ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এএসআই ইব্রাহিম হত্যাকা- পরিকল্পিত;###;হত্যাকারী শিবির সদস্য ;###;বগুড়ায় জামায়ত-বিএনপির ২৫ নেতাকর্মী আটক ইব্রাহিমের গ্রামের বাড়িতে মাতম;###;গ্রামের বাড়িতে ইব্রাহিমের দাফন সম্পন্ন

জামায়াত জড়িত

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

জামায়াত জড়িত

গাফফার খান চৌধুরী ॥ বৃহস্পতিবার রাতে গাবতলীতে পুলিশ কর্মকর্তা ইব্রাহিম মোল্লা হত্যার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে সরকারকে দেশ-বিদেশে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। হত্যাকা-ের সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক। হত্যাকা-ের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে তদন্ত সংস্থাগুলোও এমনটাই ধারণা করছে। হত্যাকা-ের ঘটনায় আটক মাসুদ রানা জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরের সাথী। পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারীও শিবিরের কর্মী বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। এঘটনায় আটককৃত মাসুদ রানা ছাড়াও কামরাঙ্গীরচর থেকে কয়েকটি হ্যান্ডগ্রেনেডসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকারী ও আটক মাসুদ রানা ছাত্রশিবিরের পাশাপাশি অন্য কোন জঙ্গী সংগঠনের সদস্য কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর করা হচ্ছে। হত্যাকা-ে এখন পর্যন্ত দু’জন জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে হত্যার নেপথ্যে আরও অনেকেই জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার গ্রামের বাড়িতে দিনভর চলে মাতম, আজাহারি। শত শত মানুষ ভিড় করে বাগেরহাটের গ্রামের বাড়িতে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী রাত এগারোটায় পারিবারিক কবরস্থানে ইব্রাহিম মোল্লার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় বাগেরহাট সদর ্আসনের এমপি এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশাসহ শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বগুড়ায় আটক ২৫ ॥ এদিকে ইব্রাহিম হত্যায় জড়িত সন্দেহে বগুড়ায় জামায়াত নেতা ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইউনুস আলী ও বিএনপি নেতা রফি আহমেদসহ ২৫ জনকে রাতে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এর মধ্যে ২১ শিবির কর্মী শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে আটক হয়েছে। তাদের শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। যেভাবে হত্যা করা হয় ॥ ঘটনাস্থলটি সাভার থেকে গাবতলীর দিকে আসার রাস্তার আমিনবাজার ব্রিজের ঠিক ঢালে। সেখানে বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মনোয়ার হোসেন ডিপজলের পর্বত সিনেমা হল অবস্থিত। তিন তলা সিনেমা হলটির আঙ্গিনায় প্রবেশের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দু’টি চওড়া রাস্তা রয়েছে। তাতে কোন বেড়া বা গেট নেই। হলের সামনে ফুটপাথ ঘেঁষে দশটি চা বিড়ি-সিগারেটের দোকান। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও সিনেমা হলের সামনের গাবতলীর রাস্তায় স্থায়ী চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সদস্যরা। স্থানীয় দোকানীরা বলছিলেন, চেকপোস্ট থাকলেও পুলিশ সাধারণত দূরপাল্লার কোন বাস সেখানে থামায় না। কারণ মাত্র কয়েকশ’ গজ সামনেই গাবতলী টার্মিনাল। বেশিরভাগ বাসই গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে থামে। আর ব্রিজের একেবারে ঢালে চেকপোস্ট হওয়ায় গাড়ি থামাতে গিয়ে অনেক সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নিয়মিত তল্লাশি করে থাকে পুলিশ। ঘটনার রাতে দায়িত্বে ছিলেন এমন এক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনকণ্ঠকে জানান, যথারীতি তারা চেকপোস্টে ডিউটি করছিলেন। রাত নয়টার দিকে বগুড়া থেকে গাবতলীগামী একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ব্রিজের ঢালের কাছেই তিন যুবক নামে। যুবকরা যেখানে নামে সেখান থেকে চেকপোস্টের দূরত্ব বড়জোর ১০ থেকে ১৫ গজ। তারা হেঁটে ফুটপাথ ধরে যাচ্ছিল। একজনের হাতে একটি ব্যাগ ছিল। পুলিশ যুবকদের তল্লাশির জন্য ডাক দেয়। ব্যাগ হাতে একজন (পরবর্তীতে আটক) দাঁড়ায়। অন্য যুবক চলে যেতে থাকে। তার হাতে কিছু ছিল। দেখতেও সাধারণ যুবকের মতো। তাই পুলিশ আর তাকে ডাক দিয়ে তল্লাশির প্রয়োজন মনে করেনি। যুবক যথারীতি