ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শাকিল আহমেদ

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা

উচ্চশিক্ষা কিংবা জীবিকার তাড়নায় তরুণ বয়সে অনেকেই বিদেশে পাড়ি দেয়। সচ্ছল পরিবারের সদস্যরা উচ্চশিক্ষার জন্য প্রবাসে পাড়ি জমান। অন্যদিকে মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরা জীবনের তাড়নায় উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছাড়েন। ছাত্র কিংবা কর্মজীবী দু’ধরনের তরুণ পরিবার বন্ধু-বান্ধব ও দেশের মায়া ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে পড়ে থাকেন। এই কঠিন সময়ে একদিকে যেমন দেশ ও প্রিয়জন থেকে দূরে থাকার বেদনা থাকে, তেমনি থাকে সম্পূর্ণ নতুন এক পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর সংগ্রাম। এমন ঘরকুনো মানসিকতার জন্য প্রবাস জীবনে বিশ্বকে জানা ও দেখার অপার আনন্দ প্রয়াশ ম্লান হয়। তবে অধিকাংশের ক্ষেত্রে এমন হয় না। অনেকেই নতুন বিশ্বকে দেখার আনন্দে বিভোর থাকেন। তবে তাদেরও মনের গভীরে স্বদেশের সোনালি স্মৃতি বারে বার জেগে উঠে। প্রবাসে প্রতিটি তরুণ পুনরায় ঘরে ফিরতেই ব্যাকুল হয়ে থাকেন সারাটিক্ষণ। মনের গভীরে থাকে পুনরায় ঘরে ফিরে আসার ব্যাকুলতা। প্রবাসী জীবনে নিঃসঙ্গতার পাশাপাশি নানা বৈচিত্র্যময়তার দেখা পাওয়া যায়। উন্নত বিশ্বের জীবনযাত্রা এই ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রবাসীর জীবনে প্রভাব ফেলে। বিগত কয়েক দশক ধরে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের হার অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এইচএসসি কিংবা স্নাতক পাস করেই উচ্চতর ডিগ্রী লাভের আশায় অনেকেই পাড়ি দিচ্ছেন ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর নানা দেশে। বিদেশে পড়াশোনার মান সবদেশেই সমান নয়। তরুণদের বিগত পরীক্ষার ফলাফল কেমন তার উপর নির্ভর করে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়। তবে অসংখ্য তরুণ স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমালেও পরবর্তীতে বিভিন্ন চাকরিতেই নিজেদের ব্যতিব্যস্ত রাখেন। ইউরোপ উচ্চশিক্ষা ও জীবিকা অর্জনের জন্য বেশিরভাগ তরুণদের প্রথম পছন্দ ইউরোপ। ইউরোপের সব দেশে ভিসা পাওয়া সহজ নয়। ইংল্যান্ড ছাড়া অন্য কোন রাষ্ট্রে ইংরেজী গ্রহণযোগ্য নয় বলে সবার লক্ষ্য থাকে এই দ্বীপ রাষ্ট্র। তবে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালিসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের ভাষা জ্ঞান জানা থাকলে সেসব দেশে যাওয়া অনেকটা সহজ। বাংলাদেশের এসব দেশের ভাষা শিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইউরোপে ছাত্রদের সপ্তাহে অন্তত ২০ ঘণ্টা চাকরির সুযোগ থাকে। ডি-প্রজন্মের একজন পাঠক হায়দারের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা যায়। তবে হায়দারসহ আরও অনেকে অবৈধ উপায়ে এর চেয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি ছাত্রদের জন্য বাড়তি একটি চাপ ও সুযোগ। বিশাল অংকের টিউশনি ফি ও আনুষঙ্গিক খরচ মেটাতে এ ধরনের চাকরির কোন বিকল্প নেই। তবে হায়দারের মতে ইদানীং ছাত্রদের জন্য অবৈধ উপায়ে কাজ করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। জার্মানি ও স্কেনডেনিভিয়ান রাষ্ট্রের সুবিধা হলো এসব দেশে টিউশন ফি অন্য ইউরোপিয়ান রাষ্ট্র হতে কম অনেক ক্ষেত্রে একদম ফ্রি। ইউরোপের দেশে পাড়ি জমানোর পূর্বে সেদেশের আর্থিক অবস্থা ও চাকরির সুযোগ সম্পর্কে অবগত হওয়া অত্যন্ত জরুরী। আমেরিকা ইউরোপের পাশাপাশি তরুণদের অন্যতম পছন্দ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। এক্ষেত্রে ঝঅঞ, এগঅঞ ও এজঊ পরীক্ষায় ভাল স্কোর করা অত্যন্ত জরুরী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বেশকিছু তরুণের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় নানান অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অনেকেই এখন স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পাড়ি জমাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির অবাধ সুযোগ রয়েছে এবং তাদের অভিবাসন আইন নিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ সক্রিয়। এছাড়া তুলনামূলক ভাল ছাত্র যারা স্কলারশিপ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান তারা বেশ সচ্ছলভাবেই ইতি টানতে পারেন শিক্ষা জীবনের। ওশেনিয়া অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এ দুটি দেশ ওশেনিয়া মহাদেশের দুটি রাষ্ট্র। তাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা ইংরেজী হওয়ার দরুন দেশ দুটো ছাত্রদের অন্যতম পছন্দ। অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যাওয়ার বাড়তি সুবিধা হলো দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ, তবে এক্ষেত্রে বেশকিছু বছর অপেক্ষা করতে হয় অধ্যয়নরত ছাত্রদের। অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করার ক্ষেত্রে সরকারের বেশকিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া দেশটিতে বর্ণবৈষম্যের ঘটনাও ঘটে।
×