ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খাদিজা নূরজাহান

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৫

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি

কলেজ থেকে ফিরে নিজের রুমে ঢুকে দরজা এঁটে দিয়েছে অপ্সরা। বালিশে মুখ গুঁজে কিছুক্ষণ কেঁদেকেটে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে, জেগে দেখে পুরো পৃথিবী আঁধার। ঝুমবৃষ্টি হয়েছে। এখনও হচ্ছে। তবে মুষলধারায় নয়, টিপ টিপ করে। কখনও বেড়ে যাচ্ছে, আবার কমছে। কিন্তু থামছে না। কিছুক্ষণের মধ্যে যে থামবে সেরকম কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। আকাশের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে ছেঁড়াখোঁড়া মেঘ। পেজা তুলোর মতো হাল্কা ভাসমান এসব মেঘ সূর্যকে ঢেকে রেখেছে। ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দার ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায় অপ্সরা। বৃষ্টির ছাঁট এসে তাকে ভিজিয়ে দিয়ে শরীরজুড়ে শীতলতা এনে দেয়। কিন্তু মনের ভেতরে বেদনার উষ্ণতা। সেই উষ্ণতা আরও বাড়িয়ে দিতেই কি না মা এসে বলে, ‘অপ্সরা, তোর ফোন এসেছে।’ অপ্সরার কাছে সচরাচর কোন ছেলের ফোন আসে না, শুধু বাসারের ফোন ছাড়া। নিশ্চয়ই এখন বাসারই ফোন করেছে। ভীষণ বিরক্ত লাগে তার সাথে কথা বলতে। ইচ্ছে না হলেও মুঠোফোনটা হাতে নেয় অপ্সরা। কানের কাছে ধরেই পরিচিত সেই কণ্ঠস্বর শুনতে পায়. ‘হ্যালো অপ্সরা! কী করো?’ অপ্সরা মনের ভেতরের উথালপাথাল অবস্থা সামলে নিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলে, ‘কিছুই করি না, কথা বলছি।’ ‘কিছুক্ষণ আগে নতুন একটা কবিতা লিখেছি, শুনবে?’ বলেই অপ্সরাকে আর কিছুই বলার সুযোগ না দিয়ে হড়ভড় করে কবিতা আবৃত্তি করতে থাকে বাসার। অপ্সরা কানের কাছ থেকে মুঠোফোনটা সরিয়ে রাখে। বাসার কবিতা-টবিতা লেখে। যতবারই অপ্সরার সাথে কথা বলে অপ্রাসঙ্গিক হলেও নিজের লেখা কবিতার অন্তত দুই লাইন শোনাবার ব্যর্থ চেষ্টা করে। অপ্সরা তার কবিতা কানে শুনলেও কখনো মন পর্যন্ত পৌঁছেনি। এসব তার বরাবরের মতোই অপছন্দ। এমন আরও অনেক বিষয় আছে যা বাসার পছন্দ করে কিন্তু অপ্সরা করে না। অপ্সরা ভালোবাসে রক ও হিন্দি গান শুনতে, বাসারের প্রিয় নজরুল কিংবা রবীন্দ্রসঙ্গীত। অপ্সরা ভালোবাসে রজনীগন্ধা, বাসারের প্রিয় লাল গোলাপ। অপ্সরার প্রিয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসা, বাসার দেখতে ভালোবাসে স্পোর্টস চ্যানেল। অপ্সরা একজন সাধারণ মেয়ে। স্বপ্নও দেখে খুব সাধারণ। মধ্যবিত্তের তেল-নুন, পেঁয়াজ-রসুন, কাঁচামরিচ আর মোটা চালের ভাতের এক জীবনই স্বপ্ন। তবু তার জীবনসঙ্গী হবে যে তাকে অপ্সরার ভালো লাগা ও ভালোবাসার মূল্য দিতেই হবে। বাসার কি তা পারবে কিংবা আদৌ কি দু’জনের মিল হবে? মিলন সে তো অনেক পরের বিষয়। অপ্সরার পরীক্ষা শেষ হলেই নাকি সম্পন্ন হবে বিয়ের কাজটি। বাসারের বাবা-মাকে কয়েক বছর ধরে এ রকম কথাই দিয়ে রেখেছে অপ্সরার মা, মেয়ের মতামত না নিয়েই। ‘অপ্সরা, কবিতাটা কেমন হয়েছে, ভালো না?’ অপ্সরা তো কবিতা শুনেইনি! তবু ছোট করে বলে, ‘ভালোই।’ ‘ধন্যবাদ।’ বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বাসার। অপ্সরা আবার ব্যালকনিতে ফিরে যায়। বাইরে ঘোলাটে মেঘলা আকাশ, এলোমেলো বাতাস, গাছেদের দোলাচল আর শুকনো পাতার ঝরে পড়া দেখছে। বৃষ্টি থেমে যাবার পরে পুব আকাশের গায়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিগন্তের শেষ সীমানা অবধি একটা বাঁকা রংধনু ভেসে উঠেছে তাও দেখছে আর ভাবছেÑ এসব দেখার মতো কোনো চক্ষু ছিল না তার। বাসার তাকে চক্ষু দিয়েছে। যদিও তার চোখ, কান, মুখ, হাত-পা সবই আছে। কিন্তু পৃথিবী দেখার মতো, পাখির মধুরতম কুজন শোনার মতো দিব্যদৃষ্টি ও শ্রবণেন্দ্রীয় ছিল না। রাতে খাবার টেবিলে এসে অপ্সরা মাকে বলে, ‘আম্মা, ভাত দাও।’ টেবিলে খাবার বেড়ে দিয়ে মা বলে, ‘ডিসেম্বরের শেষে বিয়ের ডেট ফেললে তোর কোন অসুবিধা হবে না তো!’ অপ্সরার বড় বোন মুক্তা পাশে বসে সালাদে লেবু চাপছিল। মায়ের কথা শেষ না হতেই সে বলে, ‘ওর পরীক্ষা তো নবেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তায়ই ডেট ফাইনাল করে ফেল।’ ‘যাহ! এত তাড়াতাড়ি!’ ‘শুভ কাজে দেরি করতে নেই।’ ‘তা বটে। তবে তাড়াহুড়ো করতেও নেই। শপিং করা, আত্মীয়-স্বজন দাওয়াত দেওয়া, কত কাজ আছে।’ অপ্সরা নিঃশব্দে খেতে খেতে মা ও মুক্তা আপুর কথা শুনে মনে মনে হাসে। কী অসম্ভব বিষয় নিয়ে ভাবছে বাড়ির লোকেরা। যে ঘটনা কখনো ঘটবেই না সেটা নিয়ে এত কথা হচ্ছে কেন? মা অপ্সরার পাশের চেয়ারটাতে বসতে বসতে বলে, ‘বাসারের মা ফোন দিয়েছিল। ওরা আর দেরি করতে চায় না।’ ‘অসম্ভব! আমি মরে গেলেও ওই লোকটাকে বিয়ে করব না।’ এ কথাটি মনে মনে বলে প্লেটের খাবার পুরোপুরি শেষ না করেই উঠে পড়ে অপ্সরা। নিজের ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে ফুঁপিয়ে কাঁদে কিছুক্ষণ। বুকের ভেতরে, একেবারে গহীনে যেখানে মন থাকেÑ সেখানে স্তূপাকারে সাজিয়ে রাখা আশাগুলো, স্বপ্নগুলো টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এলোমেলো হয়ে যায়। বুকের ভেতর থেকে হৃৎপিন্ডটা বেরিয়ে আসতে চায় এ কথাটি ভেবে যে, জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে একটিবারও তার মতামতের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়নি বাবা-মায়ের। অপ্সরা চলে এলেও মা আর মুক্তা আপুর কথা থামেনি। সে কান পেতে শুনতে থাকে তাদের কথা। মা বলে, ‘ওর কি অন্য কোথাও এ্যাফেয়ার আছে? কিছু বলেছে তোর কাছে?’ মুক্তা বলে, ‘না, সেরকম হলে অন্তত আমাকে জানাত।’ ‘ও বাসারকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না কেন?’ ‘উনাকে নাকি ওর পছন্দ না।’ ‘ও কি তোকে এ কথা বলেছে?’ ‘না, মুখ দেখেই তো বোঝা যায়।’ মা আর কোন কথা বলে না। অপ্সরা মনে মনে বলে, মুক্তা আপু ঠিক কথাই বলেছে। সে আসলে বাসারকে ‘স্যার’ হিসেবে শ্রদ্ধা করে, স্বামী হিসেবে কখনো ভাবতেও পারে না। প্রসঙ্গত এখানে কথাটা বলে রাখা দরকার, বাসার ছিল অপ্সরার গৃহশিক্ষক। প্রতিদিন বাসায় এসে পড়াত অপ্সরাকে। এখানেই অপ্সরার মা বাসারকে দেখে মেয়ের জন্য পছন্দ করে। বাসার দেখতে মোটামুটি স্মার্ট, শিক্ষিত ও ভালো বংশের ছেলে। অপ্সরারা চার বোন, কোন ভাই নেই। অপ্সরার মা তাই বাসারকে পেটের ছেলের মতো ¯েœহ ও আদর করতে থাকে। এ বিষয়টা পাড়া-প্রতিবেশীদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠে। তারা নানা কথা বলে বলে পাড়া মাতিয়ে রাখে। তাই অপ্সরার মা নিজের স্বামী ও বড় মেয়েদের সাথে আলাপ-আলাচনা করে বাসারের সাথে তার ছোট মেয়ের বিয়ে দেয়ার কথা সবাইকে জানিয়ে দেয়। পাড়ার লোকদের কানাকানি থামে। বাসার প্রথমে আপত্তি করলেও তার বাবা-মাকে বিষয়টা জানিয়ে তাদের সম্মতিতেই রাজি হয়। অপ্সরা দেখতে বেশ সুন্দরি, রোমান্টিক ও আধুনিক একটি মেয়েÑঠিক বাসার যেরকম মেয়ে প্রত্যাশা করে। এমন মেয়েকে বিয়ে করতে কেউ আপত্তি করবে না। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে বাসার আর পড়াতে আসে না অপ্সরাকে। অপ্সরা ছিল অতিসাধারণ ও লাজনম্র একটি মেয়ে। কথা বলত শুধু নিজের সঙ্গে আর সারাক্ষণ মগ্ন থাকত নিজেকে নিয়েই। বাসার তাকে নতুন এক পৃথিবীতে এনে দাঁড় করিয়েছেÑ যেখানে ছিল সে একেবারে সদ্যজাত শিশুর মতো। বাসার তাকে চলতে শিখিয়েছে, বলতে শিখিয়েছে, মোমের মতো গলতে না শিখিয়ে প্রদীপের মতো জ্বলতে শিখিয়েÑ অবশেষে লক্ষ্য থেকে পিছু না টলতে শিখিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা বাসার তাকে চোখে চোখে রেখেছে আর চোখের ভেতরে বপন করে দিয়েছে স্বপ্নবীজ। তাকে ডুবতে শিখিয়েছে, শিখিয়েছে ভেসে উঠে জলকেলি করতে। ঝর্ণার মধ্যে ¯œান করতে শিখিয়েছে, ডুবসাঁতারের মাঝেও যে অবগাহনের আনন্দ উপভোগ করা যায় তাও শিখিয়েছে। পদ্মফুলের মতো ফুটতে শিখিয়েছে স্বচ্ছ সরোবরে, শিখিয়েছে প্রজাপতির মতো রঙিন পাখা মেলে উড়ে বেড়াতে। ভাঙতে শিখিয়েছে, শিখিয়েছে গড়তে আর জীবন মানে যে ভাঙাগড়ার খেলা শিখিয়েছে তাও। বিনিময়ে তার কাছে কিছুই চায়নিÑ শুধু চেয়েছে, অপ্সরা যেন বাসারের সঙ্গে এ পৃথিবীটা দেখেÑ দেখে এমনভাবে ঠিক যেভাবে সে দেখে। এতেই অপ্সরার আপত্তি। বাসারকে শ্রদ্ধা করে অপ্সরা, কৃতজ্ঞও তার কাছে। কিন্তু তার সঙ্গে একই ছাদের তলে থাকতে হবে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না সে। বাসার তাকে প্রস্ফুটিত, উন্মুক্ত ও অনবগুণ্ঠিত করেছে অপ্সরা তা অস্বীকার করে না। এজন্য যাপিত জীবনের প্রায় সবটুকুতেই কান উৎকর্ণ করে তার স্তোত্র শুনেছে। তাই বলে সে যে তাকে অন্য কারো হতে না দিয়ে নিজেই দাবি করে বসবে অপ্সরা তা আগে বুঝেনি। অপ্সরা স্কুল ছেড়ে কলেজে পা রেখেছে আর স্বাভাবিকভাবেই তার মনের মাঝে ভালো লাগা না লাগার বিষয়টা প্রসারিত হচ্ছে। তাই বুঝি এত দিন ধরে বর হিসেবে বাবা-মা যাকে ঠিক করে রেখেছে তাকে এখন পছন্দ হচ্ছে না তার। দরজার ওপাশ থেকে মা ডাকে, ‘অপ্সরা দরজা খোল, তোর ফোন এসেছে।’ অপ্সরা মুঠোফোনটা ফেলে এসেছিল। রাতে ঘুমোতে যাবার আগে বাসার ফোন করে, করবেই। এটা তার প্রত্যেক দিনের অভ্যেস। দশটা কথা বললে অন্তত দুইটা কথা থাকে তার বিয়ে নিয়ে। মায়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে বেশ শব্দ করে দরজাটা লাগিয়ে অপ্সরা যে বাসারের ওপর বিরক্ত মাকে সেটা বোঝাতে চেষ্টা করে। এটাই তার বিরক্তি প্রকাশের চূড়ান্ত ভাষা। তবে রেগে গেলেও বেশ মার্জিত দেখায় অপ্সরাকে। মা বড় বড় চোখ মেলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চলে যায় নিঃশব্দে। অপ্সরা বিছানায় শুয়ে ফোনটা কানের কাছে ধরতেই বাসারের গলার আওয়াজ পায়, ‘হ্যালো অপ্সরা!’ ‘জি, বলেন।’ ‘আমি সরাসরি একটা কথা বলি, শোনো। আমি খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাই তোমাকে!’ ‘আপনি চাইলেই তো হবে না, আমাকেও তো চাইতে হবে।’ ‘আমার সাথে তোমার বিয়েটা হোক তুমি কি তা চও না?’ ‘না চাই না।’ ‘কেন, আমাকে কি তোমার পছন্দ না?’ ‘সেটা আমি আপনাকে বলব না।’ ‘তুমি কি অন্য কাউকে ভালোবাসো?’ ‘না, কারো সাথে আমার ওরকম সম্পর্ক নেই।’ ‘তাহলে আমাকে বিয়ে করতে তোমার আপত্তি কীসের?’ ‘আপনাকে আমি ‘স্যার’ হিসেবে শ্রদ্ধা করি, অন্য কিছু ভাবতেও পারি না। প্লিজ এখন আর কথা বলতে চাই না, আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে, রাখছি।’ ‘ফোনটা রেখো না, কিছু কথা শোনো আমার। দেখো, তোমার আর আমার ফ্যামিলির লোকজনেরা মিলে আমাদের বিয়েটা ঠিক করেছে। যদি বিয়েটা না হয় তাদের মান-সম্মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভেবে দেখেছ? তাছাড়া এলাকার লোকজন তৈরি হয়ে আছে হাততালি দেয়ার জন্য।’ ‘আপনার সঙ্গে তো আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। আমি তো আপনাকে কোন কথা দেইনি।’ ‘তা দাওনি। কিন্তু আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। আমার ভালোবাসার সীমা-পরিসীমা কতটুকু সেটা হয়তো তোমাকে বোঝাতে পারব না। তবে এইটুকু বলতে পারি, তোমাকে পাবার জন্য আমি সবকিছু করতে পারি। তোমাকে ছাড়া বাঁচতে যেমন পারব না তেমনি তোমাকে রেখে পারব না মরতেও। আমার জীবনে তোমাকে প্রয়োজন, তোমাকে ছাড়া আমার জীবন বৃথা। আমি কিচ্ছুু চাই না, শুধু তোমাকে চাই। প্লিজ, তুমি আর না বলো না।’ অপ্সরা এ পাশ থেকে বুঝতে পারে বাসার কাঁদছে। সেই কান্না অপ্সরা যেন বুঝতে না পারে তাই ফোন রেখে দিয়েছে সে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও অপ্সরা ফোনটা কানের কাছে ধরে রাখে কিছুক্ষণ। বিছানায় গিয়ে শুয়ে চোখের পাতা বন্ধ করতেই এই প্রথম বাসারের মুখটা ভেসে ওঠে তার মনের আয়নায় আর বাসারের শেষের কথাগুলো তার কানে বাজতে থাকে বারবার। অপ্সরা সারারাত ছটফট করে, ঘুমাতে পারে না কিংবা চোখে ঘুম আসে না তার। আজকাল একটু একটু কবিতার বই, গল্পের বই পড়তে শুরু করেছে অপ্সরা। কাল পড়ে শেষ করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হৈমন্তী।’ এ গল্পটি আগেও পড়েছে। অসম্ভব ভালো লেগেছে বলে আবারও পড়তে ইচ্ছে হলো। গল্পটা পড়া শেষ হলে অপ্সরা মনে মনে ভাবে, জীবনটা গল্প কিংবা উপন্যাস নয়। তবে এর মতো হওয়াই উচিত। অপ্সরা জানে না, তার জীবনের এই প্রেম কিংবা অপ্রেমের গল্পের শেষ পাতাটি কীভাবে লেখা হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে ধার করে বলা যায় “হয়তো একদিন মার অনুরোধ অগ্রাহ্য করিতে পারিব না, ইহাও সম্ভব হইতে পারে। কারণÑ থাক, আর কাজ কী।”
×