ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

জামালপুরের ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর  নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামালপুরের আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেনসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট ও গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ১৮ নবেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী। প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে, দুই আসামিপক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম। অভিযোগ গঠনের পক্ষে ৭ অক্টোবর শুনানি করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা চমন ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অপরদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট মশিউজ্জামান। মামলার আট আসামির মধ্যে দু’জন এ্যাডভোকেট শামসুল আলম এবং এসএম ইউসুফ আলী কারাগারে আছেন। পলাতক অন্য ছয়জন হলেনÑ আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা মোঃ আশরাফ হোসেন, অধ্যাপক শরীফ আহমেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মোঃ আব্দুল হান্নান, মোঃ আব্দুল বারী, মোঃ হারুন ও মোঃ আবুল কাসেম। এর আগে পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও তারা এতে সাড়া দেয়নি। গত ২৯ এপ্রিল এ আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২২ জুলাই পলাতক জামালপুরের ৬ রাজাকারকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল এ আট আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৫টি ঘটনায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের আগে প্রসিকিউশন পক্ষের কোন নথি দেয়ার থাকলে এই সময়ের মধ্যে তা আসামিপক্ষকে সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। আর আসামিপক্ষের কোন সাক্ষ্য বা নথি দিতে হলে সেই তালিকা ও তথ্যও ওই সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে হবে। এদিকে সোমবার গ্রেফতারকৃত এ্যাডভোকেট শামসুল ও এসএম ইউসুফ আলীকে অভিযোগ গঠনের জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালতে দাঁড়িয়ে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। বাকি ছয় আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার চলবে। দুই আসামি শামসুল হক ও ইউসুফ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। এছাড়া পলাতক আসামি আশরাফ হোসেন, শরীফ আহমেদ ও আব্দুল মান্নান পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হলেন আব্দুস সোবহান তরফদার। আর পলাতক আব্দুল বারি, হারুন ও আবুল হাশেম পক্ষে মামলা লড়বেন কতুবউদ্দিন আহমেদ। অভিযোগ গঠনের আদেশের পর তুরিন আফরোজ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আদেশের আগে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত দুই আসামিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলÑ তারা দোষী না নির্দোষ। তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। আদালত বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় অভিযোগ গঠন করা হল। গ্রেফতারকৃত শামসুল হক জামালপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির এবং সিংহজানি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইউসুফও এক সময় জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। এই দুইজন একাত্তরে রাজাকার বাহিনীতে এবং বাকি ছয়জন আলবদর বাহিনীতে ছিলেন বলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার অভিযোগ।
×