ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুবাই টেস্টে রোমাঞ্চকর এক জয় পেল পাকিস্তান। ইংলিশদের ১৭৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল মিসবাহ-উল হকের দল। প্রথম ইনিংসে ৩৭৮ রানে অলআউট পাকিস্তান ৬ উইকেটে ৩৫৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে ২৪২Ñ এ গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ৪৯১ রানের অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। পঞ্চম দিন শেষ বিকেলে নাটকীয়তাপূর্ণ সমাপ্তির পথে ৩১২ রানে অলআউট হয় এ্যালিস্টার কুকের দল। এতটুকু দেখে পাকিস্তানের বড় জয়ে হয়ত সাদামাটা ম্যাচের ছবিই ভেসে উঠবে। কিন্তু ইতির আগে দারুণ জমজমাট হয়ে ওঠে দুবাই টেস্ট। ক্রিকেটের দেবতা যেন রহস্য গল্পের ভক্ত! লাঞ্চের আগেই জয়ের গন্ধ পাওয়া পাকিস্তানকে একারই রুখে দিতে যাচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের আট নম্বর ব্যাটসম্যান আদিল রশিদ (৬১)। ছোট্ট দুটি ইনিংস খেলে তাতে রোমাঞ্চ মাখিয়েছেন নয় ও দশ নম্বরে নামা স্টুয়ার্ট ব্রড (৩০) এবং মার্ক উড (২৯)! এক আদিলের কাছে হার মানতে বসেছিল পুরো পাকিস্তান দল। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার মাত্র ৬.৩ ওভার আগে ইয়াসির শাহর বলে আত্মঘাতী এক শট খেলে আউট তিনি। আগের দিন দুপুরে মিসবাহ যখন পাকিস্তানের ইনিংস ঘোষণা করেন, স্বাভাবিকভাবে তখনই হয়ত জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিল ইংলিশরা! চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়ার বিশ্বরেকর্ড যেখানে ৪১৮, সেখানে ৪৯১ রানা তাড়া করে ম্যাচ জেতার আশা না করাই ভাল! দুবাইয়ে তাই দেখার বিষয় ছিল একটিই, ড্র করে ম্যাচ বাঁচাতে পারবে তো পাকিস্তান? একটি উপায়েই সেটি সম্ভব ছিল, কুকদের মাটি কামড়ে ক্রিজে পড়ে থাকা। কিন্তু রবিবার চতুর্থ দিনেই তিন উইকেট হারিয়ে কাজটা কঠিন করে তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। আশার বাতি হয়ে ছিলেন কেবল জো রুট। কিন্তু কাল ১২ রান যোগ করার পর আউট হয়ে যান তিনি। লাঞ্চের আগেই দুই স্পিনার জুলফিকার বাবর এবং ইয়াসির শাহ ২ উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। লাঞ্চ থেকে ফিরে একপ্রান্ত আগলে রাখা বেন স্টোকস সাজঘরে ফেরেন। এরপরই শুরু ‘ইংলিশ রুপকথার’ নতুন অধ্যায়। নিশ্চিত হারা ম্যাচের হাওয়া বদল। অষ্টম উইকেটে রশিদ-ব্রড মিলে যোগ করেন মহামূল্যবান ৬০ রান। এই জুটি কার্যত মিসবাহদের জয়ের পথ থেকেই ছিটকে দিতে যাচ্ছিলেন! ওয়াহাব রিয়াজের দারুণ এক বলে ব্রড বোল্ড হলেও পাকিস্তানের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠেন রশিদ। মার্ক উডকে নিয়ে ৫৫ রান যোগ করেন তিনি! তার চেয়েও আশ্চর্যের শেষদিকের এই জুটির ক্রিজে ২৯.২ ওভার পার করে দেয়া! ড্র যখন নাগালের মধ্যে দেখতে পাচ্ছিল ইংল্যান্ড, তখনই বাবরে বলে আউট উড। একপ্রান্তে ঠিকই রয়ে যান রশিদ, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর রুপকথার নায়ক হতে পারেননি। ম্যাচের আয়ুর মাত্র ৬ ওভার দূরে থাকতে বাজে এক শটে ক্যাচ উঠিয়ে দেন। চার ঘণ্টায় ১৭২ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি শেষ হতেই নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানর জয়। দুই স্পিনার বাবার আর ইয়াসির মিলে ৭ উইকেট তুলে নেন।
×