ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল

রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২২ অক্টোবর ২০১৫

রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২১ অক্টোবর ॥ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে টানাটানি করলেও কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। হাসপাতালটিতে সপ্তাহে দুই দিন প্রতিনিধিদের চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি থাকলেও প্রতিদিনই তাদের হাতে রোগীদের হয়রানি হতে হচ্ছে। বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি দাঁড়িয়ে। এসব কক্ষ থেকে কোন রোগী বের হলেই প্রতিনিধিরা ছুটে যাচ্ছেন ব্যবস্থাপত্র দেখতে। বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ কাউন্টারের দিকে এগিয়ে আসছিলেন এক রোগী। তাকে দেখে এগিয়ে যান দুই ব্যক্তি। রোগীর হাত থেকে ব্যবস্থাপত্রটি নিয়ে দেখতে শুরু করেন একজন। পরে পকেট থেকে মুঠোফোনটি বের করে ব্যবস্থাপত্রটির ছবি তুলে নেন। ছবি তোলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি নিজেকে ওষুধ উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক পরিচয় দিয়ে জানান, তার নাম জামাল উদ্দীন। পরে বলেন, বুধবার চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেয়া রয়েছে। তাই একটু আগেভাগে এসে রোগীর ব্যবস্থাপত্রগুলো যাচাই করে নিচ্ছি। এটাকে এক অর্থে জরিপ বলতে পারেন।’ এদিকে সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মনোয়ারা বেগম (৪৩) অভিযোগ করেন, ‘পেটের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছিলাম। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর এক ব্যক্তি তার হাত থেকে ব্যবস্থাপত্রটি কেড়ে নেন। এরপর একজনের পর একজন সেটি দেখতে থাকেন। এভাবে চারজনের হাতবদলের পর নিজেদের মধ্যে কী যেন বলাবলি শেষে তারা আমার হাতে ব্যবস্থাপত্রটি ফেরত দেন।’ ততক্ষণ পেটে ব্যথা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘প্রতিদিন এই হাসপাতালে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন প্রতিনিধি আসেন। সুযোগ বুঝে নিজ প্রতিষ্ঠানের ওষুধ লেখার অনুরোধ করতে তারা চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পরে তারা রোগীদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধের নামগুলো যাচাই করে দেখেন। এতে অনেক সময় রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হয়।’ এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে দুই দিন বেলা একটার পর ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি রয়েছে। এর বাইরে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হাসপাতালে ঢোকার অনুমতি নেই। রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি তো একেবারেই কাম্য নয়। এটা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×