হেঁটে সামনের দিকে চলে যায়। দাঁড়ানো দুই যুবককে দেহ ও ব্যাগ তল্লাশির উদ্যোগ নেন নিহত এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা। এ সময় যুবকরা বলেন, স্যার অন্ধকারে ভাল দেখতে পাবেন না। চলুন সামনের দিকে আলোতে যাই। সেখানে আলোতে ভাল করে চেক করতে পারবেন। এ কথায় দুই যুবকের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা হেঁটে সামনে এগোতে থাকেন। পর্বত সিনেমা হলের পূর্ব দিকের গেটের কাছে গিয়ে তারা থামে। জায়গাটি চেকপোস্ট থেকে মাত্র ৭ থেকে ৮ গজ দূরে। সেখানে ব্যাগ হাতে থাকা যুবক ব্যাগ খোলে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারালো ছুরি বের পুলিশ কর্মকর্তার পেটের উপরের দিকে বুকের নিচে পর পর কয়েকটি আঘাত করে। পুলিশ কর্মকর্তা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর দুই যুবক চোখের পলকে পালিয়ে যেতে থাকে। পুলিশ ও জনতা দ্রুত তাদের ধাওয়া করে। কিন্তু মূলহত্যাকারী ব্যাগ নিয়ে নিমিষেই অদৃশ্য হয়ে যায়। ধরা পড়ে অন্যজন। আহত পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু পথেই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক রাহাত নাজমা জানান, ইব্রাহিমের বুকের ডান পাশের ওপরে এবং পেটের মাঝামাঝি জায়গায় আঘাতের দুটি চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। পরে লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরিকল্পিত হত্যাকা- ॥ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকা-টি পরিকল্পিত। হত্যাকা-ের পর পালানোর সময় আটক যুবকের নাম মাসুদ রানা বলে জানা গেছে। তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার বাড়ি বগুড়া জেলার আদমদীঘিতে। তার পিতা হাসান ম-লের সঙ্গে তদন্তকারী সংস্থার কথা হয়েছে। মাসুদ রানার পিতা তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, ছেলের সঙ্গে প্রায় ৫ মাস ধরে পরিবারের তেমন যোগাযোগ নেই। ঈদের পর থেকে একেবারেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাসুদ রানা শিবিরের সাথী। অন্যকোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকত। এ এলাকায় ডিম বিক্রি করত। মাসুদ রানা কামরাঙ্গীরচরের যে পাড়ায় বসবাস করত, সেখানকার অনেকেই তাকে ডিম বিক্রেতা হিসেবে জানত। এটি মাসুদ রানার ছদ্মবেশ। সে ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইন বিভাগের ছাত্র। ডিম বিক্রেতা হিসেবে নিজেকে পরিচিত করানোটা ছিল আড়ালে থাকার কৌশল। ৫ দিন আগে গাজীপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়েছে। আগামী মাসেই সেখানে চলে যাওয়ার কথা। ধারণা করা হচ্ছে, পরিকল্পিত হত্যাকা- ঘটিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেই মাসুদ রানা গাজীপুরে আগাম বাসা ভাড়া নিয়েছে। মাসুদ রানার সূত্রধরে হত্যাকারীকেও চিহ্নিত করা গেছে। হত্যাকারীও ছাত্রশিবিরের সদস্য বলে মাসুদ রানার দেয়া তথ্য ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। হত্যাকারীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তবে হত্যা মিশনে মূলত কতজন ছিল তা নিশ্চিত নয়। পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার বিষয়টি একেবারেই সুপরিকল্পিত। কারণ বাসে তল্লাশির জন্য চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সিগন্যাল দেয়নি। আর সাধারণত কোন বাসই যুবকরা যেখানে নেমেছে সেখানে থামে না। দূরপাল্লার বাস তো দূরের কথা ঢাকা-সাভার বা সাভার-গাবতলীগামী কোন বাসও সেখানে থামে না। কারণ যেখানে যুবকরা নেমেছে সেটি ব্রিজ থেকে খুবই ঢালু জায়গায়। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিশেষ কোন অজুহাত দেখিয়ে সেখানে ইচ্ছে করেই নেমেছে। এরপর এমনভাবে তারা হাঁটতে শুরু করে যাতে পুলিশ তাদের সন্দেহ করে। পুরো বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। আর যুবকের কাছে থাকা ব্যাগে যদি ভারি অস্ত্র, মাদক বা অন্য কোন অবৈধ জিনিসপত্র থাকত এবং হত্যার উদ্দেশ্য না থাকত তাহলে যুবকরা সেখানে নামত না। কারণ পুলিশ বাস থামতে নির্দেশ দেয়নি। আর কোন বাসই সেখানে থামে না। যুবকদের রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে যাওয়ার কথা। তাহলে স্বাভাবিক কারণেই যুবকদের গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় নামার কথা। কারণ সেখান থেকে কামরাঙ্গীরচর যাওয়ার যানবাহন পাওয়া যায়। আর যুবকরা যেখানে নেমেছে সেখান থেকে অনেক দূর হেঁটে কামরাঙ্গীরচর বা অন্য কোন স্থানে যাওয়ার যানবাহন পেতে হবে। তার অর্থ যুবকরা পরিকল্পিতভাবে পুলিশকে হত্যা করতেই সেখানে নামে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা চেকপোস্টটির ওপর অনেক দিন ধরেই নজর রাখছিল। