ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা মোহামেডান-সলিড এসসি, কলকাতা মোহামেডান-বাজান এফসি

ভিন্ন ম্যাচে আজ মাঠে নামছে দুই মোহামেডান

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৩ অক্টোবর ২০১৫

ভিন্ন ম্যাচে আজ মাঠে নামছে দুই মোহামেডান

রুমেল খান, চট্টগ্রাম থেকে ॥ কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড... উপমহাদেশের দুই ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব। ১৮৮১ সালে প্রথমটি এবং ১৯৩৬ সালে দ্বিতীয়টির জন্ম। চলমান ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এ অংশ নিচ্ছে উভয় দলই। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ দুই মোহামেডানই পড়েছে একই গ্রুপে (এ), দুই দলই প্রথম ম্যাচ খেলে বুধবার এবং দুই দলই প্রতিপক্ষের কাছে হারে। শ্রীলঙ্কার সলিড স্পোর্টস ক্লাবের কাছে ২-১ গোলে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার্স’ খ্যাত কলকাতা মোহামেডান হেরে যায়। আর আফগানিস্তানের ডি স্পিন ঘার বাজান ফুটবল ক্লাবের কাছে ১-০ গোলে পরাভূত হয় ‘ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট’ খ্যাত ঢাকা মোহামেডান। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আজ আবারও ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামবে দুই মোহামেডান। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রথম ম্যাচে ঢাকা মোহামেডান মুখোমুখি হবে সলিড স্পোর্টস ক্লাবের। একই ভেন্যুতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাজান ফুটবল ক্লাবের মোকাবেলা করবে কলকাতা মোহামেডান। দুই মোহামেডানের কাছেই আজকের ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। জিতলে বা ড্র করলে সেমিফাইনালে যাবার সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে। আর হারলে নিশ্চিত হবে অনাকাক্সিক্ষত বিদায়। সে তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে আছে সলিড এবং বাজান ক্লাব। আজ জিতলেই সেমিতে নাম লেখানো নিশ্চিত হবে তাদের। ‘এ’ গ্রুপে এখন পয়েন্ট টেবিলের অবস্থাটা হচ্ছে এরকম : সমান ৩ পয়েন্ট নিয়ে সলিড শীর্ষে ও বাজান আছে দ্বিতীয় স্থানে (গোল পার্থক্যে)। কোন পয়েন্ট না নিয়ে যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে কলকাতা এবং ঢাকা মোহামেডান। দুই মোহামেডানের মধ্যে আরও একটি অদ্ভুত সাদৃশ্য আছে। সেটি হলো বিদেশী ফুটবলার নিয়ে। ঢাকা মোহামেডানের তিন বিদেশী খেলোয়াড় খেলানোর সুযোগ থাকলেও নানা জটিলতায় প্রথমে তাদের বিদেশী ছিল মাত্র একজনÑ ডিফেন্ডার নাইজেরিয়ার ইয়ন্টা মাইকেল। এলিটা বেঞ্জামিন এবং ইসমাইল বাঙ্গুরাকে ভিন্ন ভিন্ন কারণে পাওয়া যায়নি। পরে অবশ্য অন্তিম সময়ে ‘ম্যানেজ’ করা গেছে মিডফিল্ডার লামিনে কামারা, ডিফেন্ডার ওইয়েইয়ে ওলাবানজি আলানিকে। কিন্তু তারা কেউই সন্তোষজনক পারফর্ম করতে পারেননি। কোচ জসিমউদ্দিন জোসি তাদের খেলায় মোটেও সন্তুষ্ট নন! তবে আজকের ম্যাচ জিততে মরিয়া তিনি, ‘যেভাবেই হোক আজকের এই বাঁচা-মরার ম্যাচে জিততেই হবে আমাদের। প্রথম ম্যাচের ভুলগুলো যেন এ ম্যাচে না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকব। তবে যে জিনিসটা আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হলো ভাগ্য, যেটি প্রথম ম্যাচে একেবারেই সহায় হয়নি আমাদের।’ বাজানের কোচ ওয়াহিদুল্লাহ্ বলেন, ‘প্রথম ম্যাচেই জেতায় খুশি। এখন লক্ষ্য দ্বিতীয় ম্যাচেও জেতা। ঢাকা মোহামেডান শক্তিশালী দল। তাদের হারানো কঠিন। তবে আমরা চেষ্টার কোন কসুর করব না।’ এদিকে ভিসা জটিলতার কারণে কলকাতা মোহামেডানের মূল দলের সঙ্গে চট্টগ্রাম আসতে পারেননি পাঁচ ফুটবলার (তিন বিদেশী, দুই ভারতীয়)। এ নিয়ে দারুণ পেরেশানিতে ছিলেন দলের কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য। অবশেষে খেলা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে ঢাকা থেকে টুর্নামেন্টের আয়োজকদের সহায়তায় কলকাতা মোহামেডানের পাঁচ ফুটবলারকে বিশেষ হেলিকপ্টারে উড়িয়ে স্টেডিয়ামে নিয়ে আসা হয়! অবশ্য তাতেও হার এড়াতে পারেনি দলটি। তবে এজন্য কোচ খুব একটা ‘মাইন্ড’ করেননি। তিনি বলেন, ‘আয়োজক এবং বাফুফের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তারা এই বড় সাহায্যটুকু না করলে হয়তো প্রথম ম্যাচে দলই নামাতে পারতাম না! ওরা ৪০ ঘণ্টার মতো জার্নি করে এসে যতটুকু পারে খেলেছে। আমি দলের খেলায় সন্তুষ্ট হলেও ফলে সন্তুষ্ট নই। সিলি মিসটেক এবং মনোসংযোগের অভাবেই আমরা হেরেছি। তবে এই হারে আমাদের সেমিফাইনালে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বাকি ম্যাচগুলো জিতে লক্ষ্য পূরণের যে সুযোগ আছে, সেটাকে ভাল মতোই কাজে লাগাতে চাই। পরের ম্যাচ আফগান ক্লাব বাজানের বিরুদ্ধে। তারা ঢাকা মোহামেডানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে। ওই ম্যাচটা দেখেছি। সে অনুযায়ী গেমপ্ল্যান করে খেলব আমরা। আশাকরি আমরা তাদের হারাতে পারব।’
×