঞ্জুস নাটকের ৬৭০তম প্রদর্শনী ॥ লোকনাট্যদলের দর্শকনন্দিত প্রযোজনা কঞ্জুস। বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের ইতিহাসে সর্বাধিক মঞ্চস্থ হয়েছে নাটকটি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে প্রযোজনাটির ৬৭০টি প্রদর্শনী হয়। বিখ্যাত ফরাসী নাট্যকার মলিয়েরের ‘দ্য মাইজার’ অবলম্বনে কঞ্জুস নাটকটি রূপান্তর করেছেন তারিক আনাম খান। নির্দেশনা দিয়েছেন লোকনাট্যদলের অধিকর্তা লিয়াকত আলী লাকী।
×