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে হত্যাকারীদের ব্যক্তিগত বা কোন পূর্র্বশত্রুতার তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ছাড়াও সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধীদের পরিকল্পিত নাশকতার অংশ হিসেবে পর পর দুইজন বিদেশী নাগরিক হত্যার পর সর্বশেষ পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হতে পারে। দেশে পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রকে চাপের মুখে রাখতেই এমন ঘটনা ঘটানো বিচিত্র নয়। তদন্তে পাওয়া তথ্যও তেমন আভাসই দিচ্ছে। আইজির বক্তব্য ॥ রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নিহতের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হকসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরা ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। জানাযা শেষে পুলিশ মহাপরিদর্শক সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকা-ের সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি গঠন ॥ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান ও মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মোঃ কাইয়ুমুজ্জামান। কমিটি ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। তবে কমিটির কেউ এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জনকণ্ঠকে জানান, তদন্ত চলছে। হত্যাকারীকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। হত্যাকা-ের সম্ভাব্য নানা কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। নিহতের পরিচিতি ॥ এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার পিতার নাম আব্দুস সাত্তার মোল্লা। মাতার নাম আছিয়া বেগম। বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন সোলারকোলার পালপাড়া গ্রামে। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী খায়রুন্নেছা, ৫ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও দেড় বছর বয়সী একমাত্র ছেলে পরাগকে নিয়ে দারুস সালাম থানা এলাকার ৪৮/৩ বাগবাড়ির বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তিনি ২০০৩ সালের ২০ নবেম্বর কনস্টেবল পদে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই যোগদেন ঢাকা মহানগর পুলিশে। ২০১২ সালের ৩ মে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুরের জোনের অধীন দারুস সালাম থানায় যোগদান করেছিলেন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তা ৫ বোনের একমাত্র ভাই ছিলেন। ভাইবোনদের মধ্যে তিনি পঞ্চম ছিলেন। একমাত্র পুত্রের মৃত্যুতে পিতামাতা আর একমাত্র ভাই হারানোর ব্যথায় বোনরা শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। পুরো গ্রামে বইছে মাতম। শত শত মানুষ ভিড় করছেন গ্রামের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতেই নিহত পুলিশ কর্মকর্তার লাশ পুলিশ গ্রহণ করে। লাশ গ্রামের বাড়িতেই জানাজা শেষে দাফন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিহতের বোন জামাই মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে দারুস সালাম থানার ডিউটি অফিসার এসআই মোর্শেদা আক্তার জনকণ্ঠকে জানান। যে সব সুবিধা পাবেন নিহত পুলিশের পরিবার ॥ ঢাকা মহানগর পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা জনকণ্ঠকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে থোক বরাদ্দ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নিহতের পরিবারকে দিয়েছেন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তাকে সেই পরিমাণ অর্থ বা তার অধিক অর্থ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের দু’টি ফান্ড থেকে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া এসব মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ মহাপরিদর্শকের তরফ থেকেও বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিহতের পরিবারকে দেয়া হয়ে থাকে। শুক্রবার পবিত্র জু’মার নামাজের পরেই ঢাকা মহানগর পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তায় লাশ নিহতের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
×