ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিনতাই খুন ডাকাতিতে বিদেশী অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৮:১০, ২ নভেম্বর ২০১৫

সিনতাই খুন ডাকাতিতে বিদেশী অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে

নাজনীন আখতার ॥ ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাকা-সহ বিভিন্ন অপরাধে বাড়ছে বিদেশী অস্ত্রের ব্যবহার। বিশেষ করে রিভলবার ও পিস্তলের ক্ষেত্রে দেশীর চেয়ে বিদেশী অবৈধ অস্ত্রের আধিপত্যই বেশি। গত আট মাসে পুলিশের উদ্ধারকৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে অত্যাধুনিক এলএমজি, একে-৪৭ রাইফেলসহ ৬৯৯টি বিদেশী অস্ত্র পাওয়া গেছে। ওই সময় বিভিন্ন অভিযানে পুলিশ দেশী ও বিদেশী ১ হাজার ৬৭৬টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অক্টোবরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সারাদেশে উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্রের সংখ্যা, অবৈধ অস্ত্র কী কাজে ব্যবহার করা হয়, অবৈধ অস্ত্র বাংলাদেশে নাকি বিদেশে তৈরি হয় তার বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গত ১৪ অক্টোবর এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে ১ হাজার ৬৭৬টি বিভিন্ন ধরনের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য ১ হাজার ৯১১টি অবৈধ অস্ত্রসহ মোট ৩ হাজার ৫৮৭টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ৬৯৯টি আগ্নেয়াস্ত্র বিদেশে তৈরি। উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত মামলা অথবা জিডি তদন্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত থানার মালখানায় জমা রাখা হয়। তদন্ত শেষ হওয়ার পর আলামত হিসেবে উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র আদালত মালখানায় পাঠানো হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলা নিষ্পত্তি হয়। প্রতিবেদনে উদ্ধারকৃত অস্ত্রের বিবরণী তুলে ধরে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মোট ৩ হাজার ৫৮৭টি অস্ত্রের মধ্যে ২টি এলএমজি, ৪টি একে-৪৭ রাইফেল, ২টি চায়নিজ এসএমজি, ১৩টি চায়নিজ রাইফেল, ৩টি এসএলআর, ৬টি পয়েন্ট ২২/পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেল, ২২টি রাইফেল/কাটা রাইফেল, ৮টি ডিবিবিএল, ৬৬টি এসবিবিএল, ৫৭টি দেশী রিভলবার, ১২৪টি বিদেশী রিভলবার, ৫১টি দেশী পিস্তল, ৪৫৮টি বিদেশী পিস্তল, ১৩৯টি বন্দুক, ৬টি কাটা বন্দুক, ১৯০টি পাইপ গান, ১২১টি শাটারগান, ২৫৯টি এলজি, ৫৪টি এয়ারগান, ৬৭টি ওয়ান শূটারগান/শূটারগানসহ মোট ১ হাজার ৬৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে ২৪টি এবং অন্যান্য অস্ত্র রয়েছে ১ হাজার ৯১১টি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশের বিভিন্ন অভিযানের তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের বিভিন্ন জেলা ও ইউনিটের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য ও অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অপরাধ দমনের লক্ষ্যে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। তবে বিভিন্ন ইভেন্ট উপলক্ষে চলমান অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান বিশেষভাবে জোরদার করা হয়ে থাকে। অবৈধ অস্ত্রধারীদের নাশকতামূলক তৎপরতা রোধ করার জন্য নিবিড় গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনাসহ প্রো-এ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্রের পরিবহন রোধ করার জন্য মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং মহাসড়কগুলোতে দিবা ও রাত্রিকালীন টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া রেল ও নৌপথে তল্লাশি অভিযানের পাশাপাশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
×