ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হিন্দুকুশ রেঞ্জ সবচেয়ে সক্রিয় ভূকম্পন জোন

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

হিন্দুকুশ রেঞ্জ সবচেয়ে সক্রিয় ভূকম্পন জোন

আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বতে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের কারণ কী, তা নিয়ে একাধিক তত্ত্ব রয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। যদিও সবাই এক বাক্যে জানিয়েছেন, রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটিতে নির্গত হয়েছে প্রায় ৫০টি পরমাণু বোমার সমান শক্তি। যা কি না কম্পনের কেন্দ্রস্থলের আশপাশের পুরো এলাকাকে একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। ভারতের আইআইটি খড়গপুরের ভূ-পদার্থবিদ্যার গবেষকরা বলছেন, এ দিনের ভূমিকম্প দু’টি বিচ্ছিন্ন ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার যোগফল। নেপালে গত ২৫ এপ্রিলের সেই ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পের সময়ে ইউরেশীয় প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেট একে অন্যের নিচে তীব্র গতিতে ঢুকে গিয়েছিল। এবার তা হয়নি। উল্টো দু’টি প্লেট পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান প্লেটটি যে গতিতে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে এগোচ্ছিল, একই গতিতে এবার তা ঢুকে গেছে হিন্দুকুশের নিচে। একইভাবে ইউরেশিয়ান প্লেট ঢুকে ি গেছে পামীর মালভূমির নিচে। দু’য়ের সম্মিলিত প্রতিক্রিয়ায় এই ভূমিকম্প। তাদের দাবি, সোমবারের ওই দু’টি ভিন্ন প্রক্রিয়ার জেরে মাটির ২১০ কিলোমিটার নিচে গোটা ভূস্তর উথালপাথাল হয়ে গেছে। এই বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ প্রসঙ্গে মার্কিন ভূ-বিজ্ঞান পর্ষদও (ইউএসজিএস) প্রায় একই রকম বিবৃতি দিয়েছে। যদিও ইউএসজিএস নিশ্চিত নয়, দু’টি প্রক্রিয়া এক সঙ্গে ঘটেছে, নাকি যে কোন একটির কারণেই মাটি কেঁপে উঠেছে। ইউএসজিএস বলেছে, এ দিনের কম্পনের কারণ সম্পর্কে দু’টি তত্ত্ব সামনে এসেছে। একটি বলছে, দু’টি প্রক্রিয়াই (হিন্দুকুশের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেটের প্রবেশ ও পামীর মালভূমির নিচে ইউরেশিয়ান প্লেটের আগ্রাসন) এক সঙ্গে হয়েছে। অন্যটি বলছে, দু’টি প্রক্রিয়ার একটিই ভূকম্পন ঘটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। এর বাইরে অন্য তত্ত্বও শোনা যাচ্ছে। ভূ-বিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, নেপাল হিমালয়ে যেমন হয়েছিল, তেমন আফগান হিন্দুকুশেও দুই প্লেটের মধ্যে তীব্র গতির ঘর্ষণের ফলে ভূমিকম্পের উৎপত্তি। ইউরেশিয়ান প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেট একে অন্যের তলায় ঢুকে গেছে। হিন্দুকুশ পর্বত তৈরিই হয়েছিল ইউরেশীয় প্লেটের নিচে ইন্ডিয়ান প্লেট ঢুকে গিয়ে। তাই সেখানে ইন্ডিয়ান প্লেটের উত্তরমুখী গতি (বছরে ৫০ মিলিমিটার) আটকে গিয়েছে। পরিণামে দুই প্লেটের জোড়ে প্রচুর পরিমাণ শক্তি জমা হচ্ছে।
×