ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেদ কমানোর চিকিৎসা

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

মেদ কমানোর চিকিৎসা

বাড়তি মেদ বা মোটা হওয়ার সমস্যায় আমরা অনেকেই ভুগে থাকি। সেই মেদ আর মোটা যদি অসময়ে কোন তরুণ তরুণীকে কিংবা যুবক-যুবতীকে আক্রান্ত করে তাহলে কিন্তু তার এবং তার পিতা-মাতার চিন্তার অন্ত থাকে না। সেই সঙ্গে যদি আবার সংযুক্ত হয় ত্বকের কালোময়তার সমস্যা তাহলে তো আহার নিদ্রা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। কিছু কিছু রোগ আছে যাতে মোটা আর কালোর সম্পৃক্তা আছে যেমন অপধহঃযড়ংরং ঘরমৎরপধহং ধংংড়পরধঃবফ রিঃয ড়নবংরঃু অর্থাৎ মোটা হওয়ার পাশাপাশি ত্বকে ভাঁজ যেমন ঘাড়ের পার্শ্ব, বগল, এৎড়রহ ইত্যাদি স্থান কালো হয়ে যায়। অসংখ্য কারণেই এমন হতে পারে তবে আজ আমরা মূলত মেদ আর মোটা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার চেষ্টা করব। মোটা বলতে আমরা বুঝি দেহে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেদ জমা। এক্ষেত্রে খাদ্যের চর্বিই মেদ জমার মূল কারণ। আবার মূল খাদ্য শর্করা, আমিষ ও চর্বির মধ্যে থেকে এই চর্বিই আমাদের দেহে প্রথম জমে এবং সর্বশেষ ভাঙে। কাজেই খাদ্যের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের খাদ্য এমন হওয়া উচিত যেন তার থেকে আসা মোট ক্যালরির এক-তৃতীয়াংশের বেশি যেন কোন অবস্থাতেই চর্বি থেকে না আসে। কাজেই চর্বি গ্রহণের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ করে যারা মোটার সমস্যায় ভোগেন তাদের সতর্ক হতেই হবে। আবার অনেকেই ভাবেন যে মোটা হওয়ার আসলেই কি কোন চিকিৎসা আছে? উত্তর একটিই হ্যাঁ আছে। বাজারে এখন একটি নতুন ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে যা ঙৎষরংঃধৎ উপাদানে তৈরি যা চর্বি পরিপাক ও শোষণে বাধা দেয় এবং যা শুধুমাত্র পরিপাক তন্ত্রেই সক্রিয়; যা মাংস নয় বরং চর্বি কমিয়েই আপনার শরীরের ওজন কমাতে সক্ষম। এটি রক্তে উচ্চ মাত্রার চর্বি ও উক্ত রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। যা আপনার মস্তিস্কে কোন প্রভাব ফেলে না। যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে এবং যা দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহারের জন্যও নিরাপদ। ওষুধটি খাবার ফলে চর্বি জাতীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদার্থে পরিণত হতে না পারার কারণে তা রক্তে শোষিত হতে পারে না ফলে তা ক্ষুদ্রান্তেই থেকে যায় এবং যা পরে মলের সাথে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিংবা যারা অস্বাভাবিক রকম মোটা, যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি তারা এই ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ধরনের ওষুধ আপনি নিজে নিজে ব্যবহার করবেন না কারণ অতিদ্রুত ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি কোনটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নয়। আপনি অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করবেন। তবে মনে রাখবেন এর পাশাপাশি দৈহিক শ্রম ও ব্যায়াম আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো সাহায্য করবে। আপনি প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে যে চর্বি খাচ্ছেন এই ওষুধ তার এক-তৃতীয়াংশকে হজমে বাধা দেয়। এছাড়া রক্তের মোট কোলেস্টেরল ও এলডিএল কমায়। কোলেস্টেরল ছাড়াও রক্তের ট্রাইগ্লোসারাইড, ডায়াবেটিসও এই ওষুধের সাহায্যে কমে থাকে। এই ওষুধ ব্যবহার করতে হলে আপনি আপনার চিকিৎসককে নিয়ে একত্রে সিদ্ধান্ত নেবেন যে, আপনার ওজন কতটুকু কমাতে হবে। মনে রাখবেন শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ ওজন কমলেই অনেক রোগের ঝুঁকি কমে যায়। এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও যে নেই তা কিন্তু নয়। ওষুধ খেলে পায়ুপথে অতিরিক্ত বায়ু নির্গমন হতে পারে। চর্বি মল ও তন্ত্রে পরিচলন বৃদ্ধি ঘটতে পারে। স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসবে যে, এই ওষুধ কত দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম। এক পরীক্ষায় দেখা গেছে যেখানে ১ হাজার লোকের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল তাতে ৬ থেকে ৮ মাস ওষুধ ব্যবহারে গড়ে ১০ ভাগ ওজন কমেছে। ওষুধ কোম্পানি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একে খুবই কার্যকর ও নিরাপদ বলে জানিয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে সাত হাজারেরও বেশি লোকের ওপর এই ওষুধের প্রতিক্রিয়া ও কার্যকারিতা পরীক্ষার শেষে একে নিরাপদ কার্যকর ও এক কথায় চমৎকার বলে জানিয়েছেন। আপনার ডাক্তার প্রতিবেদক
×