ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

পাহাড় কেটে খালের গতিপথ পরিবর্তন, বনভূমি দখল

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

পাহাড় কেটে খালের গতিপথ পরিবর্তন, বনভূমি দখল

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ শহরতলির দরিয়ানগরে প্রায় ১শ’ ফুট উঁচু একটি পাহাড় কেটে দু’ভাগ করে বনবিভাগের অন্তত ২ একর মূল্যবান জমি দখলে নিয়েছে স্থানীয় ভূমিদস্যু চক্র। এতে বড়ছড়া খালের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং ওই এলাকার জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে পরিবেশ ও প্রতিবেশের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দরিয়ানগর বড়ছড়া এলাকার বহু অপকর্মের হোতা আমির হোসেন পরিবেশবিধ্বংসী এই দস্যুতার নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জানা গেছে, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রায় ৫শ’ মিটার দক্ষিণে চক্রটি অবাধে এমন অপকর্ম করলেও পরিবেশ অধিদফতর কিংবা বনবিভাগের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ওই চক্র এক শ্রেণীর অসাধু বনকর্মীকে ম্যানেজ করে এমন অপকর্ম করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। তবে বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় ‘নিসর্গ’ কর্মী ছৈয়দ আলম ও আবদুল্লাহসহ অনেকে জানান, পাহাড় কেটে বড়ছড়া খালের গতিপথ পরিবর্তন করে চক্রটি বনভূমি দখলের পর তা আবার বিভিন্ন জনের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রিও করেছে। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে একটি বিশাল পানের বরজ। পানের বরজ তৈরির জন্য বনাঞ্চলের গাছ ও বাঁশ দিয়ে কাঠামো নির্মাণ করা হলেও বনবিভাগ দেখেও যেন তা দেখে না। পরিবেশবাদী ও গবেষকরা জানান, নদী বা খালের বাঁকে ছোট-বড় ‘কুম’ বা পানির গর্ত থাকে। এসব গর্তে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বংশ বৃদ্ধি করে পরিবেশ-প্রতিবেশকে রক্ষা করে। কিন্তু বড়ছড়া খালের গতিপথ পরিবর্তনের ফলে ওই এলাকার জীববৈচিত্র্য প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। কাটা পাহাড়টি পানির তোড়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে। এলাকায় দেখা দিচ্ছে বন্যা। পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাবেক সভাপতি দীপক শর্মা দীপু অবিলম্বে কাটা পাহাড়টি পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে খালের গতিপথ আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের কলাতলীর বিট কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন,আমি যোগদানের আগেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে খবর পেয়ে এখন বনবিভাগের পক্ষ থেকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আগে জানা ছিল না। অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×